অহং ডুঙরির চিলকুঠুরিতে কোন ফাঁক নেই,
বাহিরের প্রভার ভেতরে প্রবেশ নিষেধ ।
সেখানের নড়বড়ে প্রাণগুলো এক একটি_  
স্বঘোষিত তারা, রক্ত মাংস চুষে খায় শ্রমিকের যারা ।
জাগতিক আলোর পিছনে বিপাক বন্ধনে জড়িয়ে_
অন্ধকারে মুখ লুকায় ।
ওরা কচুপাতা, জলের স্পর্শ সহ্য হয়না !
ওদের হৃদয় অধোতলে নেমে ভেসে থাকে  
ব্যবিলনের শূন্য উদ্যানের মত ;
হাল্কা হাওয়ার সে দোল খায় ,
ঝড়ো বাতাসে পালা বদলায় ।
হৃদয়ের কাঁধে ভর দিয়ে মনটা ও উড়ে যায়।
ধুসর মাটি ছেড়ে অনেক ওপরে ...আকাশে,
যেখান থেকে সবুজ গাছপালা ধূসর দেখায় ।
যেখান থেকে মাটির বুক হতে নির্গত উষ্মা বাষ্প,
ওপরে যেতে যেতে হিম হয়ে যায় ।
উষ্মা বাষ্পের গরম মেজাজ ধূলিকনা টেনে নিয়ে_
শীতল করে দেয়, ফিরিয়ে দেয় উৎপত্তি স্থলে ।
প্রাপ্তির প্রশান্তিতে মাকড়সার জাল সৃষ্টি হয় আত্মসাৎ মনে,
উর্ধতন পদে আসীন জাল- ফাঁদে ওরা ধরা পড়ে যায় ।
ওদের দৃষ্টি বিরূপ হয়ে আসে, মনের অনিকেতে শ্যাওলা ভাসে ।
লাল শালু কাপড়ে মোড়ানো হৃদয়ে ঘনঘোর কুয়াশার জঞ্জাল !
ঢাকা পড়ে যায় অদূরের পৃথিবীর ক্ষুদিত গহ্বর;
গৃহবলিভুক ক্লান্ত শ্রমিকের বুভুক্ষু মুমূর্ষু জীবন ।
হৃদয়ের ধূ ধূ বালুচর, মুখের সরল মিয়ামী হাসি ;
উপোসী যন্ত্রণায় কাটানো ছটফট অশ্রু ভেজানো রাত ।
রক্তের জলে চোবানো মজুরের কষ্টার্জিত অর্থ_
নিংড়ে চুষে চুষে খায় যক্ষ মানুষ ।
হাত বাড়িয়ে ছুঁয়ে ফেলে যারা মেকি আকাশ ;
মাটির সোঁদা গন্ধে উড়ে আসে দূর্গন্ধ বাতাস ।


দিনের পর দিন, রাতের পর রাত ,
এমনি করেই পেল সময় অপঘাত ;
এমনি করেই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বৃষ্টি বিন্দু সম্মিলিত হয়,
একি ছত্র-ছায়ায়, কালোমেঘের সৃষ্টি হয় ,
আকাশে ওঠে ঝড় , মোটা মোটা জলবিন্দু অঝোরে ;
তোলপাড় করে উপড়ে ফেলে বট বৃক্ষ সমাজ ।
এমনি করেই জাগে মনে বিপুল চেতনা ,
চেতনার গৃহযুদ্ধে গৃহডোরে সৃষ্টি হয় অন্তর্ঘাত,
অন্তর্ঘাতে প্রকোপ বৃদ্ধি পায় ,
প্রকোপের প্রতাপে হৃদয়ে আগুন ঝরে  ।
আগুন ছড়িয়ে পড়ে অলি গলির বাতাসে, ...মোড়ে ।
তখন কেউ বিড়ালের মেঁউ মেঁউ শব্দ করেনা ।
জাগরূক হয় স্বত্ব অধিকার ,
শুরু হয় বিক্ষোভ,আন্দোলন ,দলে দলে মিছিল ।
বেড়ালের ঘাড়ে সিংহের কেশর গজে ওঠে _
প্রত্যেকের ঘাড়ে ।
হুঙ্কারে নিনাদে খসে পড়ে মেকি তারা ।
ছিনিয়ে নেয় কবলিত অধিকার, বাঁচার স্বাধিকার ।
তারপর রচিত হয় মে দিবসের ইতিহাস ।


বাবুল আচার্যী  04/05/2017