মনে তো পড়ে!
আজীবনের বেড়ে ওঠা ঝোপ ঝাড় জল জঙ্গল
তুমি ও ছিলে আমারই সাথে
শীত গ্রীষ্মে বৃষ্টি আর ফাল্গুনে
মহালয়ার ভোরে শিউলি কুড়ানোতে
কাঁথা মুড়ির হালকা শীতে
নির্জন দুপুরে রোদ মাখানো আচার চুরিতে।
বিকেলে অস্ত যাওয়া সূর্য দেখতে
আঠারবাঁকি নদীর তীরে তুই আমি চুপি চুপিতে...


সেদিনের হঠাৎ বৃষ্টিতে হারিয়ে গেলাম দুজনে
কি করব কিছু ভেবে পাচ্ছিলাম না
পুরানো এক বটের নিচে আশ্রয় নিয়েছিলাম।
তোর মাথার চুলে বৃষ্টির জল চুমকি যেন
একরাশ জ্বলজ্বলে মুক্তো ছড়িয়ে রেখেছে;
আমি কেমন বোকার মতন হাত বাড়িয়ে
তর্জনীতে তুলে নেবার চেষ্টা করেছি মাত্র...
তোর গরম নিঃশ্বাস আমার চোখে মুখে
বলে ফেললাম- তোমার কি জ্বর এসেছে মনিমালা?''
নিজের শ্রবন যন্ত্রকে অবিশ্বাস করি কি করে?.
তুই থেকে এক্কেবারে তুমিতে
কেন ঝাঁপ দিয়েছিলাম জানিনা।
মাধবীলতার মতন আঁকড়ে ধরেছিলে আমায়।
বৃষ্টি যখন থেমে গেল তুমি তখন অন্য মানুষ।
জলছবি সমৃদ্ধ কবিতা ছাপ রেখেছো চোখের পাতায়
দূরে চকিতে হারিয়ে গেল কৈশোরের ধুলো খেলা।  
অত্যন্ত সন্তর্পণে জায়গা করে নেয় যৌবনের উন্মাদনা
দারুন এক সুখী মুহূর্তের সাক্ষী থাকল বৃষ্টি বিকালবেলা।


আজ মনিমালা তোমার কথা মনে পড়লেই
দেখি অব্যবহৃত ঘরের কোনে
একা এক মাকড়সা অনন্তের জাল বুনে চলেছে।