তার জন্ম এক বদ্ধ, পচা আর দুর্গন্ধময় জলাশয়ে।
শৈশবে সে জানতো না বাইরে
রয়েছে এক সুবিশাল পৃথিবী।
উপচে পড়া বর্ষার জলে যেদিন সে মুক্তি পেয়েছিল-
সেদিন মুক্তির আনন্দ বোঝেনি সে।
তার বুক জুড়ে ছিল ঘর হারাবার বেদনা।


ফেলে আসা জলজ পথের উপর দিয়ে
তার ভেজা দৃষ্টি খুঁজে যাচ্ছিল তার
ভেসে যাওয়া জন্মভূমির ঠিকানা।
তারপর সে দিকভ্রান্ত হয়েছে জলের ঘূর্ণিতে।
তার দিকভ্রান্ত এলোমেলো দৃষ্টি খুঁজে ফিরেছে আশ্রয়।


একদিন সে ঠেকল শাপলা নামের এক
জলজ ফুলের গায়ে।
শাপলা তাকে শোনাল সমুদ্রের গান।
শোনাল, সমুদ্র আর দিগন্তের কিভাবে মিল হল।
আর পৃথিবী আলো করা সূর্যটা কি দুনির্বার আকর্ষণে-
প্রতিনিয়ত ডুব দেয় সমুদ্রের বুকে।
দূরের পাহাড়গুলো কীভাবে স্থির দর্শক হয়ে দেখে-
উত্তাল সাগরের উদ্দাম নৃত্য।


তারপর একদিন কচুরিপানাটা আবার যাত্রা করল।
কিন্তু এবার তার হারিয়ে যাওয়ার ভয় নেই।
আছে কেবল সমুদ্রে পৌঁছাবার তাড়া।
সমুদ্রের দিকে ভাসতে ভাসতে-
তার মনে হয় শাপলার কথা।
কিন্তু স্মৃতি তাকে ব্যাথিত করেনা একটুও।
বরং ফেলে আসা পথ, আনন্দ হয়ে
তাকে সঙ্গ দিয়ে যায় সমুদ্র পর্যন্ত।