মায়ের কথা লিখতে গেলে, ফুরিয়ে যাবে খাতা।
                         তবুও মায়ের সকল কথা, যাবে নাকো গাঁথা।
মাগো আমি দস্যি ছেলে, তোমার সেই যৌবনে।
                         লুকিয়ে যেতেম তোমার ডাকে, জংলা’গাছের বনে।
সূয্যি ঠাকুর ডুবতো যখন, খেলার মাঠের শেষে।
                         বাড়ি ফেরা তোমার ভয়ে, সবার আগে হেসে।
পড়া ফেলে সাঁতার কাটি, রূপসা নদীর ঘাটে।
                         রাগের চোখে দুধেভাতে, ঠেসতে আমার পেটে।
বাবার ভয়ে পড়ার ছলে, ঘুমিয়ে যেতাম কোণে।
                         স্নেহের হাতে জাগিয়ে দিতে, জানল না কেউ জনে।
শীতের রাত্রে লেপটা ফেলে, উদলা গায়ে কাঁপি।
                         রাখতে স্নেহে ঘুমের ছেলে, লেপের ভিতর ঢাকি।
রবিঠাকুর ছড়া, যখন তোমার মুখে শুনি।
                         বীরপুরুষটি সেজে তোমায়, খেলার ছলে টানি।
দুহাত দিয়ে চুমো খেয়ে,  জড়িয়ে আমায় কোলে।
                         বাল্যকালের সাথী সেজে খেলায় স্নেহের ছলে।
বলতে সে’দিন, ভাগ্যে  খোকা, সঙ্গে’ছিল বলে।
                         বলতে হেসে, তা না হলে, যেতেম অস্তাচলে।
কবে যেন বড় হলেম, তোমার পাছে’পাছে?
                         সে দিনটা মা ভাল ছিল, ছিলেম তোমার কাছে।
দুখের দিনে আজকে যখন, কান্না ঝরা চোখে।
                         পাই না মাগো তোমার স্নেহ, অভাগা এই লোকে।
ছবি আছে ছেড়ে গেছো,  শূন্য ঘর, মা নাই।
                         তোমার ছোঁয়া স্পর্শ আমি, অন্তরে টের পাই!
তুলসী’বেদী নয়নতারা, নিমের তলার নীচে।
                         তোমার স্মৃতি লুকিয়ে আছে, এই ঘরেরই পিছে।