দেখো, আজ আমরা যেখানে এসে দাঁড়িয়েছি। এ যাত্রা মোটেই মসৃণ ছিল
না। আমরা দিগম্বর ছিলাম। নিজেরাই নিজেদের রক্ত পান করেছি। যখন
খুশি ছিঁড়েখুঁড়ে চিবিয়ে খেয়েছি নরম মাংসের শরীর। তখন তাদের কোনও
নামও ছিল না। আমরা ঘুমোতাম বনেবাদারে। আমরা খেতাম গাছের ফল
পাকড়। পাথরে পাথর ঠুকে আগুনও জ্বেলেছি। যত্রতত্র নির্লজ্জ মলমূত্র
ত্যাগ করেছি। কিন্তু সেসব ইতিহাস তোমাদের একবিন্দুও জানা নেই!
আমরা আদতে মানুষই ছিলাম না। আমাদের কোনও নাম ছিল না।
অদ্ভুত আঁধার এক ধূম্রালোক ছিল আমাদের পৃথিবী। তখন পৃথিবীরও
কোনও নাম ছিল না। সেসব নামগুলো আমরাই পরবর্তীতে  দিয়েছি।
বড্ড ক্ষীণ একটি শূন্য থেকে শুরু হয়েছিল এই মানুষের যাত্রা। অনেক
ঝর ঝঞ্ঝা, চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আজ আমরা এসে দাঁড়িয়েছি এখানে।
তোমরা নির্ঘাত এসবের কিচ্ছুটি জান না! তোমরা এখনও সেই শূন্যেই
পড়ে আছ! তোমাদের জন্য আমার বড্ড করুণা হয়। তোমরা আসলে
বঞ্চিত মানুষের এই গৌরব যাত্রার অংশীদারিত্ব থেকে। তোমরা দারুণ
রকম পরাজিত একদল প্রাগৈতিহাসিক ক্ষুদ্র নোংরা সরীসৃপ হয়েই টিকে
আছ পৃথিবীতে! 'টিক টিক টিক' করে ওঠা দেয়ালের টিকটিকিগুলোর
মতোই মূল্যহীন তোমরা এখানে। তোমরা পাপিষ্ঠ, অভিশপ্ত! শুধুমাত্র
একটি তুচ্ছ নারী শরীরের জন্য বিকিয়ে দিতে পারো নিজেদের পুরুষত্ব
ও মনুষ্যত্ব, দুটোই! কারণ তোমরা পোকামাকড় প্রজাতির বড্ড ঘৃণিত,
ঝঞ্ঝাটে, নির্লজ্জ, নোংরা একদল সরীসৃপ; তাই পারো। ছিঃ! প্রকৃত
পুরুষ তা কখনওই পারে না।