আমার নিস্তব্ধতা ভেদ করে উচ্চ চিৎকারে
ভেসে আসে কোন দুখিনী মায়ের রোল,
কৃষ্ণার প্রথম দিনেই পূর্ণ হলো ষোলকলা মোর
যেন আঁধারের ঘনত্ব বেড়ে গেল্,


শিশুদের কান্না আমার কানে আসে না কভুও
আমি রাত্রি পরেছি গণ্ডারের খোল,
বাছা তার বাঁচে না, ক্ষুধায় জুটে না অন্ন,
মায়ের কণ্ঠে তাই গগন বিদারী রোল,


বিদীর্ণ করে আমার বক্ষ পাঁজর,
যেন ভেদ করে শত শত কামানের সেল।


ধর্ষিতার আর্তচিৎকারে আমার সতীচ্ছদ ফাটে
প্রতিক্ষণে নির্জনে আমারই আঁধারে,
বোবাকান্না সারা জনমভর, কলঙ্কের ঘানি
টানিতেছি আমিও আহা রে----


ছেলেহারা মায়ের রোদনে, আমার বক্ষছেদনে
কত রক্ত ঝ'রে দেখাই কি করে!
মেঘের কান্না বৃষ্টিজল, শীতের কান্না শিশির বিন্দু,
রক্ত সিন্ধু কান্না আমার ভাসে শুধুই ইথারে।


গুম হওয়া স্বামীদের, স্ত্রীর রঙ্গীন বসন, যেন
উপহাস ছুঁড়ে মারে বিষ মাখা তীরে,
খুন হওয়া শহীদদের, বিধবা স্ত্রীর সফেদ সাজে-
লাজে মরে নিলাজ কাকও, ডাকে কর্কশ স্বরে,
হুতুম পেঁচাদের করুণ চাহনী, সকরুণ আবহে
সুর তুলে যেন বিরহী নূপুরে।


ঘরহারা বিবাগী সন্ন্যাসীদের উন্নাসি ঘোরাফেরা
ইতস্ততঃ করে আমারে,
ছিন্নমূলের ভিন্ন আনন্দের উৎযাপনে আমিও
আনমনে গাই সুরে কিবা বেসুরে।


অত্যাচারী পাপিষ্ট খুনী ধর্ষকেরা বীরদর্পে
চলে আমারই বুক চিরে যখন আবার!
বুকের ব্যথা মুখে চেপে রাখি,করিতে পারি না চিৎকার,
অবলা রাত্রি রজনী আমি,কিম্ভূতকিমাকার সেজে, নিজেকে জানাই ধিক্কার।


কৃষ্ণপক্ষের প্রতিটি দিনে আমি হই ক্রমাগত কালো
থেকে কালো ,হই গাঢ় থেকে গাঢ়---


আমি রাত্রি,ক্ষণিকের যাত্রী,আলোর অভাব মাত্র! আমার অস্তিত্ব সূর্যের অনপুস্থিতি, আমিও অসহায়,
আমার আগমনে অসহায় এই ধরিত্রী;


আমি চেয়ে চেয়ে দেখি জালিমের প্রগলভতা, কিছুই
বলিতে নারি, কিছুই করিতে নারি।