অদ্ভুত এক অসম স্রোতে মগ্ন এই ধরা,
যার ভিতর ও বাহির সবটা চেতনা আজ দৃঢ় তপস্যায় নিগূঢ়।


অশ্বারোহীর তরবারী নেই।
তীরন্দাজের ঢাল নেই।
নেই রণক্ষেত্রে ছোপ ছোপ অনুজ্জ্বল রক্তের জমাট বাঁধা পিন্ড।


অদ্ভুত এক হতবাক শূণ্যতায় হাহাকার এই ধরা,
যার অনাবিল দেহতে নেই সচল রাখা হৃৎ স্পন্দনের কোন উপাদান।


জলহীন ধূ-ধু নিরবিচ্ছিন্ন বিরান মরুপ্রান্তর।
কার্বনডাই-অক্সাইডহীন শয় শয় ফ্যাকাশে বৃক্ষপুঞ্জ।
নির্বিকার দুর্ভিক্ষে পিষ্ট যাবতীয় ফসলের উদ্যান।


অদ্ভুত এক নিষ্প্রাণে ভরপুর মৃত্যুপুরী এই ধরা,
আজ কোথাও নেই অতটুকুও শ্বাস প্রশ্বাসের প্রতিযোগিতা।


মানবের কলরববিহীন বিজন সভ্যতার প্রান্তর।
উন্মুক্ত বিহঙ্গের প্রশস্ত ডানাহীন শ্রীহীন আকাশ।
পূর্ণিমা আর জোনাকিহীন মৃত রাতের অঢেল অমাবস্যা।


অদ্ভুত এক বেঘোরো ঋতুহীন এই ধরা,
যুগের পর শতাব্দি পরেও নেই কোন প্রকৃতির অদল বদল।


নেই গ্রীষ্ম বর্ষা শরৎ এর আম জাম, অঝোর শ্রাবণ কিংবা স্নিগ্ধ কাশফুলের কানন।


বিলুপ্ত হেমন্ত শীত বসন্তের নবন্নের উল্লাস, খেজুর সুধার অমিয় ঘ্রাণ কিংবা পুষ্পের মৌ গুঞ্জন ।


অদ্ভুত এক হিংস্র বিষম নিষ্ঠুরতায় আবৃত এই ধরা,
যেখানে অবর্ণনীয় পন্থায় নিশ্চিহ্ন সব মায়া মমতার অনুভূতি; আবেগ।


প্রেয়সী রমণীর অন্তর আত্মায় নেই বিন্দু ফোঁটাও প্রেম।
সভ্যতার আনাচে কানাচে ভাসে অবিরাম ব্যাভিচারের আর্ত চিৎকার।
রক্ষকের কপালে প্রদর্শিত হয় ভক্ষকের নিকষ পদাঙ্ক অনুসারী।


অদ্ভুত এক ধ্বংসের দেড়গোড়ায় বিলীন প্রায় এই ধরা,
সময়ের স্রোতে কালের আবর্তনে বিধ্বস্ত বিচূর্ণ দারুণ।


যৌবন আজ মাদকতায় ডুবন্ত বিভোর নিদারুণ।
প্রকট উগ্র সন্ত্রাসে উত্তপ্ত শিক্ষাঙ্গন।
অসাম্প্রদায়িক চেতনার সুক্ষ চালে নির্যাতিত বিশ্ব মানবতা।


অদ্ভুত এক প্রবল অযৌক্তিকতার সম্মুখীন এই ধরা,
ক্ষণে ক্ষণে বিদীর্ণ ভূতলের অতল পৃষ্ঠা বিস্তীর্ণ।


উষ্ণতার উত্তাপ লালাভ দাবানলে ভস্ম চিরঞ্জীব ধ্রুব যত নিয়ম নীতি।
জাগতিক সত্তার চাহিদায় পরিপূর্ণ যত বেশ্যার সমাহারের উল্লাপনা।
মোড়লের ক্ষমতার লোলুপ দৃষ্টিতে বিস্ফোরিত বিশ্ব চরাচর।


সত্যি-ই অদ্ভুত এক নির্বাক করা পৈশাচিক মুগ্ধতা নেমেছে এই জগত সংসারে।



রচনাকাল-
খরুলিয়া, কক্ִসবাজার।
2015.May.13_11.10 রাত্রি।