১) কবিতার মূল
স্বার্থপর মন খোঁজে কবিতার মূল,
নিরর্থক শব্দের ব্যবচ্ছেদ করে;
অনর্থক বিষাদ উঠে কাঁচির আঁচড়ে।
২) তৃষ্ণা
মরুর বুকে চলি আমি মুসাফির
বালুঝড়ে উড়ে যায় স্বপ্ন আহা
তৃষ্ণায় পান করি দুচোখের জল।
৩) দুস্তর পথ
দুস্তর হয়ে যায় চলার পথ
হঠাৎ মৃত আমি হঠাৎ সম্বিৎ
অজানা ঠিকানা; কেউ তা জানে না।
৪) নীর ঝড়
স্নেহমাখা নীড় ফেলে আমি বহুদূরে
দুচোখ ছেয়ে যায় বিষাদের নীলে
নীর ঝড়ে স্থির হই গোধূলী বিকেলে।
৫) আঁধারের দিন
এখানে থেকে থেকে অথৈ আঁধার
বেদনা ঢেলে যায় কোন সে আধার
কাঠের পোকা গায় বিষাদ করুণ।
৬) মরা গোলাপ
এখানে জমে থাকে নিবিড় আঁধার
বেদনা গড়ে তুলে বিষাদ পাহাড়
চোখের কোণায় ফোটে মরা গোলাপ।
৭) সবই এক
মনোক্ষেতে হয় শুধু বিষাদের চাষ,
বিষাদ শুনিয়ে যায় বিকেলবাতাস;
সবইতো এক, হায় সবইতো এক।
৮) অহিনকুল
আঁধারের কোলে ফুটে বেদনার ফুল,
বিষাদজোয়ারে ভাসে হৃদয় দুকুল ;
সুখ অসুখ যেন অহিনকুল।
৯) বিধাতা বিমূখ
একসাথে বহে যায় সুখ ও অসুখ,
সুখের খাঁচায় ঢুকে বিরল অসুখ;
বিধাতা বিমূখ হলে, বিধাতা বিমূখ।
১০) আধাঁরের ঋণ।
আলেয়া বয়ে যায় আঁধারের ঋণ,
হয় না দেখা তাদের কভু কোন দিন ;
ঋণের বোঝায় হয় আলেয়ারা ক্ষীণ।
১১) মানুষ মানুষ হয়
মানুষ মানুষ হয় কেবলই তখন,
মানুষ মানুষ খোঁজে কেবল যখন
এর আগে নয়, মন এর আগে নয়।
১২) ঋণের শোধ।
দুপুরের বনে ফোটে বিকেলের ফুল
একুলের ঋণ বহে নদীর ওকুল
হয় না ঋণ শোধ কভু কোন দিন।
১৩) সুখের অসুখ
সুখেরা বিলি কাটে কাশেদের মাথায়
হৈমন্তী শোক করে বিরহের ব্যথায়
সুখের অসুখ হলো, সুখের অসুখ।
১৪) নীলাভ আগুন
হলুদের খামে ভরা নীলেদের মন,
নীলেরা পোড়ায় শুধু হলুদের বন;
নীলাভ আগুনে জ্বলে হলুদের মন।
১৫) বিষাদ আগুন।
মরুঝড়ে উড়ে যায় আমাদের মন
মনের বনে জ্বলে বিষাদ দ্বিগুন
ঝড় থামলেও নেভে না আগুন।
১৬) সুখের জাহাজ
ডালপালা কেটে যায় কাঠুরে মন
ভাঙনের সুর বাজে কেমন করুণ
বাজারের হাটে ভিড়ে সুখের জাহাজ।
১৭) এইসব ক্ষত
হৃদয়ের ক্ষতে মাখা বিষাদ প্রলেপ,
ক্ষতেরা লুকায় নাতো বিষাদের তলে;
এইসব ক্ষতেরা জ্বলে দিগুন হোমানলে।
১৮) ক্ষণিক সুখ
হৃদয়ের কার্ণিশ বেয়ে বিষাদের জল নামে,
বিষাদ প্রপাত গড়ে নামে বেনামে;
পর্যটনশূণ্য মনে নোঙর ফেলে ক্ষণিক সুখ
১৯) সর্পের তোপে ভাসে চাঁদ বনিকের ঘর,
প্রাণের আশে ভেলায় ভাসে লখিন্দর;
নির্বিষ সময়ও ফণা তোলে।
২০) হৃদয়ের হাহাকার
হৃদয়ের বেদিমূলে স্হায়ী নিবাস-
গড়েছে বিষাদের দল,
অস্হায়ী সুখগুলো কু্ঁকড়ে -
কুঁকড়ে ডুবে বিষাদের তল;
নৈশব্দিক হৃদয়ে শুধুই হাহাকার।
২১) সুখের মস্করা
নিষিদ্ধ কবিতাগুলো বাজে নৈশব্দের সুরে,
ডাণ্ডাবেড়ি পরা মন লুকায় বিষাদস্তুপে;
সুখেদের তাচ্ছিল্যের হাসি বাজে বহুদূরে।
২২) স্বপ্ন ভঙ্গের আওয়াজ
কাঠঠোকরায় খায় মগজের ঘূণ
স্বপ্নেরা ভেঙে পড়ে ধপাস ধপাস
জোয়ারের ছলাৎ শব্দে ভেঙে যায় ঘুম।
২৩) কাবুলিওয়ালা
সময়ের সুদ গুনে কাবুলিওয়ালা মন,
অসময়ে শোধ চায় আসল যখন;
খেলাপি মন গায় ফেরারি গান।
২৪) কোথায় হারাই
বিষাদমন খোঁজে গহীনের বন
হিজলের বনে জ্বলে নিবিড় আগুন
কোনখানে যাই,কোথা যে হারাই???
২৫) জীবন
জীবন লেগে আছে সূক্ষ আঠায়,
ঝরে যেতে পারে সে হাল্কা খোঁচায়;
তবুও পাড়ি দেয় দুরন্ত ঝড়।
২৬) সিঁধেল ইঁদুর
সিঁধেল ইঁদুর কাটে বালির বাঁধ,
বুঝে না এ কেবল মৃত্যুর ফাঁদ!
জলঘোলা জীবন যায় এভাবেই।
২৮) গিরগিটি জীবন
গিরগিটি জীবনের তল্পী বহন
জীবনের সুখ দুখ কেবলই এমন
সকাল সতেজ বিকেল ধূসর কেমন??
২৯) হৃদয়ের বোবাকান্না
বিবেকের দংশনে আহত যে জন,
সে জন পোহাতে হয় করুণ জীবন;
হৃদয়ে বোবাকান্না রক্তক্ষরণ।
৩০) বাংলা কবিতা
আমাদের রোজনামচা অভাবের দখলে,
দিবস কেটে যায় ক্ষুধার ধকলে ।
সামর্থহীনের আশার আলো বাংলা কবিতা;
রাতে কবিতা লিখে ছাপাই সকালে।
৩১) সমুদ্র নৈশব্দ।
শব্দের তুমুল কোলাহলেও নৈশব্দের খেলা চলে!
ছলাৎ ছলাৎ সমুদ্র সফেন আঁচড়ে পড়ে কূলে
সশব্দেও সমুদ্র কেবল নৈশব্দের কথা বলে।
৩২) নৈশব্দের গান
ঝিঝিপোকাদের নৈশ মিছিলে কান পাতি!
সীমাহীন আলোর দাবিতে উদ্বেল স্লোগান ধ্বনি;
কিছুই বুঝি না! কেবল নৈশব্দের গান শুনি।
৩৩) বেনিয়া মন
বেনিয়া মন খোঁজে কেমন আপন!
সম্পর্কের লাভক্ষতির বিরল বুনন!
যোগ বিয়োগ গননা, গুন ভাগের মাতম।
৩৪) অন্তরাল
এ মন লুকাতে চায় কোন অন্তরালে,
পোক্ত দেয়াল উঠে হৃদয়ের আলে ;
নিজেই চরাই মনে শত্রুর পাল।
------------------------------