আমার দুর্গা আমাকে দাদা' বলে ডাকে
দাদা এত সকালে কোথায় যাচ্ছ? বাজারে!
ওর কাছ থেকে নানান বাড়ির খবর আসে';
ওর পাশের বাড়ির সোমত্ত মেয়ে রাতে ফেরেনি
বাড়ির সকলে ছিল ভীষণ রকম দুশ্চিন্তায়
     সে বলে এবার থানায় একটা ডায়েরী করুন ।
বিপিএল রেশন কার্ড কোথায় হারিয়েছে
সে কিছুই মনে করতে পারছেনা,তাই মন খারাপ;
পরের দিন একগাল হেসে বলে
রেশন দোকানে ভুল করে ফেলে এসেছিলাম।


থাকতো দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার অনাম্নী গ্রামে
তখন মেয়ে দুটো ছিল খুব ছোটো
       ওদের বাবা রঙ মিস্ত্রীর কাজ করতো।
একদিন উদভ্রান্ত, গায়ে ভীষণ জ্বর নিয়ে ফিরল;
পাশের বাড়ি কাজ বাকি ছিল, মেয়েদুটো পড়তে গেছে ।
একটু বিশ্রাম নাও, সামনের বাড়ির কাজ সেরেই আসছি',
ফিরে এসে দেখে ভিতর থেকে দরজা বন্ধ
জানলা খুলে দৃশ্য দেখে সে জ্ঞান হারায় .।
দরজা ভেঙে যাকে উদ্ধার করা হল
    সে  কিন্তু তার স্বামী নয়, গোটা একটা জলজ্যান্ত লাশ।
পকেটের চিরকুটে লেখা আত্মহত্যার কারণ-
সামান্য টাকা ধার নিয়ে ফেরত দিতে পারেনি
তাই শুনতে হয়েছে অকথ্য কথার ফুলঝুরি ।
তাই নিজে মরে ওদের সবাইকে ভাসিয়ে গেলেন।


আমার দুর্গা ভেসে যায়নি মেরুদণ্ড সটানে উঠে দাঁড়ায়
পায়ে পায়ে আশ্রয় নেয় কোলকাতা'র শহরতলিতে;
নিরক্ষর মা মেয়েদের মানুষ করে এবং পাত্রস্থ করে ।
বিশ্বাসের মূল্য সে পেয়েছে, ব্যঙ্কে একটা খাতাও খুলেছে;
বাড়ি বাড়ি কাজ করতে করতে সকাল গড়িয়ে ভরদুপুর
দুই ছোটো নাতি এখন তার কাছেই থাকতে বাধ্য !
ওদের কখনো কাজবাড়িতে নিয়ে যাওয়া,
তারপর ওদের নিয়ে প্রাথমিক স্কুলে যাওয়া,
           ওরা ওখানে লেখাপড়া করে ।
           ওদের দিদিমা ওই স্কুলেই রান্নার কাজ  করে ।
একটু পরে দিদিমাই অন্নপূর্ণা হয়ে উঠবে  
         আর পাত্রে পাত্রে খাবার বেড়ে দেবে ।