একদা এক সদানন্দ চাষী ঠিক করল
সবায় কথার চাষ করে দেদার ফসল ফলাচ্ছে
অনেক অনেক অনেক ফল ও পাচ্ছে।
সে ভাবল- আমিও কি কম যাই নাকি?
মিনুর মাকে যেই এই কথা বলা
মিনুর মা কথা শুনেই বিকট হেসে উঠল।
হাসতে হাসতে ক্লান্ত হয়ে
শেষে ভেউ ভেউ করে
চিৎকার করে মরা কান্না কেঁদে উঠল।
মিনু দাওয়ায় বসে পড়ছিল।
পড়ার বই ফেলে মার কান্না দেখে শুনে
কিচ্ছু না বুঝে সেও কান্না জুড়ে দিল।
মাটির দেওয়াল ভেদ করে
সে কান্না সারা পাড়ায় ছড়িয়ে পড়ল।
মিনুর বাবা বউ সামলাবে নাকি মেয়ে!
এই গরমে হিমসিম খেয়ে এক্কেবারে গলদঘর্ম !
কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থায় মাথায় হাত দিয়ে
মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে অজ্ঞানের মত।


পাড়াপড়শি যত ছিল ঘটিবাটি হাতের কাজ ফেলে
ছুটে এসে দেখে শুনে চক্ষুচড়ক গাছ।
কেউ বলে - আহারে খুব ভালমানুষ ছিল।
কেউ বলে - কাল বলছিল নোতুন কিছু করবে।
-বোধহয় ধার দেনায় ডুবে গেছিল মানুষটা।
- না'গো না ফসলের দাম তেমন পায়নি... তাই
- হ্যাঁগা মিনুর মা বদ্যিকে খবর দিয়েছ?
- কি হয়েছিল ? দিব্যি হাসিখুশিতে ছিল।
- মাঝে মাঝে ভুল কথায় হিন্দি গান গাইতো।
- বুকটা যেন উঠছে নামছে মনে হচ্ছে শ্বাস পড়ছে।
- মুখে চোখে একটু জল দাও দিকি...
মুখে জলের ছিটা পড়তেই সটান সদানন্দ উঠে দাঁড়ায়।


সবাই তখন অবাক ! একি মস্করা সদানন্দ !
বোকার মতন মাথা নিচু করে থাকে
যেন সে একটা ফাঁসির আসামী...
তখন মিনুর মা ইনিয়ে বিনিয়ে বিস্তরে বলে
- চাষ আবাদ ছেড়ে ছুড়ে, উনি নাকি কবিতা লিখবে!
এখন তাও দুবেলা দুমুঠো জুটছে ।
এরপর কি হবে তোমরাই বল?


সবাই মিলে বিধান দেয়।
অমন কাজ ভুলেও করোনা সদা।
ছন্দে ছন্দে মিলাতে গিয়ে শেষে পাগল হবে নাকি!
দরকার নেই তোমার কথার চাষী হয়ে।
পাড়ার নব্বই বুড়ো লাঠি ঠুকে বলে-
তোমায় কি সুখে থাকতে ভুতে কিলাচ্ছে সদানন্দ...
যা আছ তাই থাকো বাপু... ও তোমার কম্ম নয়।