মনে পড়ে যায় দুজনার শেষ বিকেলটা
ক্যাফের আলো আঁধারিতে
মুখোমুখি তুমি আমি
ভীষণ মৌন, নিথর।
একটি গান বাজছিল তখন
লাউড স্পিকারে
হয়তো অপেরা সঙ্গীত
কিংবা পুরনো দিনের কোনও
রিদম এন্ড ব্লুজ।
মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আমরা
কী শীতল নিরুত্তাপ তোমার মুখ
অত্যন্ত ব্যথাতুর, করুণ
দুচোখের কোণে জমাট অশ্রুজল!
আমি জানি আমার চোহারাও
তখন দুঃখী হয়ে উঠেছিল
হয়তো আমার চোখের কোণেও
জমেছিল দুয়েক ফোটা অশ্রুবিন্দু,
তা তুমিই শুধু বলতে পার!
এক দুই তিন চার
প্রত্যেকটি মুহূর্ত যেন বিরাটকায়
পাথর হয়ে চেপে বসেছিল বুকে
কিছুতেই সরানো যাচ্ছিল না,
শূন্য দৃষ্টিতে আমরা পরস্পরের
দিকে কেবল তাকিয়েই ছিলাম
কারও কোনও কথা নেই
কোনও শব্দ নেই
শুধু নিষ্ফল বিহ্বলতা।
আমার বড্ড ইচ্ছে করছিল
তোমার চিবুক খানিকটা ছুঁয়ে দিতে
আলতো স্পর্শে,
মুছে দিতে চোখের কোণের
ওই জমাট অশ্রুকণা;
আমার আরও ইচ্ছে করছিল
তোমার হাত দুটি ধরে
তোমাকে নিয়ে চলে যাই
দূরে কোথাও, অনেক অনেক দূরে
এই শহর ও শহরস্থ
মানুষগুলোর দৃষ্টিসীমার বাইরে
অনেকদূরের কোনও শহরে।
কতো ভাল হতো যদি দুজন
দুটি পাখি হতাম
সব পিছুটান পিছে ফেলে
দিব্যি ডানা মেলে উড়ে যেতাম
দূর দিগন্তে
ওই বিস্তীর্ণ আকাশের নীলে!
এক দুই তিন চার
বোকা দেয়াল ঘড়ির কাটাগুলো
ঘুরে চললো অবিরাম!
এভাবে দুজনার একসাথে
কাটানো শেষ বিকেলের
শেষ মুহূর্তগুলোও
ফুরিয়ে গেল একে একে,
তুমি আমাকে ছাড়িয়ে চলে গেলে
তোমার কাজে;
আমিও অন্যান্য দিনের মতোই
এক কাপ কফি পান শেষে
ফিরে এসেছিলাম,
তারপর আর কোনদিন যাইনি
তোমাদের ক্যাফেতে।