মহোদয়ের ইচ্ছে হলো কাঁঠাল দেবেন খেতে,
একটি করে পাকা কাঁঠাল, অফিস উঠল মেতে।
যুগ্ম মহোদয়ের হাতে কাঁঠাল বিলির ভার,
বাড়ি বাড়ি গাড়ি যাবে পৌঁছাবে ড্রাইভার।


রাস্তাঘাটে ভীষণ জটে আটকে আছে গাড়ী,
মহোদয়ের সইছে না তর, করনা তাড়াতাড়ি।
আজই এসব পৌঁছানো চাই, সবার ঘরে ঘরে
নইলে কিন্তু পচে যাবে, গাড়ীটার ভিতরে।


কোথায় পেলেন এত কাঁঠাল মহোদয়ই জানেন!
‘‘পেতেই এতো পাকলো কেন?’’ যুগ্ম প্রমাদ গোণেন।
কিলটা কী খুব বেশি হোল, নাকি গরম বেশি?
যানজটের এ নাকাল শহর, গলায় তুলছে ফাঁসী।’’


মাঝে মাঝেই উঠছে বেজে মহোদয়ের ফোন,
যুগ্ম মশায় পেরেশানে বলবেন কী এখন!
ছুটছে না এই জটের জটিল রাস্তা নামের জাল,
একটু পরেই আযান হবে রোজাদারের হাল।


এসব কিছুই জানে না যে মহোদয়ের ইচ্ছা,
কাঁঠাল খাবেন অধস্তঃনে সে জন্য এ কিচ্ছা।
যুগ্ম খোঁজেন ডেপুটিকে, ‘‘তোমার গাড়ি কোথায়?
এক্ষুণি যাও স্যারের বাসায় ড্রাইভারটা কোথায়?’’


একটা কাঁঠাল ‘অতিরিক্ত’ , তোমার জন্য এক
আরেকটা দাও ‘ইডি’র বাসায়, কুইক ফর গডস্‌ সেক।’’
ডেপ্‌টি পড়েন গ্যাঁড়াকলে, হাসপাতালে বাবা
যেতে হবে অফিস শেষে, মধ্যে এ কোন হ্যাপা!


ড্রাইভার কয় গরগরিয়ে, ‘‘অফিস টাইম শেষে
এসব কর্ম না করলে কী দেশটা যাবে ভেসে?’’
‘‘দুপুর বেলা বললে পরে কাঁঠাল এতক্ষণ
টেবিল ভরে শোভা পেত শান্তি পেতো মন।’’


সময় তো আর থামছে না তাই আযান হয়ে গেল
যানজটে এই মাইক্রোবাসে রোজার খতম হলো।
আযান শেষে মহোদয়ের ফোনটা আবার বাজে
‘‘পৌঁছানো কি হয়েছে সব অফিসারের কাছে?’’


যুগ্ম করেন আমতা আমতা, ডেপ্‌টি কাটেন জিভ
ভয়ের মাথা খেয়ে শেষে যুগ্ম বলেন ঠিক-
‘‘সব হয়নি বাকী কিছু, চেষ্টা করছি স্যার,
রাস্তাঘাটে ট্রাফিক জটে আমাদের জেরবার।’’

‘‘দু’একটা, স্যার, যায়নি দেয়া, ইফতারীর পরে
আশা করছি ড্রাইভার তা পৌঁছে দেবে ঘরে।
এশার আগেই পৌঁছাবে সব, সেই চেষ্টায় আছি
সবাই খেতে পারলে তো স্যার আমিও যেন বাঁচি’’।


মহোদয়ের দয়ার শরীর থামান কথার ঝড়,
‘‘রাস্তায় জ্যাম? বলো সেটা! ঠিক আছে, তারপর?
দেয়া শেষে ড্রাইভাকে পাঠিয়ো আমার কাছে,
তোমার জন্য বাসায় একটা কাঁঠাল রাখা আছে।’’


‘‘কাপাসিয়ার কাঁঠাল তো সব, গাছপাকা আর ফ্রেশ
না খেলে বুঝবে কি করে কাঁঠালের কি টেস্ট!
কেমিক্যালের ভয়মুক্ত, একদম তরতাজা
এইজন্যই বাংলাদেশে কাঁঠাল ফলের রাজা।’’


এস, এম, আরশাদ ইমাম//২৪ জুন, ২০১৫; বুধবার; ১০ আষাঢ় ১৪২২//ঢাকার জীবন