১) জেগে উঠি না★
---আজগর আলী
হৃদয়ের মাঝখানে নেতিয়ে পড়া
ল্যাম্পপোস্টের নিচে ঝিঝিপোকা;
আকাশ ঘাস শিশির ভোর!
কোন স্পর্শেই আমি আর জেগে উঠি না
তুমি আসনা।
২) নিঃস্ব হচ্ছি★
---আজগর আলী
অ্যান্ড্রয়েড নৃত্যে মাতাল বিশ্ব,
ভার্চুয়াল স্নেহ,প্রেম-ভালোবাসা, দুঃখ,
আমি ক্রমেই হচ্ছি কেবলই নিঃস্ব।
৩) রক্তিম স্রোত★
--- আজগর আলী
সন্ত্রস্ত মন আমার কলিঙ্গ সৈনিক,
তোমাতে হারাতে গিয়েও ফিরে আসে;
তুমি দায়া নদীর রক্তিম স্রোত।
৪) কামলাজীবন ★
---আজগর আলী
ভাষণে ভূষণে টইটম্বুর চেতনা
বাস্তবিক নৈরাশ্যে হতাশার বীজ
কামলাজীবন ব্যর্থতার শেষ ঠিকানা।
৫) পশুপ্রেম★
---আজগর আলী
পশুপ্রেমে সমুজ্জ্বোল মানবতা
ধিকৃত মানবজনম অসহায় হাহাকার
ঠিকানা তার বেলোয়ারি স্বপ্নভাগাড়।
৬) সঠিক সুর★
-----আজগর আলী
মননশীল উনুনে জ্বলন্ত সমালোচনা
সুকঠিন সত্যের দেয়াল সীমানা;
দূরের মুসাফির; বেসুরো গানে সঠিক সুর।
৭) পরিয়াজি মন★
-----আজগর আলী
ধর্মনিরপেক্ষ মনে কামুক হায়েনা!
স্বপ্নরা মানে না ধর্মের সীমানা;
চীনের দেয়াল ভাঙে পরিয়াজি মন।
৮) জটিল রসায়ন★
-----আজগর আলী
ক্ষুদিরাম স্বপ্নে মিশে সূর্যসেন মন
ভাবুক মন খোঁজে মাতাল সমীরণ
দুয়ে তিনে মিলে হয় জটিল রসায়ন।
৯) বর্ধিষ্ণু পাহাড়★
----- আজগর আলী
নির্ঘুমরাত শেষে ভোরের প্রহর,
দ্বিপ্রহর রাতের দেনা মিটলো না আর
বেদনার ক্ষয় নেই, বর্ধিষ্ণু পাহাড়।
১০) কৃষাণীর মন★
---আজগর আলী
হৈমন্তীর খোঁপায় বাঁধা কামিনীর বন
ধানের ক্ষেতে আসে প্রাণের জোয়ার
কৃষকেরা হেসে দেখে কৃষাণীর মন ।
১১) ভোরের হাসি★
----- আজগর আলী
কাঁচের দেয়ালঘেরা ব্যথার পাহাড়
সুখেরা খুঁজেফিরে ঠিকানা ব্যথার
হঠাৎ সশব্দে হাসে নিথর ভোর।
১২) সুখ লুট ★
-----আজগর আলী
খাসের জমিতে ফুটে ঘন কাশের বন,
সরকারী মন করে সুখে আনচান;
সুখ লুটে পালায় দেখ সোনামিয়াচাঁন।
১৩) ভণ্ড মানবতা★
-------আজগর আলী
রাতের নিতম্বে দেখি হায়েনার দাঁত।
কেলিয়ে হাসে আজ বেহায়া সভ্যতা;
নীলাভ বাতিতে জ্বলে ভণ্ড মানবতা।
১৪) মূল্যহ্রাস ★
------আজগর আলী
গণতন্ত্রের ফেরি করে স্বৈরাচারী মন,
রাজতন্ত্রে বাঁধা আজ সুখের জীবন;
ক্রমেই কমে যায় মানুষের দাম।
১৫) খোঁজ★
----আজগর আলী
অক্ষম সময়ের সক্ষম ঘা
ক্ষমতাও আজ শুধু ব্যবসাবান্ধব
প্রেমিক মন খু্ঁজে সঠিক বান্ধব।
১৬) সভ্যতার পথ।★
আজগর আলী
চেঙ্গিস সময় আজ মেলেছে ডানা,
সুবোধ সেজেছে আজ দিনের কানা;
বধিরেরা দেখায় আজ সভ্যতার পথ।
১৭) স্রষ্টার খোঁজ★
আজগর আলী
প্রার্থনাতে খুঁজি তোমায় দুপুর সকাল কিংবা রাতে,
তুমি আমায় খুঁজেফেরো ভুখা নাঙ্গার পাতা হাতে।
বোঝার ভুলে পাই না তোমায় এই হলো আজ নিয়তি;
বাস্তবতায় ঘুমাও তুমি বৃথাই খুঁজি কল্পনাতে।
১৮) মানবতার সন্ধান★
আজগর আলী
মানবতা তৈরী হয় না লেদখানা কী কারখানাতে,
খু্ঁজছে মানুষ হন্যে হয়ে পাড়া গাঁয়ে মহল্লাতে।
মানবতা ঘুমায় দ্যাখো কসাইখানার হাসপাতালে;
মরছেতো ভাই অনেক আগে হুদাই রাখছে আইসিউতে।
১৯) তন্ত্রমন্ত্র★
-----আজগর আলী
হুলোবিড়াল ছুঁচো ইঁদুর জোট বেঁধেছে ধানক্ষেতে,
মানবতা ধর্ষিতা হয় ঠাকুর মুন্সির পাটক্ষেতে।
তন্ত্রেমন্ত্রে খুঁজি বুঝি গণতন্ত্রের ঠিকানা ;
ঘুমিয়ে আছে গণতন্ত্র লাল্লু কসাইর চৌকিতে।
২০) রান্না বন্ধ★
------আজগর আলী
রূপসী এক পেঁয়াজ এসে হাত বুলালো ঘুমের ঘোরে।
ভাবলাম একি হুরপরী কী আদর করে জড়িয়ে ধরে?
ঘুম ভাঙিয়ে ভাঙা গলায় ডেকে বলে প্রিয়তমে;
শুধায় তিনি পেঁয়াজ নেইগো, রান্না দিলাম বন্ধ করে।
২১) তুমি আমি এখন★
আজগর আলী
তুমি যখন তীব্র জনকলরোলে তৃপ্ত
শব্দের মিষ্টি কবিতা বুনো,
আমি অখ্যাত শিল্পী ভয়াল তিমিরে
নৈশব্দের জলচিত্র আঁকি।
তোমাদের শহরে যখন চলে সুখের তুষারপাত,
এখানে আমি নীরবে গলেগলে পড়ি অহর্নিশ
বহে না শীতল কোন জলপ্রপাত।
আলোআঁধারির খেলায় তোমাদের শহর
রাঙ্গায় নিয়ন আলোয়,
দিকভ্রান্ত আমি,বিচ্যুতি কোণে গা ঢাকা দেই,
মুখ লুকাই ঘন কালোয়।
২২) বৈষম্যের দিনে।★
-----আজগর আলী
উদ্ভট চিন্তায় কাটে আমার দিনরাত
তোমার মনে বহে সৃষ্টিশীল জলপ্রপাত
আমি কাঁটা হয়ে বিঁধি সভ্যতার গায়ে
তুমি নিষ্কণ্টক প্রেম বিলাও সভ্যতার অশরীরী পায়ে
২৩) এলোমেলো ভাবনা
---------আজগর আলী
নৈশব্দের কোলাহল শুনবে! কান পাতো বুকে,
সুখী মানুষেরা মরে কোন অসুখে??
ইটের দেয়াল ভাঙে শুকনো কাঠ
ফকিরের চাওয়ালের নিদারুণ ঠাঁট।
আঁধারের সুখ ঐ তুচ্ছ জোনাই
বিষাদ গিলি আমি খাবারের জো নাই।
২৪) নূপুরের শোক★
আজগর আলী
চাঁদের কিরণে আজ নীলাভ ক্ষত
রাতেরা লুকাতে চায় তিমিরের বুকে
রাতের দুপুর কাঁদে নূপুরের শোকে।
২৫) ভাঙ্গে অহম ★
--আজগর আলী
ঠিকরে ঠিকরে পড়ে পেঁয়াজের রূপ,
দূরে রসুন কাঁদে ভাঙ্গে অহম;
মরিচের পায়ে আজ কাঠের খড়ম।
২৬) বিনিময়
আজগর আলী
হৃদয়ের কোণে বাজে বেদনার সুর
একসের সুখ দাও উদাস দুপুর
বিনিময়ে দেবো না হয় জলের নূপুর।
২৭) কেটে যায়
আজগর আলী।
চলে যায় বহুদূর জলের প্রপাত --
কেটে যায় এভাবেই শ'তিন রাত ;
বছর শেষ হবে বলো কদিন বাদ?
২৮) প্রাচীন গাথা
----আজগর আলী
বেহিসেবি মন খুঁজে হিসেবের খাতা,
হৃদয়ের হাহাকারে এ কোন বারতা;
সুবোধ রাতেরা শুনায় প্রাচীন গাথা।
২৯) ঘাসের ব্যথা।
-----আজগর আলী
তিন লাইন পথ যেন ফুরায় না আর,
শিশিরেরা কারণ হয় ঘাসের ব্যথার ;
এইসব খেরোখাতা কেবলই মধুর।
৩০) তিনফোঁটা রোধ
----আজগর আলী
দুধারে ফুটে উঠে একফোঁটা চাঁদ,
জেগে থাকে কাশফুল কেমন সুবোধ!
নির্বোধ রাত হয় ভুলের শিকার।