এখানে সুশোভিত বর্ণীল রঙ্গিন পথে,
প্রতীক্ষমান অগণন উষ্ণ অভ্যর্থনা।
ওখানের অভিজাত সম্বোধনের,
নিটোল অভিবাদন আমার নয়।
আমার কেবল,
নীরব পথিক হওয়ার অস্ফুট সম্ভাষণমালা।


এখানে প্রভাতের সমীরণে আগমণ ঘটে,
যুগলের স্ব স্ব বক্ষদ্বয়ে প্রশান্তির নিবিড়তা।
ওখানের অনন্ত মিলনের,
তৃপ্তির অমীয় অবিরল সুধামালা আমার নয়।
আমার কেবল,
যামিনী হতে বিচ্ছিন্ন প্রভাতের বিষাদি প্রারম্ভিকতা।


এখানে মোহনীয় গোধূলির সায়াহ্নে,
এসে পড়ে নিকটে আসার স্পর্শের শত আহ্ববান।
ওখানের প্রত্যাশীত অসংখ্য,
কামনাগুলো আমার নয়।
আমার কেবল,
ফেলে আসা বিষদগ্ধ হাজারও বিবর্ণ মুহূর্ত।


এখানে রাত্রি নামে উদ্দীপ্ত মননে,
পল্লোবিত সুখের সৃষ্টিমুখর উল্লাসে।
ওখানের শয়ে শয়ে পড়ে থাকা,
স্নিগ্ধতাগুলো আমার নয়।
আমার কেবল,
বিস্তীর্ণ ওই আঁধারমালা।


এখানে চিত্তের সম্রাজ্যে সুসজ্জিত বহরে,
যাত্রা হয় বাম প্রকৌষ্ঠে ভালোবাসার মেঘদল।
ওখানের নেমে আসার ঝুম প্রেমের,
বর্ষণমালা আমার নয়।
আমার কেবল,
নিঃশব্দে নিভৃতে ঝরে পড়া টুপটাপ ব্যথাগুচ্ছ।


এখানে হৃৎপিন্ডের অনন্ত মোহনায়,
দিবা রাত্রি সরগরম খুনসুটির মিষ্টি প্রলাপ।
ওখানের অন্তহীন অম্লান,
কথামালা আমার নয়।
আমার কেবল,
অস্তিত্বহীন অগণন অতৃপ্তের মহাকাব্য রচনা।


এখানে দখীনা জানলার কার্ণীশে,
সুখপূর্ণ স্মৃতি উড়ে বয় অবিরাম।
ওখানের বিস্তৃত বাতাসে মিশ্রিত,
সুখানুভূতিগুলো আমার নয়।
আমার কেবল,
বিস্মৃতির বেঘুরো বিবর্ণ যত ক্ষণ।


এখানে গহীন বিরাতের মধ্যাহ্নে,
ভালোবাসার নিরিবিচ্ছিন্ন তীব্র স্লোগান।
ওখানের বজ্র কণ্ঠে উচ্চারিত,
মোহগুলো আমার নয়।
আমার কেবল,
নিথর নিস্তব্ধ হৃদয়ের নিশ্চুপ আহাজারী।


এখানে সমগ্র প্রেমের শিখায় উদ্ভাসিত,
নব কৃষ্টির প্রজ্জ্বলিত বিজয়ের গর্জন উল্লাস।
ওখানের শিশির মুড়ানো,
অরূণোদয়ের কোমল প্রভা আমার নয়,
আমার কেবল,
বিলুপ্ত ইতিহাসের বিক্ষত পৃষ্ঠার আছে যত নির্জীব বর্ণমালা।


রচনাকাল -
খরুলিয়া, কক্ִসবাজার।
2015.Jan.27_01.40 রজনী।