পর্বঃ তখনো প্রস্থান হয়নি


জানিনা এখনো আছো, নাকি
নেই হয়ে গেছো-গুরু-লীলাবতীর কোলে,
কোন এক মহৎ দুঃখে মস্তিস্কে রক্ত চড়ে বসে,
তারপর মহাক্ষরণ।


করোটির ভিতরে সুর ভাসে
রীড ছুঁয়েও ছোয়না, সুর,
মাছরাঙ্গার মতো ছোঁ মেরে তুলে নেয়
অমরত্বের বাথানে, কালবিনাশী;
বাতাসে ভাসে অমৃত মুরতির মতো,
আমি মুর্চ্ছনাপিয়াসী।


সেই কবে দিন এসেছিল, টানাপোড়েন,
দিনরাত একাকার, মনের ভিতরে দাহ, পোড়া সময়ের ছাই,
উপচে পড়া এ্যাশ ট্রে, বাতাসে ওড়াই,
নিজের কাঁধে বয়েছি নিজেরি শবদেহ, সান্ত্বনাহীন
তুমি এসে দাঁড়ালে মস্তিস্কের পৈঠায়, তোমার সুরে
তোমার সঙ্গীতে, তোমার যন্ত্রানুষঙ্গতায়, পুনর্জন্ম দিয়েছ কোন মৃতকে,
পত্র-পল্লবে, ফুলে-সৌরভে, ভাব-মন্থন গুঢ়তায়
প্রাণোচ্ছ্বল করে, তুলে এনেছ তাকে
ঝন্ঞ্ঝাক্ষুব্ধ সমুদ্রে অকাল নিমজ্জন থেকে
প্রাণের অমিত মুক্তোখচিত বেলাভূমিতে, করেছো জীবনময়।


সেই তুমি আজ সণ্ধিক্ষণে, জীবন-মরণ, কাহাতক সয়া যায়।
জানি অপারগ আমি, মানবীয় ক্ষুদ্রতায়, হাতে অমরাস্ত্র-প্রার্থনা।
বিধাতা, তুমি তাকে ফিরিয়ে আনো
পৃথিবীর এ অদৃশ্য মরুময়তায়, পুনঃপ্রাণ প্রবাহিত করো প্রাণহীনতায়, প্রস্থানের পূর্বে এ আমার অপার কামনা;
ভাসতে দাও আমাদের, অধম মানবকীট, তার সুরের প্রস্রবনে
ফিরিয়ে দিওনা।


ফিরে এসো প্রিয়, তুমি, সুর সমুদ্রে, আরেকবার, সহস্রবছর ধরে
পুনর্জন্ম হোক তোমার, সুরের ঐশ্বয্যময়তায়, আবার জাগাও মৃতপ্রায়কে, পঙ্কিলতা, নিমজ্জনতা, কষ্টবিধুরতা থেকে
সৃজনশীলতায়, নিরন্তর অসুন্দরতার ভিতর থেকে;
তোমার মত মৃতসন্ঞ্জীবনী সত্ত্বার আজ
        বড় বেশি প্রয়োজন।
হে ঈশ্বর! সুস্থ করে তোলো তুমি তাকে,
বিনাশ কোরা না এখনি এই সুন্দরের সাধক, কারিগরকে, তুমি সুন্দর--
তাঁকে জীবন্ত রাখো আরো বহুকাল
মানুষকে ভালোবাসার জন্য তাকে দাও
আরেক জীবন পুরস্কার।
এ আমার নিবিড় দাবী। বারংবার প্রার্থনা।।


(লীলাবতী হাসপাতালের শ্বেতশুভ্র শয্যায় যখন তিনি)


এস, এম, আরশাদ ইমাম//ঢাকার জীবন