না আমি তোমার বোন নই,বউ নই,
তোমার মা-ও নই,
খিলখিলিয়ে হাসা,বায়না করা তোমার মিষ্টি মেয়েটাও নই
আমি তোমার কাছে খবরের কাগজের রসালো এক গল্প মাত্র !
আমি এক ধর্ষিতা মেয়ে।
না,একথা আমি কোনোদিন জিজ্ঞেস করব না যে,
তোমার প্রিয়জন রসালো গল্প হলে তোমার লাগবে কেমন?
আমি চাই না কারোর সাথে আমার মতো হোক !
এসো,
তোমার গল্প শুনতে ভালো লাগে তাই---
তাই একটা গল্প বলি,শোনো,
ঠিক যে গল্পটা শুনতে চেয়েছিলেন ইন্সপেক্টরবাবু।
জোনাকজ্বলা বিক্ষত বাঁশঝাড়ে আমার নগ্নদেহটা পড়েছিল
আঁচড়ে কামড়ে রক্তাক্ত,যন্ত্রণাদীর্ণ,শক্তিহীন,অসাড়...
শরীরটাকে ঘসিটতে ঘসিটতে
কোনোরকমে ওড়না পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছিলাম...
মনে নেই তারপর।
জানোতো,আমার ছোট্ট ভাইটার ইচ্ছে পুলিশ হবে
পুলিশ হয়ে সাজা দেবে শয়তান পশুদের;
এই দু'দিন ভাইয়ের চোখে ভীমের রক্ত দেখেছি আমি
মায়ের চোখে দেখেছি কালোছাপ
আর বাবার চোখে...বাবার চোখে?তাকাতে পারিনি!
আমি জানি আমার ভাই পুলিশ হবে,হবেই---
পুলিশের সংজ্ঞা শেখাবে পুলিশকে;
আর যদি নাও হয়
তবুও কোনো ধর্ষিতাকে অন্তত জিজ্ঞেস করবে না
কিরকম ভাবে ওরা ধর্ষণটা করল,কী কী করল,
কিংবা "তখন তোমার মজা লাগছিল কিনা?"
ওরা বোঝেনা পা না থাকা মানে শুধু মাছ নয়
ছোবলধারীরও পা নেই!
যৌনতার চশমা আঁটা ট‍্যাঁরা সমাজ,বিদায়;
ছাইয়ের মুখে ছাই।


নন্দিনী,এবার শোন্,তোকে বলি--
আমার ভাইকে বলিস ওর লক্ষ‍্যের দিকে এগিয়ে যেতে
বলিস ওর সাথে আছে দিদির আশীর্বাদ;
আমার প্রেমকে বলিস যে,
সে ভালো-ভালো-ভালো কাউকে পেয়ে যাবে
চাইনে আমার এই নষ্ট শরীরখানা তাকে দিতে
ভালো থেকো প্রিয়তম
তুমি খুব খুব কষ্ট পেয়েছো আমি জানি।
নন্দিনী,আমার মা-বাবার কাছে আমার হয়ে
প্লিজ চেয়ে নিস ক্ষমা,
আর একটা কাজ কর্,---
দেখিস তারা যেন ভেঙে না পড়ে
জানি শেষ যুদ্ধ শেষের আগে তারা হার মানবে না,
জানি তোদের সবাইকে পাশে পাবে
আর তুই নিজের খেয়াল রাখিস,পাগলী ননী!
পাগলী পাগলী পাগলী!
আর আমাকে বকতে পারবিনা তুই...


এভাবে মরে যাব?
ধূর কীসব বকছি,না না তা চলেনা,
লজ্জাটা আমার নাকি সমাজের?
ভ্রষ্টাচারই আজকের শিষ্টাচার
নুন নয় খুন দিয়ে ভাতমাখে বিচারক
জরায়ুতে গিঁট বেঁধে বুঝিয়ে দেব
পাহারা প্রহসন আর পুলিশ প্রতারক


সরকারের গদি আছে,মা নেই,নেই বোন
লোকের মা-বোন কি আর মা বোন?
রসচাটা পৃথিবীর রঙচটা কান্না
তলে তলে তলানিতে চলে গেছে পান্না
রাক্ষসের প্রাণ আগে থাকতো কোটরে
নারীরা আজ থাকে ভোটবাক্সের জঠরে
কামাসক্ত রাবণ পর্যন্ত ধর্ষণ করেনি
জানি মাতা-পিতা তোমরাও ছেলেদের ধর্ষক করোনি
দুঃশাসনের রক্তে রাঙাবে দৌপদ্রী কবে চুল?
ভীড়ের চাপে ভীম মৃত,দৌপদ্রী তুমি ভুল!
পোশাকের অযুহাতে পশুটাকে লুকিয়ে
যতোদোষ মাগীটার,নাটক করে কঁকিয়ে!
ভাবিতাম,মন্দিরে ধর্ষিতাগণ পূজা পায় কেমনে?
আজ বুঝি বলির পাঠা বলির আগে পাতা খায় যেমনে!
খুব চুলকানি তোর, আয় ঝামা ইঁট ঘসে দিই
সোজা আঙুলে না উঠলে বাঁকালে উঠবিই,
তুই যদি রক্তবীজ তবে আমি কালী-জীহ্বা
মুন্ডু কেটে ঝোলাবো গলায় তারপর খুন পিবা!
মাংস ভালো লাগে?আয় কালীর খাড়ার ঘা খা
ভস্ম করে দেব তোরে,সময় আছে শুধরে যা।
নারীবাদী শেয়ালেরা জানে শুধু হুয়া হুয়া
আগুন জ্বালা দিকে দিকে,বন্ধ কর নাটুকে দোয়া,
ভদ্র আর ভালোলোক দুইজন এক নয়
এইখানেতেই ভীষ্ম,ভীমে পার্থক্য হয়!
কপালে ট‍্যাটু করে ধর্ষক লিখে দিয়ে
ডানাখানা কেটে দিয়ে ছেড়ে দেব তোরে টিয়ে।
মোমবাতির মড়াকান্না বন্ধ হোক এইবার
আয় মশাল নিয়ে করব মিছিল,আয় দাবানল,ছারখার।।