এলোমেলো ভাবনাগুলো সংহত করতে গিয়ে
দেখি হাত গলে পিছলে বেরিয়ে যাচ্ছে সব,
কিছুতেই গুটোতে পারছি না ভোঁ কাটা
ঘুড়ির বাকী সুতোখানি, এলোমেলো হাওয়ায়
চিন্তাসুতো উড়ে উড়ে যায়।


এক একটা চিন্তা এক এক রকম,
কোনওটা কারও লাল টিপের ছায়া,
কোনওটা কারও থমধরা বুকের
মন কেমন করা অমোঘ শেষ ইচ্ছা,
কোনওটা বা কারও ম্লান হাসির
অতি তুচ্ছ অথচ অমূল্য কিছু কামনা,
আবার কোনওটা কারও উদাস বাউল
মনের আহ্বান। এলোমেলো হাওয়ায়
চিন্তাগুলো তুর্কি নাচন নাচায় আমায়,
নাকাল করে ছাড়ে।


অথচ এমনতর হবার কথা ছিল না।
আসলে যার যেখানে ব্যথা সেখানে
আলতোভাবে বোলাইনি হাত, অনেক দুঃখেই
সান্ত্বনার বাণীটুকু পর্যন্ত শোনানো হয়নি
কিংবা আনন্দে দু’দণ্ড পাশে থাকা হয়নি।
কিছু রম্য কামনার ফুলকে অনাঘ্রাত ছেড়ে
এসেছি, কিছু বাসনার ভুলকে মরমিয়া সুরে
ঘুম জাগানিয়া গান শোনানো হয়ে ওঠেনি,
আর কিছু কিছু নাছোড়বান্দা ভাবালুতাকে
বাস্তবের রুক্ষ মাটির স্পর্শ দেওয়া হয়নি।  


তদেরই পিছু টান আমাকে সারাক্ষণ
ঘিরে রয়েছে, তাদেরই নিঃশ্বাস প্রশ্বাস
আমাকে প্রতিটি মুহূর্তে জানান দিচ্ছে
তাদের অভিমানের কথা, তাদের অপূর্ণ
সাধের কথা, তাদের ব্যর্থ জীবনের
হাহাকারের কথা। তাই আমি ভাবব না
ভাবব না করেও তাদের কথাই ভাবি অহরহ,
তাই সামনে পা ফেলতে গিয়েও পিছনের টানে
হই বেসামাল।


জানি না এই দোটানা জীবন থেকে কবে
পাব মুক্তি—আমার সামনে পিছনে সমান আকর্ষণ,
সমান অন্ধকার, সম্পৃক্তির মধ্যে অসম্পৃক্ততা,  
সম্ভাব্য প্রাপ্তির পূর্ণতার মধ্যে হারানোর রিক্ততা।