তুই আমার ছোটবেলার প্রেম -
তেল মাথা, দুই বিনুনি,
প্রার্থনা সভার মিষ্টি হাসি-
টিফিনে এক ঝলক- কচিৎ পাশে বসা.

মন বলতো 'ভালোবাসা'।

দেখা হলো কয়েক বছর পর;
অন্ধকারের বন্ধ ঘরে তুই জিয়নকাঠি,
হতদরিদ্র মনে তুই শরতের আকাশ-
নতুন করে  শেখালি বাঁচতে।

চোখ বললো 'ভালোবাসা'।

তোর স্পর্শে, সময় শিখলো আদর,
শব্দহীন কণ্ঠে জাগলো ভাষা-
হৃদয়ে উঠলো ছন্দ-
মননে বাজলো দৃঢতা;

প্রাণ বললো 'ভালোবাসা'।

তারপর সব যেন এলোমেলো-
কালবৈশাখীর বিদ্যুৎ ছিটকে দিলো
সহস্র ক্রোশ দূরের অজানা শহরে;
হারিয়ে গেলাম কোলাহলে-

স্তব্ধতা জানলো 'ভালোবাসা'।

তবু যেন হৃদয়ের সুপ্ত স্তরে,
ইথার তরঙ্গে বাজতো ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়-
মনে পড়তো রবি ঠাকুরের সুর,
'তোমায় নতুন করে পাবো বলে'…

বিধাতা শুনলো ; ‘ভালোবাসা '।

অকস্মাৎ,যেদিন দূরভাসে,
জলভরা  মেঘে, রোধ  করলি আমার কণ্ঠ,
ভাসলাম দুজনে বৃষ্টির জলে-
খড়কুটোর মতো, বিপুল তরঙ্গে;

বয়েস বললো ' ভালোবাসা '।

এ টানে লেগে আছে-
বিশ্বাসের স্পর্শ, দূরত্বের রোমাঞ্চ;
শব্দের সহজতা, স্নেহের কোমলতা,
মনের মাদকতা, প্রাণের পেলবতা-

জীবন  বললো, ' ভালোবাসা'।

সেই আমি,যদি হঠাৎ নিভে যাই
উল্কার আলোর মতো, রাতের গভীরে;
গলা জড়িয়ে বলবি তো ' ভালোবাসি,
ভালোবাসি, ভী..ষ….ণ, ভালোবাসি;
নিয়ে চল অন্য পারে’-

সেদিন, আকাশ গঙ্গা দেখাবে পথ,
ধ্রুবতারা জ্বলবে শিখরে,
সপ্তর্ষি বাজাবে শঙ্খ,
রোহিনী ছড়াবে দ্যুতি,
অশ্বিন ছোঁয়াবে প্রাণ;

আর,
কালপুরুষ বলবে, …..’ভালোবাসা’।