দিল্লী তুমি যান্ত্রিক,  দিল্লী তুমি বড় নিষ্ঠুর,
তোমার বুকেই অকালে ঝরে গেল মতিবুর!
না, নেই কোন প্রতিবাদ,
নেই কোন ক্যান্ডেল যাত্রা!
কী বলো তোমরা, নির্ভয়া *!
কত লেখালেখি,  কতনা সমালোচনা!
পাতা ভরে দেশ বিদেশের ম্যাগাজিন,পত্রিকা।


এ আর কী? ছার! এটা আর কী বার্তা।
নয় কিচ্ছু এটা, সেন্সেশনাল নয় খবরটা!
তাইতো খুঁজে পাওয়া দায় মিডিয়ার টিকিটা!!
গরীব মরবে রাজপথে, এতো জানা কথা।


একবিংশ যুগে মনুষ্যত্ব! কল্পনাটাই বড় ভুল
যান্ত্রিকতা কেড়েছে বিবেক,আবেগ হয়েছে নির্মূল।


শেষ করে রাতের পাহারাদারিত্ব,
সকাল বেলা ফিরছে মতিবুর হেটে
প্রতিদিনকার মতো রাজপথ দিয়ে
কে জানতো? পড়ে থাকতে হবে ক্ষত বিক্ষত!


পিছন থেকে তিনচাকা-ভ্যানের আচমকা ধাক্কা
ভুলায়ে দেবে জীবনের স্বাদ!  পাবে অক্কা।
থামায় গাড়ি চালক, দেখে কেউ নেই কাছে
পরীক্ষা করে কোথাও কি রক্ত লেগে আছে?


যেই দেখে গাড়িতে নেই পাপের কোন দাগ
আর তবে দেরী কেন? ভাগ ব্যাটা, দূর ভাগ!
থাক না পড়ে আধমরা একটা জ্যান্ত লাশ
কুকুরছানা খেয়ে নেবে! জীবনের হবে নাশ!!


তার মতোই আর এক রিকশা চালক
দেখে পথমধ্যে  রক্তমাখা একটা লোক
বাঁচার জন্য করে যাচ্ছে অন্তিম চেষ্টা
ভ্রুক্ষেপ নেই সেদিকে, বোঝে শুধু নিজ বুঝটা।
চুপিচুপি রিকশা থেকে নেমে, দ্রুততায় চলে
তুলে নেয় পড়ে থাকা সেলফোন নিজ কোলে।


কতনা গাড়ি, কতনা মানুষ পথ দিয়ে চলে যায়
দেখেও না দেখার ভান করে, মনুষ্যত্ব হারায়
দিল্লীর রাজপথের ধূলায়! মতিবুর নেয় বিদায়
প্রবাসী বাঙালির মৃত্যুসংবাদ ইসলামপুর পৌছায়
বঙ্গজননী মুখ ঢাকে সন্তানের কর্মহীনতার লজ্জায়!!
তুমি ভাবছো অবাক পৃথিবী? ধুর,এ নয়তো বিস্ময়!
দেখে দেখে অন্ধ সে,অশ্রু ঝরে না আর অমানবিকতায়!


(* পাঠকদের মনে করিয়ে দিতে চাই দিল্লীর বুকে যে একজন মহিলার ধর্ষণ হয়েছিলো তার কাল্পনিক নাম ছিলো নির্ভয়া। ধর্ষণ যেমন দিল্লীবাসির অমানবিক মুখ দেখায়েছিল, এ ঘটনাও দিল্লীর অমানবিক দিকটা আবার চোখের সামনে নিয়ে এলো, তাই এর বিরুদ্ধে আমার মতো করে প্রতিবাদের চেষ্টা করলাম।)


( এক গরীব বাঙালি সন্তানের দিল্লীর রাস্তায় অকাল প্রয়াণে ব্যথিত হয়ে এ কবিতার জন্ম, সিসিটিভিতে ভিডিও দেখা এবং আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত খবরের উপর ভিত্তি করে লেখা এ কবিতা)