নয় নম্বর সেক্টর শামনগর,
সে রাতে সহযোদ্ধারা সবাই ঘুমিয়ে
বহুদিন পর আজ খানিকটা খেয়েছেন যোদ্ধারা;
ইলিয়াস দা একটুকরো মাছ হাতে
শোকার্ত চোখে বলে,
"নদীতে এই মাছ দেশের মানুষের লাশ
খুঁটে খুঁটে খেয়েছে! এ আমার পেটে যাবেনা
খাজা সাহেব তবু জোর করে খাইয়ে দিলেন।


রাত তিনটা,বৈরী বাতাস
রোয়াকে নির্ঘুম ইলিয়াস দা, দেখেন ঝোপের পরে-
হ্যান্ডল্যাম্প হাতে সশস্ত্র হানাদার এগোয়
আধারে অজস্র নেকরের চোখ যেন;
দ্রুত ক্যাম্প খালি করিয়ে
অবধারিত মৃত্যুর মুখে তিনি,
একাই চার যোদ্ধা নিয়ে ঝাপিয়ে পরলেন


মরটার শেল হাতে ইলিয়াস দা,নিশানা প্রস্তুত ট্রিগারে
ঝোপের পরে হায়ানা...
থ্রি নট থ্রি-তে গুলি, গ্রেনেড!
ভোর হয় হয়- গা ঘেষে শুয়ে আছে সহযোদ্ধাদের
মেঘের মতো শীতল লাশ,ওরা! ওরা কথা বলেনা আর
হঠাৎ বরকত বলল,"স্যার আর গুলি নাই"
ইলিয়াস দা মৃত-সহযোদ্ধাদের অবশিষ্ট গুলি গুলো আন্তে বললেন।


সালফার পটাসের হু-হু বাতাস, সম্মুখ সমর,
ভোরের লাল সূর্যকে আড়াল করে পেছনে রাজাকার দল-
"জয় বাংলা" স্লোগানে বিভ্রান্তি ছড়ায়,
বরকতও সৃর্যাস্তের মতো নিভে গেল,
ইলিয়াস দা বুঝে গেলেন সময় খুব কম!
এ মানুষটি মাথা নোয়াবার নয়- শিখেনি আত্মসমর্পণ
দ্রুত মাথা তুলে দাঁড়ালেন- জেদি নিশানায় মারলেন
একঝাঁক হায়ানা। ফজরের আযান কানে ভেসে এলো
মেয়ের জন্য লাল পিরান কিনা হলোনা অথচ
সন্ধার আকাশের মতো বুক ভিজে লাল হয়ে গেছে!


রোজ ভোরে এখনো আকাশের পূর্ব কোন কাঁদে
অথচ আমরা ভুলে যাই তার আত্মত্যাগ,-
আত্মবলিদান, রক্তে ভেজা শার্ট, বুলেটের খোসা,
সাহসী বুকের গুলির ক্ষত দাগ!
"বাবা.....তোমার পায়ের শব্দেই বুক ভরে উঠতো
লাল পিরান নিয়ে আমার কোন অভিমান নেই!"
                           ................২৮/৮/২০১৫