চারিদিকে যখন নেই পিনপতন শব্দ,
সুমন্তের মতো অন্যেরাও ছিল তখন ঘুমন্ত।
ঘরে যে চোর ঢুকেছে কে তা জানত?
খুটখুট শব্দে ঘুম থেকে উঠে পড়ল সুমন্ত,
কিসের শব্দ বুঝতে জ্বালালো আলো,
মনে মনে ভাবল – ঘরে কি চোর এলো?
আলো জ্বালা হয়েছে টের পেয়ে চোর লুকাল খাটের তলে,
ওদিকে সুমন্ত চোর ধরতে অস্থির – চোরটা কই গেল রে?
চোর বাবাজি কই যাবে, ব্যাটা আজকে জেলের ঘানি টানবে।
ছারছিনা আজ তাকে, পিটিয়ে তক্তা বানিয়ে ফেলতে হবে।
হঠাৎ করেই খাটের তলে ফেলতেই আ্লো,
চোরের সঙ্গে দেখা করল সুমন্ত।
চোরের কলার চেপে দাঁড়া করাল তাকে,
সুমন্ত হাসিমুখে জিজ্ঞেস করল,
“ কেমন আছিস রে?
অনেকদিন ধরেই দেখছি ঢুকছিস ঘরে,
আজকেও কি অনন্য দিনের মতো চুরি করতে এয়েছিস বটে? ”
দুহাত জোড়ো করে চোর তখন বলল,
“ বিশ্বাস করুন, আর কক্ষনো করব না চুরি,
মাফ করে দিন, আর করব না স্যার সুমন্ত। ”
সুমত তখন একহাত উপরে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বলল,
“ বাহবা! বাহবা! আমার নামটাও জানিস দেখি?
তা, তোর নাম কি? ”
চোরের মুখে ফুটল হাসি,
“ স্যার, আমার নাম চক্রবর্তী। ”
“ বলিস কি? চক্রবর্তী, তোর নাম না টাইটেল? ”
“ সবাই আমাকে ডাকে চক্রবর্তী,
জানি না কোনো টাইটেল-ফাইটেল। ”
“ তা, চক্রবর্তী, এখানে আপনার কাজ কি শুনি? ”
“ স্যার, পেটে ভাত পড়েনা,
বাড়িতে বউ-বাচ্চা, পড়ে রইসে না খাইয়া,
তাই কিছু টাকার জন্যে  ”
“ বুঝেছি আমি এতক্ষণে,
কেন আসিস আমার বাড়িতে!
এই নাও টাকা,
আর কক্ষনো চুরি-চামারি করবা না।
যদি দেখেছি করছ আবার,
ছুঁড়ে দেবো জেলের খাবার।
এখন যাও তোমার বাড়িতে,
পা বাড়াও ভালো কাজের দিকে। ”
“ স্যার, আপনি অনেক ভালো,
বুঝে নেন ছেড়ে দিলাম সব খারাপ কাজগুলো।
আজ আমি আসি,
ভাল থাকুন রাশি রাশি। ”
“ খেয়াল রেখো তোমার,
সঙ্গে বউ-বাচ্চার।
সবসময় মনে রেখো মাত্র দুটো লাইন –
সৎ কাজে স্বর্গবাস, অসৎ কাজে সর্বনাশ। ”