জয়'দা


আমি তোমার অপু বলছি।
বাপি তোমাকে ঠিক কথা বলেছিল।
ও আমার সাথেই পড়ত, আমার সাথে খুব মিল ছিল।
আমি ওর মনের কথাগুলো অনায়াসে বুঝতে পারতাম।
আসলে, আমি আর ও ছিলাম অভিন্নহৃদয় বন্ধু।
এই নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলত...
ওকে বলতাম তুই ফার্স্ট বেঞ্চার যা সামনে গিয়ে বস...
ও শুনতো না ... সেই আমার কাছে এসেই বসত।
বসেই বলত - তোর কাছে বসলে মন ভাল হয় রে অপু।
আরও সব কত কথা- ওর মন নাকি পেয়ে যেত প্রজাপতি ডানা।
চোখ বন্ধ করে বলত - তুই কি আমচুর খাচ্ছিস লুকিয়ে?
আমায় একটু দেনা।
আমি না বললে ও কিছুতেই বিশ্বাস করত না।
তাহলে কেন এই গন্ধ তোর কাছে পাই বলত অপু!
আমাকে ছুঁয়ে একনাগাড়ে বলে যেত...
অপু... জানিস আমি এখন আকাশে মেঘের ভেলায়;
উড়ে বেড়াচ্ছি ... হালকা মেঘগুলো লুকোচুরি খেলছে;
আমাদের বাড়ি ... এই শহর ... ওই শহীদমিনারের চূড়া
ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাচ্ছি। লেখাপড়া... বাবা মা ... বিধিনিষেধ ...
কিচ্ছু নেই...  কিচ্ছু নেই ... আছে যেন পালক-স্বাধীনতা।
তুই তখন সবুজ মাঠে ডাণ্ডাগুলি খেলছিস...
পাশের পাড়ার পুকুরে গাছের ডাল ধরে উদোম চানে ব্যস্ত...
হাডুডু খেলায় অন্যদলের সাথে মোকাবিলা করছিস।
তুই চকচকে চোখে চিৎকার করে আমায় বলে দিলি-
এইদিনগুলো স...ব নাকি রেখেছিস আমার জন্য।
আরব্য রজনীর গল্পের শেষটা আজই শোনাবি,
মনে থাকে যেন অপু...
যদি! কাল তোর সাথে আর দেখা না হয়।


সত্যিই আর কোনদিন দেখা হয়নি বাপির সাথে।
রূপকথার গল্প শুনত আমার কাছে।
আমার ঠাকুমা ছিল, সেই গল্পগুলো বলত।
আমি শুধু ওর কাছে রিলে করতাম।
ঠাকমা যে হটাত করে ছবি হয়ে গেল... !
কে আর আমাকে গল্প বলবে বল!
তাই গল্পের শেষ আজো না বলা রয়ে গেছে।
ও হয়তো জানে, আমি আর পৃথিবীতে নেই।
বাপির জন্য আমার খুব খারাপ লাগে।
ওর ঠাকুমা থেকেও ওদের সাথে থাকতনা...
বেচারি বাপি শেষমেশ বইপোকা হয়ে গেল।


জয়'দা তোমার নাকি আজ জন্মদিন!
তোমরা এই পৃথিবীর খুব আশ্চর্য মানুষ!
তোমাদের রোজ রোজ জন্ম হওয়া উচিত।
খুব মনে পড়ল।
তাই আবোল তাবোল লিখে গেলাম।


ভালো থেকো।  
আমি তোমারই অপু...