লোক কাননের লতার জটলা ছেড়ে বহুদুরের কোন নির্জনতায়,
অস্থির কতক পদচিহ্ন ঢাকা পড়ে দিকভ্রান্ত সমীরের উন্মত্ত মিছিলে।
সেই পবনে ভেসে আসে কিছু মিলিত চিৎকার, উষ্ণ উপহাসের বুলি;
ঝগড়া-ঝাটি আর হাসাহাসি, মাঝে কিছু স্বপ্ন বোনাবুনি,
তার সাথে নিয়ত দিন যাপনের আনন্দের বাজি।
এযেন শহরের নীলিমায় প্রাণ খুঁজে পাওয়া,
বন্ধুর পথে বন্ধুর মন ছোঁয়াছুঁয়ি খেলা।
নয় কোন রূপকথার স্বর্গপুরী,
পায়ে চলা পথ আর সজীবতার শিহরিত আড্ডায়
উচ্ছ্বসিত প্রকৃতির যেন ইচ্ছে মতন নিমেষেই সাঁজ বদল।


পিচঢালা পথের ওপারে উঠে আসে রোমাঞ্চিত বালুকাবেলা,
ঘোলা পানির বিলের উপর তার সরু তুলির আকিবুকি
সাঁকোর এপারে গড়ে ভেজা বালুর সোপান আর;
ওপারে স্বপ্নের মেলবন্ধন কোন নগ্ন উঠোনের সাথে।
দাওয়ায় বসে থাকা সেই সরল মানুষগুলোর
মায়াবী গাঢ় কৌতূহলী চোখ পেছনের দুঃখ ভুলিয়ে দেয়।
ভেজা উঠোন জুড়ে ছেলেমেয়েগুলোর উদ্যম ছোটাছুটি,
মনে করিয়ে দেয় ছোট্টবেলার স্বরলিপির কথা।
একপাশে এক কৃষাণী শিশুর অকৃত্রিম হাসি
স্তম্ভিত করে রাখে; দিকভ্রান্ত করে দেয় আনমনে।


সাঁকোর ওপারে সেই নয়নাভিরাম গ্রামের দিকে
নাঙা নৌকার নৃত্য জীবনের মায়ায় হারায়।
বৈঠার তালে আর পানি শব্দে গুণগুণ করে
মনটা গেয়ে ওঠে তৃষিত পথিকের গান।
গ্রাম পেরোবার সময় সাথে করে নিয়ে যাই
আবার ফিরে আসার এক বুক আশা।
ক্লান্তির চরমে ব্যথা ভুলে থাকি-
রক্তিম নীলিমায় হৃদয়ের কল্পনার রঙ গোধুলির কোল জুড়ে দেখে।
কখন যেন ব্যস্ত-সমস্ত আলো জ্বলা রাতকে সাথে নিয়ে ঘরে ফেরা!
আর সাথে খুব কাছে থেকেও অগোছালো স্মৃতিঘর জুড়ে,
জমাট বাধা এক সাগর অতৃপ্তির গভীর সমাধি গড়ে ওঠা।


- ৩ আগষ্ট, ২০০৮