থাকা আর না থাকা, দুটো কি ভীষণই আলাদা?
দুটো শরীরের মিলন – সেই শক্তি, প্রস্ফুটিত হয় ফুল,
ঘিরে আসে কাল্পনিক শরৎকাল সেই ফুলের হাত ধরে – এর বেশি কিছু নয়,
আর আমারা ভাবি বুঝি জীবন শুরু হল নতুন করে, আবার।
অর্ধেক দুনিয়ায় কত কিই না ঘটছে :আগ্নেয়গিরির
বিস্ফোরণ, শুকিয়ে যাচ্ছে নদীর জল,
ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে রাজদ্রোহী, ধর্ষক বেরিয়ে পড়ছে রাস্তায়,
অকারনে গুলি খাচ্ছে বকের দল, পেখম মেলা ময়ূর।
সেই গুলির বর্ষা পেরিয়ে আমি চলি, তোমার সাথে একটা রাত কাটাব বলে।
কত জেগে-থাকা রাত মিশিয়েছি সকালে,
কত মানুষ আমাতে মিশে গেছে, আমিও মিশেছি কত মানুষের সাথে,
শুধু তোমার সাথে একটা রাত কাটাব বলে।
কতবার ভুল পথে নিয়ে গেছে প্রজাপতির দল,
ভুল করে গেয়ে ফেলেছি শরতের গান,
একটা ছোট্ট গ্রাম, অনেকটা এই গ্রামটার মতই।
কিন্তু সব কিছুই কেমন অচেনা লাগে, বেমানান লাগে আমার কাছে,
তোমার সাথে একটা রাত কাটিয়েছি বলে।



উপরের কবিতাটা কবি য়ু জিউহুয়া (৩৮) এই রচনা। য়ু জিউহুয়া চীন দেশের হুবেই প্রদেশের হেংডিয়ান গ্রামে বসবাস করেন। উপরিউক্ত কবিতাটি রচনা করে উনি রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে যান। চীনে কবিতার সাইট ‘অয়াইবু’ তে ওনার ফলয়ার বেড়ে যায় ২০০ থেকে ১২০০০। বিখ্যাত চীনা সাহিত্য সমালোচক ওনার তুলনা করেছেন বিখ্যাত আমেরিকান কবি এমিলি ডিক্সনের সাথে। যদিও য়ু জিউহুয়া কোনদিন এমিলি ডিক্সনের নাম শোনেননি। আজ উনি প্রচণ্ড জনপ্রিয়তা পেয়েছেন ঠিকই কিন্তু ওনার জীবন খুব একটা সুখকর নয়। জন্মের পর ওনার সেরিব্রাল পলসি হয়, যার কারনে ওনার মস্তিষ্কে অক্সিজেন চলাচলে বাধা সৃষ্টি হয়। ওনার সেরিব্রাল নার্ভ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ওনার চলাফেরা করতে, কথা বলতে বেশ অসুবিধে হয়। এই অসুস্থতার কারনে উনি উচ্চশিক্ষায় সুযোগ পেতে ব্যর্থ হন। মাত্র উনিশ বছর বয়সে বিবাহ করলেও ওনার বিবাহিত জীবনও সুখের হয়নি।  বর্তমানে উনি ওনার পিতা মাতার সাথেই বসবাস করেন, ক্ষেতে সামান্য কাজ করেন আর শহরে শহরে ঘুরে চাকরি খুঁজে বেড়ান। এছাড়া সময় পেলেই উনি কাঁপা হাতে লিখে ফেলেন এক একটা অসামান্য কবিতা। আজ ওনার একটি ২০০০ পাতার কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।