ইচ্ছা করেই বাঁশবাগানের পথটা নিলাম বেছে
কেমন একটা জেদী আর সাহস আসে ক্রমে ।
ছানাবড়া মিষ্টির সাথে গরমাগরম তেলে ভাজা
শ্বশুর বাড়ির সন্ধ্যেটা আজ যাবেই ভীষন জমে ।


একটা দুটো দীপ জ্বালিয়ে যেই বেজেছে শঙ্খটা  
টপাস করে লালকুসুম সূর্য্যটা পশ্চিমে দেয় ডুব ।
শেয়ালের হুক্কাহুয়া দুরে কাছে যেই ছড়ালো
চুপিসারে ঝোপেঝাড়ে অন্ধকারও জমলো খুব ।


আজকে যেন বাঁশের বাগান অমাবস্যায় নায়ছে  
আকাশে বুঝি মেঘ ছিল, পূর্নিমা তাই হারিয়ে গেল।
ক্ষণেক আগে ইলশেগুড়ি বৃষ্টি ঝরে গেছে  
পায়ে হাঁটা গলিপথ কে যেন চকিতে মুছে দিল।


নিজের পায়ের শব্দ নিজের কাছেই লাগে অচেনা
আরো একজন পথ হাঁটছে সত্যিই যেন মনে হয় ।
যেই না থেমে গেছি, অবাক সেও গিয়েছে থেমে
কি হয় কি হয় ভাব, লক্ষ জোনাকি আলোয় ।


একলা পেয়ে নিজের মনকে বারে বারে বোঝাই
মন বলেছে 'সামনে এগোও, ও কিছু নয় এমন ;
কে যেন এক পিছন থেকে জামার কলার ধরে
শেষে দেখি ওটা কঞ্চি,ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ে তখন ।


কি করি! কি যে করি! ভুত ভেবে মিথ্যে ডরি
দেশলাই যখন বুকপকেটে, পাবো ঠিকই রাস্তা ;
আগুন জ্বললো কোথা? বারে বারে চেষ্টা বৃথা
জ্বলেই নিভলো কাঠি, শেষমেশ সবটাইতো ভেস্তা।


কতক্ষন যে দাঁড়িয়ে ছিলাম তা নিজেও জানিনা
এমন রাস্তা আর জীবনে যাবনা,ভাবছি মনে মনে ;
ঐ যেন কে আসছে? লন্ঠন হাতে মুখতো দেখিনা
"ফিরব ঘরে রাস্তা জানো?" বলি তাকে সাহস এনে ।


হকচকিয়ে চিত্কারে লন্ঠন ফেলে পালায় দ্রুত
বুকের ভিতর হৃদপিন্ড ধপাস ধপাস লাফায় ।
সম্বিত ফেরে জল ঝাপটায় বাতাস তালের পাখায়
সবাই বলে জামাই ''শেষে 'ভুলো ভুতে'র'' পাল্লায়!


আজও ভাবি সেই মানুষটা কেন যে ভয় পেল ?
ওকি তবে আমায় দেখে ভুলো ভুত ভেবেছিল;
লন্ঠন হতে অমন মানুষ কেউ দেখেনি কোনদিন  
ব্যখ্যা করি মানুষের ভয়ে ভুতটা লন্ঠন জ্বেলেছিল।