বন্ধু তোমাকে দেখেছি বইমেলায়
রমনার বটমূলে, অশ্বত্থবৃক্ষের নিচে
বন্ধু তোমাকে দেখেছি চারুকলার বকুলতলায়, মধুর ক্যান্টিনে
অথবা কোন এক ময়ূরাক্ষী বা জলেশ্বরী নদীর কাছে।


বন্ধু তোমাকে চিনেছি গণআদালতের মিছিলে,
যুদ্ধাপরাধীর বিচারের দাবীর শাণিত শ্লোগানে
তোমাকে চিনেছি নির্বাচন কমিশনের
লাল ইটের সেই ভবনের সিঁড়ির কাছে
যেখানে দাঁড়িয়ে কোন যুদ্ধাপরাধী সগৌরবে
ঘোষণা করেছিল ‘বাংলাদেশে কোন যুদ্ধাপরাধী নেই,
একাত্তরে কোন যুদ্ধ হয়নি, হয়েছিল গন্ডগোল,
সেটা ছিল গৃহযুদ্ধ’
তোমাকে চিনেছি গণজাগরণের সেই
প্রগাঢ় চেতনা শাণিত দিনগুলোতে
বাংলা বর্ণমালার নতুনতম পরিচয়ে
তোমাকে চিনেছি অনন্ত নক্ষত্ররাশির পরিচয় সন্ধানরত
কোন জিজ্ঞাসু মনের মুকুরে,
তোমাকে চিনেছি কোন কোন উৎকন্ঠিত ভি চিহ্নের সামনে
বিশাল প্রশ্ন নিয়ে দাঁড়াতে দেখে
চিনেছি কোন চন্দ্রালোকিত রাতে
অশ্রুবিধুর কবির মতো লেখার পৃষ্ঠায় অবনত হয়ে
নিজেকে উজাড় করতে
যে রাতে প্রথম আনন্দাশ্রু ঝরেছিল বাঙ্গালী জাতির,
স্বাধীনতার দায়মুক্তির শুভবার্তার শিঙ্গা হাতে।


তোমাকে শেষ চিনেছি রক্তাক্ত পথে
ক্ষণজন্মা ফুলের মতো ঝরে পড়ে থাকা দেখে,
অবাক বাংলাদেশের মুখের উপর
চপেটাঘাতের মতো কুয়াশাচ্ছন্ন দিনে,
যেদিন কেঁদেছে বাংলাদেশ
আর হেসেছে পরাজিত শক্তিরা টুইটার বার্তায়
সোল্লাসে ‘‘‌লাফড আউট লাউডলি’’ বলে টুইট করতে।


আমার চেনা ভুল ছিল না।
এ পরিচয় জন্ম-মৃত্যুর বাধা মানে না
জন্ম থেকে জন্মান্তরে এ পরিচয়,
এ যাত্রা অব্যাহত থাকবে।
পরাজিত জানে না, পরাজয়ের গ্লানি কখনো পিছু ছাড়ে না।
আর ইতিহাস কখনো পরাজিতকে প্রশ্রয় দেয়না,
ইতিহাস আছে আমার সাথে, আমার হাতে।


তুই বেজন্মা কখনো আস্তাকুড় হতে উঠে দাঁড়াতে পারবি না।
আর যদি কোনভাবে দাঁড়াসও, আবার মুখ থুবড়ে পড়বি গো-ভাগাড়ে,
শরীর থেকে ইতিহাসের অভিশাপের ঘা কোন দিন শুকাতে পারবি না।
সেই ঘা-ই তোদের সমূলে বিনাশ করবে, রেহাই পাবি না।


আমি আর বন্ধু সেদিন দাঁড়িয়ে দেখব, গতস্য নাস্তি শোচনা।