এই নাও থানাদার বাবু – ধর বাঁধনা আমায়
বাড়িয়ে দিলাম আমার খুনি দুটি হাত
দেখছোনা, রক্তে ভেজানো লাল কুড়ুলটি আমার?
মুক্তি দিয়েছি আজ আদরের মা’কে আমার - যত কষ্ট হতে তার,
মুক্ত করে দিয়েছি তারে পাষন্ডের শিকল হতে
ব্যভিচারী মদ্যপ ওই লম্পটের কালো ছায়া হতে।
জানো? সম্পর্কে সেই নাকি পিতা আমার !

রোজ রাতের বেলায়  আঘাৎ হানে মায়ের সুকোমল মনে,
নরম মাংস দেহের- খুবলে খায় ওই ব্যভিচারী নরপিশাচ।
মায়ের দেহের উপর করে অত্যাচার - বিকৃত যত যৌন উল্লাস।
নীরবেই অশ্রু ঝরে, রক্ত ঝরে দেহ হতে, কান্নারা চাপা পড়ে উন্মত্ত চিৎকারে।
হাঃ – ঐ পাষন্ডই নাকি সম্পর্কে পিতা আমার !


পারিনি রাখতে ধরে নিজেরে যে আজ
মধ্যরাত্রিতে শুনি “ আঃ ছেড়ে দাও ছেড়ে দাও “
বুঝি ওই নরপশু ঝাঁপিয়ে পড়েছে আমার অভাগী মায়ের উপরে আবার
“ বিয়ে করা বউ, তুই তো কেনা বাঁদি আমার
তোর ওই নরম দেহটা আমি কিনেছিরে শালি ...


খেলবো লুটবো ভোগ কোরবো তোকে– দেখি কোন শালা কি বলে আমায়?”


স্থাণু হয়ে শুনে যাই, ভেসে ওঠে নত হয়ে থাকা  আমার অসহায় মায়ের মুখ,
দাওয়ার এক কোণে দেখি  পড়ে আছে কুড়ুলটি তখনও
শক্ত করি চোয়ালের হাড় – নিঃশব্দে তুলে নেই কুড়ুলটি হাতে
পায়ে পায়ে এগিয়ে দাঁড়াই ওই অন্ধকারে, হঠাৎ শুনি “ কেরে?“
ঘুরেই তৎক্ষনাৎ - নামিয়ে দেই মাথা, শান্ত করি চিরতরে ওই লম্পটেরে।
ঘরের এক কোণে দেখি মাকে আমার – কম্পিতা অসহায় অশ্রুসিক্তা,
সোল্লাসে বলে উঠি -
“ মাগো আজ হতে মুক্ত তুমি, জ্বালাবেনা কেউ আর
করবেনা ওই দেহ ক্ষতবিক্ষত তোমার”।
হাঃ – ঐ পাষন্ডই নাকি সম্পর্কে পিতা আমার!


ভোরের আলো ওঠে পূবের আকাশে, শিশির ভেজা ঘাসের মাথায় ঘাসফুলেরা ফোটে
কাঁচাসোনা রং মেখে ভোরের রবি ওঠে, নুতন পৃথিবীরে দেখি দুই চোখ ভরে।


এই বাবু - কত নালিশ ওজর আপত্তি আমি জানিয়েছিলাম
করেছি মিনতি - সাহেব তোমারও দরবারে, যদিও সবই ছিল বৃথা।
নাও নাও – বাড়িয়ে দিলাম আজ আমার রক্তাক্ত হাত, ধর বাঁধনা আমাকে !
আমি হারান্ গো – আমার মায়ের ছেলে, বড় গর্বিত আজ।
কি শান্তি আজ আমার মায়ের প্রশান্ত হৃদয়ে, কেউ ঠোকরাবেনা ওই দেহটি আবার,
জান? কি আনন্দ আজ? মাতৃঋণ যৎসামান্যও হলেও - শোধ করেছি যে আজ ...  


নাও ধরগো বাবু বাঁধনা আমাকে
দেখছোনা কেমন রক্তে ভেজা আমার লাল দুটি হাত ?
আঃ - কি আনন্দ এই সমর্পণে, কি তৃপ্তি এই নারকীয় খুনে –
এযে এক মহাপুণ্য কাজ !!
===========================
অমিতাভ (২৪.১০.২০১৫) বাড়ি, বিকেল ৪-০০