শুরু হলো আর এক জীবন
যখন বাত্সল্য ভরা আমার দুরন্ত কন্যে
রেখে যায় চুপ করে রাতের চাদরের তলে পর্যাপ্ত সঞ্জীবনী ঘুম
আর
ঘরের খাঁচার গহীনে সহজ সরল আদুরে রোদ্দুরের মোহিনী ধুম ।
  
হঠাত আমার দুহাত ঝাঁকিয়ে  আমার বুকের উপর ঝাঁপিয়ে
ডেকে বলে বাবা ওঠো ; দেখো আজ ধরেছে সকাল ভোরের ডোবায়
সারি সারি সূর্যের সলতে পোড়া  নিপাট সাদা জোড় খোলা শোভায় ।
চলো আসি শিশিরে পা ভিজিয়ে  
ঘাসের সবুজে সারা গা জিরিয়ে
আজ সময় ধরে দেখবো সূর্য উদয়
সাত রং উথলে আকাশ মাটির হৃদয় ।

আগুনের লহমায়
আমার বার্ধক্য   বন্দী খাঁচায় হোমবর্ণ
দেখি কন্যের চোখের কাজলে বহুবর্ণ
এক ছোট্ট কবিতা ঠিক যেন বর্ণময় ফেলে আসা স্বাধীন  
ভিটেমাটির মতো
জীবনলাগা পৃথিবী মাঠ মোড়া শব্দঘাস গুলো মোলায়াম
দুর্বার মতো ।
ফুলতোলা কন্যা  ভোরবেলা একলা ঘরে  চন্দন সজল
মায়ের মতো ।
জিয়ানো কুসুম দিন সূর্য ঢালা মখমলি আকাশ সমতল
শয্যার মতো
আলোয় জড়িয়ে জন্মভূমি হালকা হাওয়া নদীর ডাঙায়
ফসলের মতো ।

অন্ধকার ভেঙে
বাপ মেয়ে আজ ডুব দিলাম  গা ভর্তি শীতল জলে
মাছের মতো জলের ভেতর আল্হাদী বৃষ্টিতে ঢলে
মর্মে মর্মে শান্তির প্রান্তর জুড়ে কন্যের   অবাধ স্পর্শ
যেন
আমার মায়ের গর্ভ ধরে আছে আমার জননী কন্যে
প্রদীপ বসানো অন্ধকার নির্বাসিত ঘরের উঠোন বন্যে  
দেখি তখনও
বর্ষণসারা উজানের গভীরে বৃত্তের ঘাড়ে সূর্যমিনার    ধুলোহীন ।
আমার মাথার উপর ঝকঝকে শুভ্র আকাশ কন্যের  রোদেলীন ।
নৌকো ভাসানো নদী জলের স্বাদে ফিরে আসা মাটির গন্ধেলীন ।
আজও ছুটে আসে সেই দরদী কন্যে  আমার ঘুমের মুকুলে
আমার চার পাশের অন্ধকার তুলে  
মায়ের মতো হাতের ফোঁটা            
নিয়ে আমার রোজকার গোটা জীবন যাপন ।

বিকাশ দাস / মুম্বাই