কইতরি নদীর দ্যাশে / অনিরুদ্ধ আলম


(উতল শব্দনদীর ডাহুক সৈয়দ শামসুল হকের স্মৃতির উদ্দেশে)


কী নাই হামার দ্যাশে? আছে। আছে ডগমগে ডাহুকের ডাক
আসমানে জামদানি মেঘের পালুই
খইলসা মাছের নাকান শাদা বিয়ানের আলো ঝাঁকেঝাঁক
পাখপাখালির পাখসাট
হরিণ ডাঙার ডুরে ঘাট
খুলতির পাড় ধ’রে ঘরগুলো। কুমড়া-মাচান। জবা। জুঁই  
সোনামুখি সুঁই
উম খুঁজে ফেরে খুব নকশি কাঁথার বিস্তারে
কাঁথাজুড়ে আঁকা – চাঁন একখান নীলাকাশে হাঁটে ডোল দিঘিটার পাড়ে।  


কী নাই হামার দ্যাশে? আছে। আছে ঢেউ-ঢেউ কইতরি নদী
কেউ কি এমন আছে নদীর নেশাতে নাচে যার মনপ্রাণ নিরবধি
এরকম হাজারও নানা জনের উষ্ণতা ঘিরে বেড়ে ওঠে স্নেহঘন মানবতা
রোদের মোহর দিয়া মুড়ে রাখা মানুষের হৃদয়গুলান
হৃদয়ের বুননে বেবাক প্রাণ হয়া আছে কী যে অফুরান  
অভিমানী কলিজার টুকরারে নিয়া কত আনচানি গীত গাথা গান কথকতা    
এইখানে অবিচল আহা অগণন  
ঘাসের শরীরে মাতে মাঠমহলের শিহরণ
ডালিমের দীপ্তিতে মুখরিত দিনযাপনের উচ্ছ্বাস-অধীরতা
আ-ছে-আ-ছে! আরও আছে – কবিতার মতো রাঙা জীবনের সব আয়োজন!