আজ মা'র মন ভালো নেই
খুব সকালে ঘুম ভাঙেনি,করা হয়নি নাস্তার আয়োজন,
মেটেনি কারও ক্ষুদা,পেটে পিত্তি পরে অবস্থা ।
হাস-মুরগীর ঘরের দরজাটাও খোলা হয়নি
প্যাকপ্যাক ডাকে বাইরে বের হওয়ার জন্য সব হা-হুতাশ করছে।
যে ভিখারি প্রতিদিন ভিক্ষার জন্য দুয়ারে দাঁড়িয়ে থাকত,
মায়ের হাতের ভিক্ষা পেয়ে যে তার দিনের শুরু করত,
সে আজ খালি হাতে ফিরে গেছে!


আজ আমার মায়ের মন ভালো নেই তাই
বাগানে ফুল ফুটেনি,
কিছু ফুল কলি থেকেই ঝরে পরেছে!
কিছু ফুল তার সুগন্ধ ছড়ায়নি,
বাতাসে মিলায়নি তার মাতাল করা ঘ্রাণ।
পূজার আয়োজন হয়নি,বাজেনি কাঁসা,শঙ্খ,ঘন্টা।
ধূপের গন্ধ ছড়িয়ে পরেনি চারিদিকে
দেব দেবতারাও আজ অভুক্ত, না খেতে পেয়ে!


আমার মায়ের আজ মন খারাপ তাই
বাবার গায়ে আজ ঘামের গন্ধ ভরা শার্ট,
এখনও বাসার সামনে জল ঢালা হয়নি,
শুকনো ধুলা এসে সারা ঘর অন্ধকার,
ভাই আজ না খেয়েই স্কুলে চলে গেছে,
আমি এখনও বিছানায় অর্ধঘুমে,
কেউ কানের কাছে আজ চিৎকার করেনি, কিরে?
আর কত কুম্ভকর্ণ? বারটা বেজেছে দুঘণ্টা আগেই!


ঠাম্মা কে গরম পানি করে দেয়া হয়নি
মার মন ভালো নেই বলে,
ঠান্ডা পানি দাঁতে লাগলে বড্ড সুরসুরি হয়,
গুল দিয়ে দাঁত মেজে সেই সকাল থেকে বসে আছে
বৌ উঠে গরম পানি দিবে এই আশায়।
রান্না ঘর পুরো ফাঁক, টুংটাং শব্দহীন নিথর নীরবতা জানান দিচ্ছে
তাদেরও আজ মন খারাপ, মার মন ভালো নেই বলে!


আমার মা!
যার মন খারাপ না শরীর খারাপ আমরা বুঝিনা !
যার মন বা শরীর খারাপ হলে থেমে যায় ঘড়ি !
বন্ধ হয়ে যায় সব,জগত থমকে যায়।
আমার মা!
বাড়ি ঘর, পুরো পাড়াটা আর আমাদের পুরো পৃথিবী !
সব নিয়ম, আইন,আয়োজনের চালকের আসনে আর-
মায়ের একটু অনুপস্থিতি বুঝিয়ে দেয়-
অতি অপরিহার্য আমার মা!



(মা শব্দটা এমন যে আলাদা করে অপরিহার্য বলার প্রয়োজন নেই, শুধুমাত্র কবিতার বিষয়বস্তু আলাদা ভাবে বুঝার জন্য অপরিহার্য কথাটা বন্ধনী তে ব্যাবহার করা হয়েছে। কবিতার মূল নাম "মা" ই হবে। ধন্যবাদ কবিতা টি পড়ার জন্য।)