হিজল বনের হাওয়া লেগে কলমিলতা উঠে দুলে
কী যে তার রুপের বাহার হাওড় জলের কলমিফুলে।
তরণীর তরুন মাঝি নামটি গাজী মনটা বড়ই ভালো
পাল তুলে হাল ধরেছে তার গায়ের বরণ কালো।
কালো দেহে কীসের মোহে মনটা শুধু চায়
এলোচুল উঠে দুলে হিজলের হাওয়ায়।
গাঁয়ের শ্যামবালিকার শ্যামল শোভায় মনটা উঠে নেচে
কী যে তাহার রুপের বাহার থাকতে চায় মন কাছে।
গাঁয়ের মেয়ে খোঁপায় গুজে কলমিলতার ফুল
এমনি করে রাঙায় সে তার মেঘকালো চুল।
তরনীর মাঝি তরুণীর ছবি হৃদয়ের মাঝে আঁকে
ছল করে দেখে রুপখানি তার হাওড় জলের বাঁকে বাঁকে।
মনে মনে সে বেজায় খুশি এমনি এমনি হাসে
বুঝতে পারি গাঁয়ের মেয়েকে চরম ভালবাসে।
হাওড় জলের ঢেউ  সমীরণ স্রোতে ভাঙে দুধারে
গ্রামখানি ছবির মতন দেখি তাই বারে বারে।
এখানে ওখানে ছড়ানো ছিটানো গাঁয়ের ঘরগুলি
শ্যাম রুপ বুঝি ছড়ায়ে দিয়েছে গাঁয়ের বৃক্ষ গুলি।
মাঝে মাঝে হাঁসের দল ডানা ঝাঁপটায় জলে
হাওড় জলে সুখে আর দুখে থাকে হেথা সবে মিলে।
এখানে নিতি দেখি জেলে ধরে নানান রকম মাছ
ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে শত বছর ধরে কত হিজলের গাছ।
গাংচিল তার ডানা মেলে হাওড় জলে উড়িয়া বেড়ায়
ক্ষুধায় কাতর এমনিতর শিকারের আশায়।
হিজলের পাশে জারুল ফুলের অপরুপ শোভাময়
পাশাপাশি থেকে নিশিদিন ওরা কতইনা কথাকয়।
পাশ দিয়ে দুরে চলে গেছে গাঁয়ের আঁকাবাঁকা মেঠোপথ
সেই রাঙা পথে রাঙা বধু নাড়িছে তাঁহার নাকের নথ।
ও গাংয়ের জল এগাংয়ে মিশিয়া হয়েছে জলরাশি
ঢেউয়ের তালে হাওর জলে শাপলাগুলি করিছে হাসাহাসি।
ঠিক দুপুরে যায় হাটুরে নৌকার মাঝে চড়ে
গোধূলি বেলায় আলো ছায়ার খেলায় ফিরে আবার ঘরে।


রচনাকাল :১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৩ বঙ্গাব্দ
পাথারিয়া: গাজীনগর: সুনামগঞ্জ