সুনীল আমায় বলেছিল
যখন আমি ওকে বলেছিলাম
ওটা ছেড়ে দিলেইতো পারিস।
ওর নীল ধোঁয়ায় শরীরের কোষগুলো শুকিয়ে যায়...
ভবিষ্যতের বাকি আয়ু তাড়াতাড়ি ছোট হয়।
গোলা ভরা ধান বুলবুলিতে খেয়ে যায়;
নীললোহিতের দূরবীন চোখ ধূসর কাঁচ হবে।
আমি কেন! অনেকেই এমনটা ভাবতে চায়না।
তুই সেই কাজটা অনর্গল কেন করে চলেছিস?
তোর সুস্থতায় নীরা খুব ভালো থাকে।
ওর মুখে হাসি ফুটে ওঠে
জলভরা শ্রাবনের মেঘের মতন।


তারপর ও যেটা বলল
স্বভাবসিদ্ধ দরাজ ভঙ্গীতে
তার জন্য আমি মোটেই প্রস্তুত ছিলাম না।
সংক্ষিপ্ত জীবনের উপন্যাস বলে গেল একনাগাড়ে
ঠিক যেন রেডরোড ধরে সবুজের বুক চিরে
চলে যাওয়া আমাদের ঐতিহ্যবাহী ট্রাম।
কলকাতার হৃদপিণ্ডে দাঁড়িয়ে থাকা
শহীদ মিনারের মতন সাক্ষী হয়ে দেখেছে
কত গুপ্তহত্যা বিশ্বাস ভঙ্গ আশার ছলনা...
আর নানা রঙের প্রতিশ্রুতির মুষল বর্ষণ।
সবাই শুধু কথা দিয়েছে, কেউ ওরা কথা রাখেনি।
যে যেটা করবার তাই করে গেছে অকাতরে।
কেউ কেউ বলেছিল -আমি রত্নাকর নই বাল্মীকি।
পরিবর্তনের জোয়ারে লিখবে নতুন রামায়ণ।
তারপর...
সীতাহরণ দ্রৌপদীর লাঞ্ছনা সমানে হয়ে চলেছে;
এই চলচিত্রে আমিও আছি আমার মতন।
তবে হ্যাঁ জন্মান্ধ ধৃতরাষ্ট্রের মতন নয়,
সাদা কাপড়ে চোখ বেঁধে চরিত্র রূপায়িত করি।
আমি ও চলে যেতে চাই বয়ে যেতে চাই দূর নীলিমায়,
যা কিছু গরল পেয়েছি বুকপকেটে ভরে
নবীন কিশোরের হাতে অমৃতভাণ্ড তুলে দিতে চাই।
যখন ও বলা শেষ করল
মুখে লেগেছিল সেই দুরন্ত অপূর্ব পবিত্র হাসি।
বোহেমিয়ান ভাব ছড়িয়ে নীরবে বলে গেল
-দ্যাখ রক্তিম, আমি কিন্তু আমার মতনই।