"প্রেমিক পুজা করে স্বামী ভোগ করে ।"
ডিভোর্স হবার পূর্বে এটাই ছিলো সোফিয়া লরেনের সাথে শেষ কথা।


আমার বাবা ছিলেন ব্যবসায়ী মানুষ।
সারাদিন গঞ্জে কাজ সেরে বাড়ি ফিরতেন মধ্যরাতে। গৃহস্থালি পর্ব শেষে মাকে কাছে পেতেন হারিকেন নেভানোর পূর্ব মুহূর্তে
ততক্ষণে বাবা ঘুমানোর প্রস্তুতি নিতেন।


ঘুমানোর পূর্বে বাবা জানতে চাইতেন -
বাড়িতে বাজার- সদাই দরকার আছে কিনা?
মা আপনার ইচ্ছা বলে মুখ ফিরিয়া শুয়ে পড়তেন। ঘুমিয়ে যাওয়ার আগে ফিসফিসিয়ে বলতেন - ছোট ছেলেটার স্কুল ফি দিয়ে যাবেন সকালে।


তারপর পৃথিবীর বাকী দুঃখটুকু বুকে নিয়ে দুজন দুদিকে পাশফিরে ঘুমিয়ে পড়তেন ।


এভাবেই কেটে গেছে অভ্যাসের সংসার..


একটা মাছ সাতার জানেনা -মা
একটা হাত ধরতে জানেনা -বাবা


এখন মধ্যরাত্রি
হ্যারিকেন নেভানো
বাড়ির পেছনে অর্জুন গাছে ডাহুক ডাকছে
জানালার কোটর পেরিয়ে আধফালি চাঁদ-
যেন হু হু বাতাসের স্বরে কাউকে খুব কাছে চাইছে
বিছানার পাশের অপরিচিত লোকটা ঘুমিয়ে
হঠাৎ শোনা যায় নিস্তব্ধ শুন্যতার ভঙ্গিতে সোফিয়া লরেন বালিশে মাথা গুঁজে কাঁদছে ।


আমার সন্তানকে শোনানো পৃথিবীর প্রথম প্রেমের গল্পটার শুরু এমনটাই হবার কথাছিলো-অথচ....


হ্যানরি সাহেবের
পরস্ত্রীকে প্রেমের প্রস্তাবে মন্দ লাগেনি
উপরন্তু একজোড়া উৎসুক প্রেমের চোখ
যা সাত বছর একত্রে সংসার করেও দেখিনি।


সত্যিটা হয়ত বলা হবে অন্য কারো গল্পে ; আপনি কিংবা আমি অন্যকোন রমণীর প্রেমিক ছিলাম।


ডিভোর্স ফাইনাল হলো-
সোফিয়া লরেনের কাছে শেষ চিঠিতে লিখলাম-
"প্রেমিক পুজা করে স্বামী ভোগ করে। "