আগুন আলো কিরণ দেখলে আমার কেমন জানি লাগে!
কেমন অব্যক্ত যন্ত্রণার কোলে ঢলে পড়ে আমার সমগ্র!
কেমন নির্ভেজাল বিষাদ ভোগ করি মনে প্রাণে!
ইচ্ছে করেই অগ্নি-বাতাস ডেকে আনি কলিজার তলে,
মনের ভেতর আটকে থাকা বেদনার শেলটাও ;
নড়তে থাকে আলোর বাষ্পে!
এক মৃদু ব্যথায় আমি কেঁপেকেঁপে উঠি,
অনুভবে জেগে ওঠে অজানা শিহরণ,
আমি তখন তোমার দৃষ্টির সুঘ্রাণ পাই।
তোমার জন্যে ক্রমেই আরো ব্যঘ্র হয়ে ওঠে;
আমার সারাটা,
আমি খুটেখু্টে আরও আরও বিষাদ জাগাই!
হৃদয়ের চারদেয়ালে আঠার মত তোমাকে কেমন লেপ্টে থাকতে দেখি!
আমি অবচেতনে তোমাকে ছুঁতে চাই।
একটু পরেই ব্যথাগুলো ক্লান্ত হয়, ঝড় শিহরণ থেমে যায়,
তোমাকে ছোঁয়া হয় না কোনোভাবেই
ক্রমেক্রমে আমি শ্রান্ত হই---
তোমার দৃষ্টির করুণায়! হাসির অবহেলায়।
স্বপ্নের বধ্যভূমি
-------আজগর আলী
রচনাকাল ০৪-০২-২০১৮খ্রিঃ
ক্ষুধিতের নিঃশ্বাসে কেঁপেকেঁপে উঠে নগরীর ফটক
গন্ধ বিভ্রাটে পড়েছে বুঝি কুকুরের দল
শহুরে ধুলয়া নাচে প্রাচীন পাতক
আকাশের গা বেয়ে ধেয়ে আসে আগুনে মেঘ
ভুজঙ্গের মত ফণা তুলে আছে পোড়া মাটি
হাজারো স্বপ্নের বধ্যভূমি রচিত হবে এই শহরে
প্রেমের কবিতা
--------আজগর আলী
রচনাকাল: অজ্ঞাত
ঈদানিং প্রিয় লোকেরা বলাবলি করে
আমি নাকি প্রেমের কবিতা লিখি না--
প্রেম মানে নারী!
প্রেম মানেই নারী পুরুষের প্রণয়!
অন্তরঙ্গতা, নারীতে পুরুষে!
পাঠকের চোখে ভেসে উঠে
প্রণয়াসক্তির সীমানাহীন চারণভূমি!
মিলন বিরহ পরিণয়!
প্রতারণা-বিষাদ বিরহ-যন্ত্রণা,
কিছুই বাদ যায় না।
মনে বাসনা জাগে
অমৃত শুধার অফুরান নেশা-
পেয়ে বসে আসক্তকুলে
সফলতা ব্যর্থতার মানদণ্ডে
কেউ পরাজিত হয়!
কেউ জিতেও হেরে যায়!
পরাজয়ের গ্লানি কেউ-
বয়ে বেড়ায় জীবনতক
আবার কেউ!
অকালে জীবন থেকে
ছুটি নেয়--------
উপন্যাস রচিত হয়
মহাকাব্যের মঞ্চায়ন!
পূর্ণ দৈর্ঘের ইতিহাসগাথা
লাইলি-মজনু,শিরি-ফরহাদ
তাজমহল ঠাঁয় দাড়িয়ে
উপহার প্রিয়তমা প্রেমাষ্পদ!
আমি প্রেমের কবিতা লিখবো!
আমার প্রিয়তমা বড্ড ক্ষেপে গেলেন
বললেনঃ
এসব যার তার কম্ম নয় বাপু
ধর্মান্ধতাই তোমার পাট্টা পুঁজি!
প্রেমের কবিতা!!!!
এসব লেখার জন্য যোগ্যতা চাই!
যে সে এসব লিখতে পারে না,
তুমিতো নয়'ই।।
আমিও ভাবি তাহাই হবে হয়তো
সব কম্ম সবে পারবে তাতো নই!
তাছাড়া প্রেম মানে আমি যা বুঝি
তা খুব দূর্বোধ্য প্রথা বিরুদ্ধ!
চৈত্রের ঠা ঠা দূপুরে
ফেটে চৌচির হওয়া জমিনভূমি
উন্মুখ থাকে মেঘমালা পানে
ডাকে আর ডাকে
প্রবল আহবানে------
সিক্ত করতে তপ্ত দেহপ্রাণে
মেঘপুঞ্জ ছেড়ে নিজ কুঞ্জ
ঝরে আপন মনে ঝরে--
অবিরত ধারায়
ট্রেডিশনাল কবিরা
একে মেঘের কান্না বলে।
মেলা কবিতা রচে---
আমি আনাড়ি কবি এতে প্রেম দেখি
সীমানার বাইরেরও গভীর প্রেম!
জলকাদার প্রেমালিঙ্গন!
এ যে কেমন?
প্রথাগত প্রেমবাজরা তার কী বুঝবে!
প্রণয় থেকে পরিণয়
কোনটা নেই তাতে?
প্রেমাষ্পদে ভালোবাসার নিদর্শন!
অঙ্কুরোদগোমিত বীজদানায়-
আমি চাক্ষুস দেখতে পাই।।
অন্ধদের কথা কে বলে!
শুধু তোমাকেই প্রয়োজন
---আজগর আলী
রচনাকাল ১৪/১২/২০১৭খ্রীঃ
আবেগের কড়াটা নড়ে উঠে হঠাৎ!
চাপাদেয়া স্মৃতিরা ভষ্মের মতন জ্বলে!
সিটকিনি খুলে দেয় ব্যথার দুয়ার,
ছুটির ঘন্টার মত হৃৎপিণ্ড নড়ে
সূক্ষ ব্যথায় কোঁকিয়ে ওঠে সারাটি কেমন!
ফেরারি রক্তকণিকাগুলো মৃত্যুর লোভে ছুটোছুটি করে।
একফোঁটা শিশির পড়ে;
টিনের চালা গলে ধুলোজমা তানপুরার উপরে ;
দূরের বেহালায় বেজে উঠে বেহাগের সুর
আহা রে মোজার্ট আহা বিথোফেন!
শিরা উপশিরায় জেগে ওঠে; কনকনে সুখের কাঁপন।
এখানে কোনো উৎসব নেই আজ;
তবুও চলছে নানান আয়োজন,
শুধু চিৎকার করে বলতে পারে না নির্বাক নিউরন!
আজ হৃদয়ের জনপদে শুধু তোমাকেই প্রয়োজন।
মুলা চুরি ও মূলে চুরি
------আজগর আলী
রচনাকাল ১০-০২-২০১৮খ্রিঃ
শহরের আনাচে কানাচে আজ
একটি খবর বেশ রটেছে
মুলা চুরির অপরাধে একটি খরগোশের
নাকি ফাঁসি হয়েছে!
এদিকে হাজারো মুরগি জ্যান্ত সাবাড় করেও;
পশুদের রাজা সেজে
বহাল তবিয়তেই আছেন ধূর্ত শেয়াল!
তাই,
মুলা চুরির ফাঁসি হয় না
কথাটি আর প্রযোজ্য নয় এখানে
বরং মূলে চুরির ফাঁসিতো হয়ই না
উল্টো রাজ মুকুট জোটে কপালে
কথাটিই; বেশ মানানসই।