সবিতা দি আমাদের বাড়ি আসত।
হাসত কাজ করত, সিরিয়ালের গল্প করত।
পরেরদিন আসব বলে দ্রুত চলে যেত।
এখন আর আসে না।


ওর অনেক প্রশ্ন ছিল- জানো দাদাবাবু...
যার উত্তর আমার অনেক অজানা ছিল।
ওরা স্বামী কেন গলায় দড়ি দিল?
তারপর থেকে শ্বশুরবাড়ির অত্যাচার শুরু হয়েছিল।
ওর কথায় দক্ষিনি টান বেশ ভাল লাগত।


সেই সবিতাদি দেশবাড়ি ছেড়ে কলকাতায় আশ্রয় নিল
এ বাড়ি ও বাড়ি সাত বাড়ি কাজ করে।
তাই দিয়ে মায়ে ঝিয়ে একরকম চলে যেত।
দিনে দিনে মেয়েটার একটা বিয়ে ও দিল।
এখন মেয়ের দুই ছেলে ওর কাছেই থাকে।
সবিতা ইস্কুলে রান্নার কাজ পেয়েছিল।
তাতে ওর একটু বাড়তি সুবিধা ও হোল।
দেশবাড়ি গেলে ওকে সবাই খুব আদর করত।
ওর ছেলে বউ ওখানেই থাকে।
কিছুদিন থাকত, বেশ ভালই ভালো;
তারপরে কেমন যেন অসহযোগিতা শুরু হতো।
সবিতা ফিরে আসত, বুঝতে পারত! কি? এবং কেন?
মুখে কিচ্ছু বলত না।
সবসময় হাসি যেন সকালের রোদ্দুরের মতন লেগে থাকত।
ও বুঝতে পারত, শরীর সবসময় আরাম চায়।
তাই ও কাজে কর্মে সারাদিন ব্যস্ত থাকত।
তারপর সেই ছোঁয়াচে অসুখ এল দেশে,
সাথে এলো একদিন বিশাল ঝড়ের দাপট ।
সবিতাদি তারপর থেকে আর আসেনা।


একটা দশ সংখ্যার নাম্বার আছে বটে...
সেটাতে আর কোনদিন সংযোগ ঘটেনি।
ওর বেশ কিছু প্রাপ্য সযত্নে রেখে দিয়েছি।
কেমন যেন কর্পূরের মতন উবে গেল সবিতাদি!
আর কোনদিন ও ফিরে আসেনি।
হয়তো একদিন আসতেও পারে ... আমরা দিন গুনি।
হাসিমুখে সে এসে বলবে -
কি গো দাদা বৌদি তোমরা কেমন আছ?
তোমরাতো আমার খোঁজখবর রাখবেনা।
কেনই বা রাখবে বলতো
আমি আসি যাই কাজ করি মাইনে পাই।
আমি তো! একটা ফালতু মানুষ!