কি খাও সোনা, অন্নপূর্ণা, হাতে তোমার কী?
পাউরুটি না মাখন-জেলী, কেক নাকি পেস্ট্রি?
স্যান্ডুইচ নয় পেটিসও নয়, নয় তা তিলের খাজা
বাটার বান না চিকেন রান নাকি বাদাম ভাজা?
পটেটো চিপস্ কি খেতে ক্রিসপি, নাকি প্যাকেট পী
ক্রীম ক্র্যাকার বা ওয়েফার হলে সঙ্গে রাখো কি?
আমারও খেতে ইচ্ছে হচ্ছে, দেখিয়ে খেতে নেই
খাদ্যে আমার অরুচি নেই, তা ছিলনা কোন কালেই।
তবুও আমায় দেখিয়ে দেখিয়ে এসব হচ্ছে কী?
আমিও কিন্তু খাইতে পারি, ক্রীম বাটার বা ঘি!
খাইনা সেটা ভিন্ন কথা, ডাক্তার সাবের মানা,
না হলে বুঝতে খানা কাকে বলে দেখিয়ে তারিয়ে খানা।
ব্লাড প্রেশারটা একটু বেশি, সুগারটাও তালকানা
পায়ের গিঁঠে একটু ব্যাথা, ইউরিক এসিড জানা,
কিডনী নিয়ে চিন্তা করি না, এখনো জানি না হাল,
বছরান্তে দেখি রক্ত-মধ্যে বাড়ছেই গোলমাল।
নাকের উপরে কাচের বাহার বাড়ছে দিনে দিনে,
গত বছর যা প্লাস দুই ছিল, এইবার তা তিনে।
চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হচ্ছে, কাচটা হচ্ছে ভারী
না হলে কি আর তোমার খাবার নিয়ে কাব্য করি!
এক ছোঁ মেরে হাতে তুলে নিয়ে চালান দিতাম মুখে
চোখের পলকে নাই হয়ে যেত, দেখতাম কে রোখে!
তুমি যা খাও তা আমি খেতে পারি দ্বিধাহীন নির্ভয়
রোগ শোক জরা করে ফেরে তাড়া নেই কোন বরাভয়
মাথার উপরে বয়স খড়্গ, হাত পা রয়েছে বাঁধা
জীবন হলো আজব চক্র, আজব গোলক ধাঁধাঁ।
শূন্য থেকে যাত্রা শুরু, শূন্যে মিলাবে শেষে
এত যে আষাঢ়, আসে ফাগুন আসে যে সে অক্লেশে
ফিরে যায় ফের আসে আর বার, অবিরাম  চলাচল
অমৃতের খোঁজ সারাটা জীবন, উঠে আসে হলাহল।
আমাকে তুমি ক্ষুধার্ত করেছ, পিপাসা বাড়ছে সাথে
রসের পেয়ালা পিঁপড়ার সারি, জীবনের অভিঘাতে।
নিজে কিছু খাও, কিছুটা খাওয়াও, দু’কূল সমঝে চলো
পৃথিবীর খাওয়া শেষ খাওয়া নয়, মন কে সে কথা বলো।
স্বর্গের সেই আপেল-মেওয়া এখনো হয়নি খাওয়া
এ জীবনে তুমি আমায় খাওয়ালে ও কালে যাবে তা পাওয়া
জীবন-মৃত্যু, স্বর্গ-নরক, পাপ ও পূণ্য প্রিয়
খাদ্য না পারো, আমার সঙ্গে এসব কিছুটা দিও।
এক জীবনে অনেক কিছুই থাকবে স্পর্শহীন
তাদেরই কিছু ভাগ করে দিও, আমি দরিদ্র দীন।।


তোমার সঙ্গে দেখা যেন হয়, পার্থিবতার পরে,
বন্ধু তুমি দেখা দিও সেই অনন্ত অম্বরে।
তোমার জন্য সাজিয়ে রাখবো, আমার অন্ন যত,
সেদিন তুমি আমার অতিথি, আমার অভ্যাগত।।