এক একটা মানুষ বোধহয় এমনি হয়
নিজের ভাবনা ছড়িয়ে মোহানায় মিশে যায়।
যেমন তুমি, আলোকমালা রেখে যেতে চাও;
চেনা অচেনা বৃত্তের সীমানা ছাড়িয়ে সুদূর দিগন্তে।
বলতে পারো! কেন? কিসের আশায়?
জন্মবৃত্তান্তেই জেনেছ? তুমিই নাকি পারের মাঝি
তাই কি একে একে পার করাও জীবন বৈতরণী।
কই ? আরো তো অনেকেই ছিল!
কেউ তো আসেনি ! কেউ তো নয় তোমার মতন!
চোখের নিমেষে আগুন দেখে হাত গুটিয়ে নেয়,
আপনস্বার্থে আপনারে নিয়ে,
তারা রয়ে গেল গৃহকোণে নিশ্চিন্তে।
কিছুই তো হল না তোমার ;
সবাইকে একে একে সবটুকু দিয়ে
হয়ে গেলে সারাজীবনের ভবঘুরে আধাসন্ন্যাসী।


কেউ কেউ তোমায় পেয়ে ধন্য মনে প্রাণে;
ভাবে, তৃষ্ণার বারি পেয়ে আজীবনের তৃষ্ণা মিটেছে ।
কেউ কেউ অবহেলায় অবলীলাক্রমে বলতে চায়,
এসব নাকি পুরুষানুক্রমেই প্রাপ্য, জন্মাধিকার।
আবার কেউ কেউ বলে, যা যা তুমি দিয়েছ
সবটা নাকি ওরা ফিরিয়ে দিয়েছে উজার করে।


ছোট থেকেই শুন্য থেকে শুরু করেছ
গ্রাম থেকে শহরে আনাগোনা যত বেড়েছে
কৈশোর থেকে যৌবন তাই অচিরেই হারিয়ে গেছে।
উপোষের অন্ধকারে কত দীর্ঘ রাত্রি কেটেছে ।
একবার গঙ্গার বুকে জীবনকে ছুটি দিতে গিয়েছিলে
তোমার অন্তরমন কেঁদে উঠেছিল ! মনে আছে সবটা...
কে যেন বলে উঠেছিল -''ওরে তোর জন্য অনেকগুলো
শুকনোমুখ পথের দিকে চেয়ে রাত কাটাচ্ছে রে ।
এমন ভুল করিসনে? ওরা যে অকালেই ঝরে যাবে।''
তুমি শুনেছ, তোমার অন্তরমনের প্রতিটি বার্তা।
গুটি গুটি পায়ে ফিরেছ বাড়ী সম্পর্কের টানে,
মাথায় ইটের বোঝা নিয়ে।


জীবনের শেষ প্রান্তে এসে হিসাবের খাতায়,
বিশাল শুন্য দেখে কি তুমি আশ্চর্য হয়েছ !
তুমি তো জানতে প্রিয়জন...
এটা তোমার পাপ্যই ছিল।
তুমি নিজেকে ভীষ্ম বলে পরিচয় দাও'না।
তাইতো শরীরে মনে প্রাণে কঠিন অসুখে হাসতে পারো।
আপনজনের বিষাক্ত তীরে বারবার রক্তাক্ত হয়েছ,
যন্ত্রণায় জর্জরিত হয়ে মনে করেছ - "এ ফুলের আঘাত"।
নদীর মতন কল্লোলিত হয়ে কলঙ্ক বয়ে নিয়ে যাও
নির্দ্বিধায় সকলের জন্য অমৃত আনবার উদ্দেশ্য নিয়ে।
আজকের দিনে
তোমার কথায় তোমাকেই অঞ্জলি দিলাম।
ভালো থেকো আমার প্রিয় মানুষ।