খুব ছোটবেলায় ছিলাম যখন
মায়ের আদুরে নরম ছেলে
বাহিরে ছিলাম ভীতু কাপুরুষ
ঘরের মাঝে উঠতাম জ্বলে।
ভাই বোনদের সাথে মারামাড়ি হতো
কথা কাটাকাটি আর ঝগড়া চলতো।
ঘরে মাছের মাথা আর মুরগীর রান
এগুলো খাওয়া নিয়েই পরে যেত টান।
কখনো কখনো মা ক্ষেপে উঠতো
এসে আমাদের শাসন করতো।
মায়ের সাথে যখন বাহিরে যেতাম
সারাক্ষন মায়ের ওড়না ধরে রাখতাম।
মায়ের শাসনে সে সময় একবার
খুব বেশি ক্ষেপে গিয়েছিলাম
আর সেদিন রাগের চোটে বাসা থেকে
পালাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।
যা সিদ্ধান্ত হলো সে দিন বিকালে
ঠিক তাই করে ফেললাম
বাসা থেকে খেলতে বেরিয়ে
নিরুদ্দেশে পালিয়ে গেলাম।
পকেটে ছিলো টিফিনের টাকা থেকে
জমানো অল্প কয়টা টাকা
নিরুদ্দেশে কেবল হাঁটতেই থাকলাম
পুরো জগতটা লাগছিল অনেক ফাঁকা।
হাটতে হাটতে কোথায় যাচ্ছি
ছিলো না এমন কোন ভাবনা
রাতে খোলা আকাশের নিচে ঘুমাবো
এমনটাই ছিলো পরিকল্পনা।
দোকান থেকে প্রিয় বিস্কুট কিনে
হয়ে গেলো রাতের খাবার
তারপর খোলা মাঠে শুয়েই রইলাম
চোখে ঘুম আসছিলো না আমার।
ধীরে ধীরে রাত গভীর হলো
আমার লাগতে শুরু করলো ভয়
কতক্ষন নিজেকে সামলে নিয়ে
পরে ভাবলাম এভাবে আর নয়।
মায়ের বুকের নরম ছেলে আমি
মাকে ছারা আমার কিভাবে হয়
তাই ভেবে চিন্তে আবার করলাম
মায়ের কাছেই ফিরে যাবার প্রত্যয়।
অনেক রাতে ফেরার পরে
আমায় টেনে নিয়ে বুকে
কাঁদতে কাঁদতে মা শুধালেন মানিক
কোথায় গিয়েছিলে আমাকে রেখে?
কান্নায় অঝোরে কেবল ঝরছিলো
মায়ের চোখ দিয়ে পানি
আর তখনও আমিহীনা বাসায় সে দিন
কেউ রাতের খাবার খায় নি।
আমি মায়ের বুকের সেই সোহাগের
অতি নরম কোমল ছেলে
তবুওতো আজ রূঢ় বাস্তবতায়
থাকতে হচ্ছে মাকে দুরে ফেলে।