জানো, আদিব-আদিবার আম্মু,
আমাদের সন্তানগুলো না, অনেক বড়ো হয়ে গেছে।


এখন আর আমাদেরকে পাত্তা দেয় না,
সারাক্ষণ মোবাইল নিয়েই ব্যস্ত থাকে।


কিছু বললে, না শোনার ভান করে চলে যায়।


তোমার মনে পড়ে?
সেই দিনগুলির কথা।


আদিব আদিবা যখন অনেক ছোট,
তখন আমরা চারজন প্রতি শুক্রবার ঘুরতে যেতাম,
আর একসঙ্গে হাতে হাত রেখে হাঁটাহাঁটি করতাম।


ওরা দুজন কত দুষ্টুমি করতো,
আর আমরা দূর থেকে তা উপভোগ করতাম।


আকর্ষণীয় কোনোকিছু দেখলেই
তা নেবার জন্য দুজন একসঙ্গেই বায়না ধরতো।


ওরা এখন আর আগের মতো বায়না ধরে না,
বারবার আব্বু আব্বু ডেকে আর বিরক্তও করে না।


ওদের এখন আর
আমাদের সাথে ঘুরতে যেতে ভালো লাগে না।
ওরা এখন
বন্ধুবান্ধবদের সাথেই ঘুরতে বেশী পছন্দ করে।


দু'দিন পর ওরা প্রাপ্তবয়স্ক হবে,
একসময় ওদেরও আমাদের মতো সংসার হবে।


সত্যিই দেখতে দেখতে ওরা অনেক বড়ো হয়ে গেছে।


ওরা হয়তো,
ওদের শৈশবের স্মৃতি ভুলেই গেছে।


আদিবা যখন কাঁধে ওঠার জন্য কান্না করতো,
আদিব তখন এক লাফ দিয়ে কাঁধে উঠে পড়তো।


আদিবার কান্না তখন আরও বেড়ে যেতো,
বাধ্য হয়ে দুজনকেই কাঁধে নিতে হতো।


তারপর ক্লান্ত হয়ে,
ওদের নিয়ে বিছানায় গড়িয়ে পড়তাম,
তারপর তিনজন একসঙ্গেই ঘুমিয়ে যেতাম।


বিশেষ করে ছুটির দিনগুলি,
ওদের সাথে নানান খুঁনসুটিতেই কেটে যেতো।


সেইদিনগুলি খুব খুব খুব মনে পড়ে গো,
আবারও সেই দিনগুলিতে ফিরে যেতে ইচ্ছে করে।


জানি তা কোনোদিনও সম্ভব হবে না,
তবুও সেই মুহুর্তগুলো স্মরণ করে,
নিজের মতো করে ভাবতে ভালোই লাগে।


আসলে বয়সের সাথে সাথে
পিতামাতার সাথে সন্তানদের দূরত্বও বেড়ে যায়।


হয়তো এটাই প্রকৃতির অভ্যাস,
যেটা মেনে নিতে খুব কষ্ট হয়।


কিন্তু প্রতিটি বাবা-মাকেই
এই কষ্টটা মেনে নিয়েই
জীবনটা অতিবাহিত করতে হয়।


সত্যিই এই ছোট্ট জীবনে
কত যে ঘটনা,
কত যে রহস্য।


কত যে উত্থান,
কত যে পতন।


কত যে চাওয়া,
কত যে পাওয়া।


কত যে স্বপ্ন,
কত যে সম্পর্ক।


কত যে অর্জন,
কত যে বর্জন।


কত যে অতীত,
আর কত যে দুঃখ-সুখের গল্প।


জীবনটা নতুন করে শুরু করতে
যদি পেতাম উপায় বিকল্প,
তবে জীবনটাকে সাজাতে
সময় নিতাম খুবই অল্প।