হলদে রঙের ওই টিনের চালার স্কুলঘর,
বিশ্রাম কক্ষের জানালায় এক পরীর আবির্ভাব।
শিক ধরে দণ্ডায়মান এ যেনো এক ঈশ্বরীয় সৌন্দর্য।
নীল রঙের ওই জামার সাথে দুধেআলতা গতর যেনো মিশে আছে পৃথিবীর সমস্ত সুখ নিয়ে।
প্রজাপতি! ডানা মেলে পাড়ি দেয়ার কথা অচিন দেশে,
যেখানেতে দেবী পূজনীয়।
পদতলে আবাস্থল গেড়ে স্তব্ধ হয়ে রইবে তেত্রিশ কোটি দেবতা।


লিকলিকে গড়নের এই উঠোনে আপাদমস্তক ঢেকে থাকা,
যেনো পদচিহ্ন এঁকে দিয়ে যাচ্ছে কলিজা,গুর্দা, অন্তরের অন্তরস্থ।
বসত গেড়ে পাকাপোক্ত অবস্থান নিয়ে নিয়েছিলো প্রথম দেখাতেই। এতো নির্ভুল কারুকার্য ঈশ্বর সম্পাদন করে নিয়েছে এই সৃষ্টিতেই।
স্বর্গ থেকে উপচে পড়া যেনো এক টুকরো ধরণীর আশীর্বাদ।
ধন্য পৃথিবী ধন্য তাকে পেয়ে পৃথিবী ধন্য।


তার সেই অবুঝ চোখের বাঁকা চাহনি,
আলতো করে পিচঢালা পথমাড়ানো হেলেদুলে হেঁটে চলা।
ভূবনের কোলাহল থেকে অনেক অনেক দূরে থাকা নিষ্পাপ রমণী।
মেঘকালো কেশ সুবাস ছড়িয়ে যায় পবনে।
তার ছোঁয়ায় প্রাণহীন দেবতা প্রাণ পেয়ে যায়। অনুভব করে নেয় স্বর্গ সুখ।
খিলখিল করে হেঁসে উঠা সেই কণ্ঠস্বর কানে বেজে যায় ঘোটা কয়েক শতাব্দী।
তার হাঁসিমুখ দেখে যে কেউ নরকে থেকেও প্রশান্তি পেয়ে যায়।


তার অভিমানে পৃথিবী হুংকার দেয়,
অভিশাপ মেনে নিয়ে গগন কেঁপে উঠে,
তার চোখের জল বুকে নিয়েই মৃত্তিকা নিজেকে ধ্বংসের সম্মুখে ঠেলে দেয়।
তার অভিমান ভেঙে দিতে, তার নয়নের ফোয়ারা রুখে দিতে দেবতা পাড়ি দিতে পারে সাড়ে পনেরোহাজার কোটি গ্রহ।
তার নয়নের জল রুখে দিতে প্রেমিক পুরুষ স্বেচ্ছায় প্রবেশ করতে পারে নরকে।
তার অভিমানে, তার চোখের জলে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে
যায় প্রেমিকের অন্তর।


তার মাঝেই খুঁজে নেয় দেবতা তার স্বর্গ সুখ।
তার মাঝেই বউ
তার মাঝেই লক্ষীবউ
তার মাঝেই পোষা ময়না
তার মাঝেই বাবুই।
সে জেগে থাকে প্রেমিক পুরুষের অন্তর জুড়ে দিবস রজনী।
স্বপ্ন এসে উঁকি দিয়ে জানান দিয়ে যায়,
সে আছে অন্তরে মিশে আছে।


মিশে যাচ্ছি, তলিয়ে যাচ্ছি, ধীরে ধীরে এই পরীতেই,
নিজের সর্বস্ব বিলিয়ে দিয়ে চলে যাচ্ছি তার মনের উঠোনের পাতাল পুরিতে।
নেশা ধরানো তার প্রতিটি আনাগোনা,
গেঁথে আছে সে মনের মণিকোঠা জুড়ে।
অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যৎ!
সবকিছু তাকেই সপে দিয়ে অসহায়ের মতো পথচলা।
এই মানবজন্ম সার্থক তবে এই দেবীর প্রেম পেয়ে।
এই জন্ম কাটানো তাকে ঘিরেই।
পণ করে, জেদ করে বসে থাকা।
তাকেই ভালোবেসে এই একজীবন পার করে দেয়া।
ভালোবাসি তবে, ভালোবাসি!


পরী
১২/০২/২০১৮
অনিক মজুমদার।