হও প্রকৃতির মত
          ----আজগর আলী


এই বিপর্যস্ত বসুধায় আমিতো বলি
প্রকৃতির তেমন কোনো দায় নেই,
ওরাতো ধর্মের নামে শুধুই গালগল্প
আর কেচ্ছা শুধায় বেহুদাই।


নিয়ত বৃক্ষমূলে কুঠারাঘাত-
করে সুমিষ্ট ফল চায়!
বিক্ষত বৃক্ষে ফল নয় রক্ত ঝরে
যখন, তখন প্রকৃতির আর কী দায়?


একসের দুগ্ধের তরে গবাধি
পশুটার কত যত্নাত্তি করে!
কী করি আমরা এই যে মহান
ত্রাতা, দাতা প্রকৃতির তরে?


একহাজার ফিট উঁচু পর্বতশৃঙ্গ -
থেকে লাফিয়ে বাঁচতে চায়!
মৃত্যুর উঠোনে হেঁটে যাওয়া যাত্রীরা
মৃত্যু কী জানতে চায়!


বৈজ্ঞানিক পৃথিবীতে আবাদ,
জীবন যাপন অবৈজ্ঞানিক পন্থায়,
আবার দাবি করে নিজেরা কত্ত
আধুনিক আর বিজ্ঞানময়!


অথচ,অবিবেচক মানুষেরা  
স্বহস্তেই প্রকৃতির বারোটা বাজায়,
নিরেট অথর্ব মানুষেরা অবলীলায়
প্রকৃতির উপর দায় চাপায়!
হাঁকডাক করে সাইরেন বাজিয়ে
কয় এতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়।


প্রকৃতির উদরে থেকেই
প্রকৃতির আঁতে দিচ্ছি ঘা!
সবুজ খেয়ে বেগুনের চাষ করে
বেগুনির দায় নেবো না!


প্রকৃতি মিশে থাকে প্রতিটি-
মানুষের বিবেক আর সত্তায়,
বিবেকের কাছে পালিয়ে
বেড়ানো সুকঠিন আর বড্ড দায়।


বিবেক জাগিয়ে তুলো
সারিয়ে তুলো সত্তার ক্ষত,
প্রকৃতি তোমার হবে
আগে তুমি হও প্রকৃতির মত।


★★★★★★ ★★★★★★ ★★★★★★


বোধহীন শহর
-----আজগর আলী


বিলাসী উনুনে পুড়তে পুড়তে-
সভ্যতার মুকুট পরিহিত শহর ঢাকার
ক্রমাগতই বাড়ছে চামড়ার তাপ,


ভেতরে ভেতরে রক্ত প্রবাহ থেমে
থেমে স্তিমিত হয়ে গেছে সে,
হয়ে গেছে কেবলই নিরুত্তাপ।


রুটিনমাফিক ছুটোছুটির মেকি
বহি দৃশ্যগুলোই কেবল মনোরম,
গতিময় আর কেবল মনোহর,


ভেতরে ভেতরে আগ্রাসী দ্রব্যমূল্য
নাগরিক যন্ত্রনা আর সন্ত্রাসী যানজটে
স্হবির, নাড়ির স্পন্দনও স্থির।


স্থির সময় ভেদ করে চলছে
জীবন কোনমতে টেনেটুনে
বড্ড বেহায়া অসুখ হয়েছে নগরীর ।


এই যে মেলা মেলা কড়ি দিয়ে
সিটি কর্পোরেশন থেকে
কাড়ি কাড়ি জনদুর্ভোগ কিনে রাখে,


বিষাদ স্বাদের বোধ নাই
নিউরনেরও হয়েছে লয়,বোধহীন নগরী;
পৌষে কাতুকুতু দিলে হাসে বৈশাখে।


তবুও,এইসব নির্জীব সময়
ছেদ করে কিছুকিছু বোধ জমা হয়
শহরতলীর বস্তিতে,


সেখানে কিছুটা প্রাণের স্পন্দন,  
কল-কোলাহল রোল শোনা যায়-
মনে হয়, রয়েছে কিছুটা স্বস্তিতে।


সবমিলে, এই যে শহর, উপরে যতই চঞ্চল!
চপল খোলসের আড়ালে বরফের মত জমে গেছে,


বলা চলে, ইনটেনসিভ কেয়ারের জটিল রোগীর মত
লাইফ সাপোর্টে কোনোমতে বেঁচে আছে।