মায়ের চোখে পানি


শহীদ মুক্তিযোদ্ধার মায়ের কান্না
শহীদ মুক্তিযোদ্ধার মায়ের চোখের পানি
এখনও ঝরে অঝোর ধারায়
বিজয়ের গান শুনলেই
বিজয় দিবস ফিরে আসলেই
বিজয় দিবস ফিরে আসলেই।


শহীদ মুক্তিযোদ্ধার মা ঘুমাইতে পারে না
হঠাৎ শোনে শহীদ ছেলে মা মা বলে ডাকে
বলে – ‘মা তুমি কেমন আছ
তোমার মন কেন ভালো থাকে না
স্বাধীন দেশে বসবাস করেও
রাজাকার মন্ত্রী, তাই বুঝি?
রাজাকারের গাড়িতে জাতীয় পতাকা,
তাই বুঝি?
মা তোমার চোখে পানি
আমি আর সইতে পারি না,
স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দিয়েছি
গর্বে আমার বুক ভরে যায়
ইতিহাসের পাতায় আমার নাম
দেখে নিজেকে মহাবীর মনে হয়।


মা বিজয় মিছিলে তুমি আমাকে পাবে
জানালা খুলে তাকিয়ে থেকো
মিছিলের সব ক’টা মানুষ তোমার সন্তান
চোখের পানি মুছে ভালো করে দেখো
কখনও দেখবে আমার রক্তভেজা শার্ট
তুমি চমকে যেয়ো না মা
এখনও বাংলায় আছে পশ্চিমা হায়েনা
তোমার ছেলেদের শার্ট রক্তে ভিজবে
কখনও কখনও তোমার হৃদয় আকাশের
কিছু কিছু নক্ষত্র অবেলায় ঝরে পড়বে
চিরতরে, ফিরবেনা আর কোন দিন।


আমি জানি তোমার চোখের পানি
আগের মতো আর ঝরে না
আর কত ঝরবে আর কত কাঁদবে
তোমার সামনেই গোলামের দল
বিদ্রুপের হাসি হেসে বলে –
’জঙ্গি বাংলা ভাই বলতে কিছু নাই
সকলি মিডিয়ার সৃষ্টি,
শ্লোগানে শ্লোগানে হয় মুখরিত
মুক্তিযোদ্ধা রাজাকার ভাই ভাই
আমাদের মাঝে কোন বিভেদ নাই,’
আর পারি না মা আমারও হাসি পাচ্ছে
বুকে তাজা রক্ত ঢেলে দিলাম
লাখ লাখ মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হলাম
এই শ্লোগান শোনার জন্যে?
এই বাংলার পবিত্র মাটিতে?


দুঃখ করো না মা, একদিন দেখো
ওরা স্বাধীনতা বিরোধীরা যাবে নিপাত
অল্প ক’টা দিন অপেক্ষা কর
স্বাধীনতার পক্ষ শক্তি ক্ষমতায়
দেখবে গোলাম ও তার দল কাঠগড়ায়
ফাঁসির কাষ্টে আমরণ ঝুলবে আর বলবে –
’ওগো মুক্তিযোদ্ধার মা আমাদের ক্ষমা করো
ক্ষমা করো’, বলতে বলতে ঐ আলবদর-রাজাকার
মা তোমার পায়ে পরবে, শেষ ক্ষমা চাইতে
তোমার দু’চোখের পানি মুছতে,
সেই দিন যবে আসবে, চিরনিদ্রায় অপেক্ষায় রবো
দেখো মা একটু হলেও তুমি পাবে সুখ
বিজয় দিবস ফিরে আসলেই
বিজয় দিবস ফিরে আসলেই।’


মোঃ আতাউর রহমান
রচনাকালঃ ডিসেম্বর ১৬, ২০১১ ইং