অক্ষয়, অব্যয়, অমর তব প্রণয়
তোমারে সখী গো দেখিবার মনে লয়।
আমারে করেছো  উদাস তব প্রণয় দিয়া
কেমনে ভুলিব তোমায় কাঁদে আমার আকুল হিয়া।
দিবস নিশি ভালবাসি নাহি গো অপরাধ
তোমারে সখী গো ভালবাসিয়া মরিবার বড়ই সাধ।
যতই কর হেলা মোরে বেলা অবেলা
তোমার ঐ প্রেম সায়রে ভাসায়েছি মোর ভেলা।
ঠাঁই দাও ঠাঁই দাও সখী তব প্রাণে
তব চাঁদ বদন আমাকে তোমার পানে টানে।
যবে দেখেছি তোমায় গাঁয়ের মেঠো পথে
কি শিহরণ জেগেছে মোর পরাণে সাথে সাথে।
নিশিদিন কাটে মোর তোমায় ভাবিতে সখী
না হেরিয়া চাঁদ বদন কেমনে আপনারে রাখি।
লোক লোচনের আড়াল দিয়া বেঁধেছি পরাণে মোর
তোমার তরে পাগল আমি দিবস,নিশি,ভোর।
তোমার কাজল নয়ন করুন করে চাইলে যখন
আমি অবাক বিস্ময়ে তোমা পানে চেয়েছি তখন।
আর কতকাল করব গোপন প্রবল ভালবাসা
ভালবাসি তোমায় সখী করইনা নৈরাশা।
আশার স্বপন বুনিয়া হায় কাটাই প্রতি প্রহর
আর কতকাল রাখবে গোপন অমন রুপের নহর।
তোমার ঐ নজরকাড়া নয়ন দুটি
যেন ভ্রমর কালো
ভ্রমর কালো আঁখিতে দেখেছি প্রেমের আলো।
সদ্য ফোটা পদ্ম ঠোঁট অপরূপ সৃষ্টি
আমার পানে চেয়ে সখী কেড়েছো মম দৃষ্টি।
আমার নয়ন প্রাতে
দিবস রাতে।
তোমারি ছবি ভাসে
আমার সাথে কয় গো কথা মিষ্টি মিষ্ট হেসে।
তোমার শুভ্র দশন দেখতে যেন অমূল্য মানিক,রতন
গড়েছে তোমায় বিধাতা সখী অনেক করিয়া যতন।
যতনে গড়া রতনের তরে
পরাণ খানি মোর রোদন করে।
কেহ নাহি গো জানে
জাননা সখী তুমিও কিন্তু বিধাতা কেবল জানে।
খাবার খেতে,পড়তে বসে আরও বেশি মনে পড়ে
কত যে তোমায় ভালবাসি সখী বলি তা কেমন করে?
নদীর ঘাটের,পুকুর পাড়ের দখিনা হাওয়া জুড়ে
তোমার মধুর কণ্ঠ কেবল ভেসে আসে সুরে সুরে।
তোমার আঙিনার পরে নানান ছলে যাইতে সাধ জাগে
পর ক্ষণেই লোক লোচনের ভয় সখী মনে লাগে।
আমার করুন আঁখির আরতি সখী একবার শুনে যাও
চাইনা আমি অন্য কিছু তোমার মনে ঠাঁই দাও।
না যদি পাই সখী তোমায় এই অবনী পরে
কী হেতু বাঁচব বল যেতে চাই গো মরে।
না যদি পাই দিবস রাতে একবারও তোমার দেখা
মোর বদনে ফোটে সখী করুণ মলিন রেখা।
শীতের ঐ সাত সকালে শিশির ভেজা ঘাসে
রবির আলোয় দূর্বাদলে তোমার মায়াবী মুখ ভাসে।
তোমার রুপ মাধুরী মিশে আছে
গাঁয়ের মেঠো পথের বাঁকে
দেখতে আমি তাই  ছুটে যাই শত কাজের ফাঁকে।
তোমার চলার পথে রাঙা ধুলায়
আমার মনটা সদাই লুকিয়ে রয়।
তোমার আশার আসায় পথে পথে কত প্রহর গুনি
তোমায় নিয়ে অণুক্ষণ রঙীন স্বপন বুনি।
জানিনা সখী কেমন করিয়া আপনার মন হারায়ে
তোমায় পেতে দিনে রাতে থাকি প্রিয়া দু হাত বাড়ায়ে।
অরুণ প্রাতে দোয়া মাগি
ওহে প্রিয়া তোমার লাগি।
বিধাতার ঐ দরবারে
তোমার প্রেমের বীণা বাজে সদাই আমার অন্তরে।
অন্তর মম নিরন্তর তোমার পানে ধায়
তুমি ছাড়া সখী লো বেঁচে থাকা দায়।
ঘৃণা কর যতই মোরে কর অপমান
তবুও সখী গাইবে গান আমার তনুপ্রাণ।
নিবিড় নিশি আসে সখী আসেনা নয়নে ঘুম
তোমার হাসি আমার প্রাণে কর প্রবল প্রণয় ধুম।
আগুন ঝরা ফাগুন আসে কাননে হাসে  ফুল
ফুলেরগন্ধ প্রেমানন্দে মন হয়েছে মশগুল।
দিবস নিশি নিরালায় বসি তোমারে কেবল ভাবি
সাক্ষী মোর চন্দ্র,তারা সাক্ষী গগনের রবি।
তোমায় নিয়ে লিখছে কবিতা কত শত কবি
কত শিল্পী আঁকছে তোমার চাঁদ বদনের ছবি।
আমার মনের গহন মাঝে দিন রজনী রও
বসে বসে হেসে হেসে কত কথাই কও।
আমি ঘুমের মাঝে স্বপন দেখে চমকে উঠি
কবে পাব সখী গো তোমার মনের দিঠি।
আর কতকাল তোমার আশে করব অশ্রু পাত
কেমন করে কাটাই সখী ঘুমহীন বিরহী রাত।
নয়নের তরে নয়ন চাহে মনের তরে মন
ভালবাসি দিবস নিশি তোমায় অণুক্ষণ।
চার চক্ষুর মিলন হলে শিহরণ লাগে প্রাণে
তোমার দেখা না পেলে গো মনে বিষের বিষাণ হানে।
জানি সখী জানি আমি মোরে ভালবাসো
আমার কথায় যখন তখন মিষ্টি করে হাসো।
সামনে এলো লজ্জা ভুলে বলতে ইচ্ছে করে
ভালবেসে না পেলে তোমায় যাবই আমি মরে।
বাড়ির পাশে সুরমা নদী নিরবধি বয়ে যায়
ময়ূর পঙ্খী নাও নিয়ে যাব তোমার ঘাটের বায়।
আঁচল ভরা ফুল দিব গো নিও ভালবেসে
সুবাস ভরা বকুল মালা  দেব কাজল কালো কেশে।
আমায় যদি ভালবাসো এর চেয়েও করতে পারি ঢের
ভয় লাগে সখী কেউ কোনদিন পায় না জানি টের।
হাওড় জলের হিজল ছায়ায় জুড়াব দেহখানি
জানি দেখলে কেউ গাঁয়ের মাঝে হবে জানাজানি।
তোমায় সখী বানাতে চাই আমার মনের রানী
তোমায় নিয়ে রচিব প্রিয়া অমর প্রেম কাহিনী।


রচনাকাল :১২ অগ্রহায়ণ ১৪২৩ বঙাব্দ
পাথারিয়া বাজার,দিরাই,সুনামগঞ্জ।
রাত:১১:০০ ঘটিকা।