আমরা তখন একচালায় খিদিরপুরে থাকতাম।
আমাদের ছিল যৌথপরিবার।
আর ছিল নবাগত আমার পিঠোপিঠি দুই ছেলে।


বড় ছেলে সবে স্কুল যেতে শিখেছে।
একদিন স্কুল থেকে এসে মাকে বলল
- মা আমাকে একটা বড় মোজা দাওতো।
ওর মা অবাক বড় মোজা কি হবে রে?
ছেলের জবাব -স্কুলে বন্ধুরা বলাবলি করছিল;
সবার বাড়িতেও নাকি সান্টা আসে।
আমি চাই আমাদের বাড়িতে ও আসুক।
সে নাকি অনেক গিফট দেয় মোজার ভেতর।
আমি বড় মোজাটা এই কারণে চাইছি।
বড় মোজাতে একটা বড় কেক দেবে সান্টা ।
কাল যে বড়দিন। যীশুর জন্মদিন।
ঠাকুমা দাদু পিসা পিসি আর বন্ধুরা
সবাই মিলে মজা করে আনন্দে কেক খাব।
এই এত্তো বড়! খুব ভালো লাগবে! তাইনা মা!
মা ছেলের কৌতূহলী চোখে চোখ রাখে।


ওর মা বাস্তব বুঝে বলে -কত বড় মোজা!
কোথায় পাবো, অত্ত বড় মোজা।
ঠিক আছে। দেবো একটা মোজা।
আমি আড়াল থেকে সবটা
শুনেছি আর ভেবেছি, কি করা যায়।
সেদিন আমিই হয়ে গিয়েছিলাম সান্টা;
রাতের অন্ধকারে সাধের কেক রেখে ছিলাম।
আমার দুই ছেলের জন্য, মানে সবার জন্য।
ওরা ঘুম থেকে উঠেই যখন উপহার দেখলো
একরাশ খুশির রোদ্দুরে বাড়ি এক্কেবারে ঝলমলে।
বুকের ভেতরটা কেমন করে উঠল l
ভাবলাম, কেকটা আরও একটু বড় হলে
নিশ্চয় আরও আনন্দ বেড়ে যেত।  
অনুভুতিতে আর একটা আবেগের দুরন্ত ঝড় !
বুঝলাম, সবার ভিতরেই একটা সান্টা লুকিয়ে থাকে,
সাধ আর সাধ্য মেটাবার জন্য।