-------এলিনার নেশায়


এলিনা
তুমি আফিম ভাং নাকি চরস
কোকেন নাকি মরফিন!
যেদিন থেকে তোমার অলক্ষ্যেই
আঙুলের ডগায় তোমাকে চেখে দেখলাম
একবার
ঠিক সেদিন থেকেই বারবার
তোমাকে ছোঁয়ার নেশায়
আমার আঙুল
আমার করতল
আমার চিবুক
আমার চোখ-নাক
আমার স্কন্ধ-বাহু
আমার বুক
উন্মুখ হয়ে নির্ঘুম থাকে দিন-রাত
নির্বাক নিউরনগুলোও চিৎকার করে
উঠে অবচেতনে
নদীভাঙনের আওয়াজের মত বাজে;
ঠিক শিরা উপশিরা ধমণীর মাঝখানে


তুমি যে ভুলে জোছনার ফুল কুড়াতে
সেই যে গেলে গন্ধমের দ্বীপে ;
প্রবালের লোভে নিশিথের প্রকোপে
আর ফিরলে না। এলিনা।


খোঁজ নিলে না এ নেশাতুরের
তুমি এলে না আর
এখন আমার
প্রতিটি অঙ্গ  তুমুল তাচ্ছিল্যে
একে অন্যকে বলে
শালা উন্মাদ নেশাখোর।


     


       পলাতক কবির দায়
   


উপমা জানি না নারী শুধু ভালোবাসা শিখেছি
তাইতো কোটিকোটি মৃত্যুর দণ্ড নিয়েও
তোমার কাছেই এসেছি
এতগুলো মৃত্যুর বদলা দেওয়া যেতে পারে
যদি একটি নতুন জন্মে
বলো নারী তুমি কি বাঁচাতে পারবে
এক পলাতক জীবন
একটি জীবনের দায় নিয়ে যদি; হাজারও
জীবনের সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখা যায়
তাহলে কী নেবে সে দায়ভার! নারী
তোমার দোফসলা ভূমিতে ?


ইতিহাস ভুলেনিকো গন্ধমের দায়
নারীর প্ররোচনায় পুরুষ সবই যে হারায়
এবার ফেঁসেছো নারী
নিতে হবে এক পলাতক কবির দায়!
প্ররোচনায় সাড়া দাও যদি;  তবে
সাক্ষী থাকুক আকাশ জমিন মাটি
আমার সন্মুখে পেতে দাও তোমার জন্মসৃষ্টির ঘাঁটি।


       আল মাহমুদ-কে


হে বাংলার জীবন্ত কবিতা কবি মহান
এমন শব্দের এত এত দীর্ঘতম সেতু কি করে আপনি বুনলেন
আমি প্রতি দিনে-রাতে আপনাকে পাঠ করি
আর হিল্লোলিত হই সমুদ্রের ঢেউয়ের মত
মাঝেমাঝে প্রবল কম্পনে কেঁপে উঠি আমি
ইতিহাসবিখ্যাত ইরানি ভূকম্পনের ন্যায়!
মাঝেমাঝে আমি মূর্ছিত হই
ভেঙ্গে খানখান হয়ে যাই টুকরো কাচের মত
লাশের মত হিম হয়ে যাই
পাতার মত ভাঁজ হয়ে যাই
গর্তে লুকাই ইঁদুরের মত
এমন কারুকাজ
এমন শব্দবাজ
কবি আপনি কি করে হলেন!
পান করেছিলেন কোন অন্তহীনের দুগ্ধ?
দেখেছিলেন কি নিরবসান কোনো স্বপ্ন
দুয়ে মিলে গড়েছেন শব্দের এ কোন প্রাসাদ!
বিষাদকে লুকিয়েছেন একোন কৌশলে
চাঁদ রাত নক্ষত্রকে কি করে নামালেন এমন ভূতলে
এখন ঘুমান বুঝি সেতারার তলে
কলম চলে না বুঝি আত্মার তৃপ্তিতে
অপার দৃষ্টিতে দেখতে থাকেন বুঝি
আপনার আপন সৃষ্টিকে
আমাকে বলবেন
আপনার চোখগুলো কি দিয়ে বানানো
হে প্রাণের চাষি
চষে বেড়িয়েছে মা নারী মাটির শরীর
কোন সে ফলা দিয়ে
খুলে ফেলেছেন সুন্দরের সব সিন্ধুক
আপনাকে ঈর্ষা করে না যুগ
ঈর্ষায় ফেটে পড়ে সকল অযাচিত নিন্দুক
কেমন আঙুল 
কেমন কলম আপনার
কেমনইবা তার কালি
ধুলা আর বালি নিয়ে
শব্দের তালি দিয়ে
বিরল নৈশব্দেও বাজালেন তুমুল করতালি
আমি নাদান নিদান জানি না তাই
খালিখালি
ভুলেভালে আপনার মুখোশ ধরে টানি
ফুল ভেবে ভুল করে দেখি হাজারও ফুলের
বাগানকে লুকিয়েছেন একটি শিশিরের তলে
একফোঁটা জল দিয়ে নিরুপম উপমা বানিয়ে
ভাসান আমাকে সাত সাগরের নোনাজলে
তবুও সাঁতরাই আপনার খননকৃত হ্রদে
নিদ্রায় গেলেও আমি ভাসি আপনার সৃষ্টির জলে


আমি বুঝি না 
এমন শব্দমালাইনা আপনি বুনলেন
মাটির জঠর ভেদ করে ফলালেন একোন রত্নগুল্ম
শাল অর্জুন অশ্বত্থের গায়েও জড়ালেন
এ কোন জরির জামা