চারিদিক আলোয় ভাসছে, তবুও নিরুত্তর
বুক এলিয়ে শুয়ে আছে অপরিসর ইতিহাস, খানিক সময়
লক্ষ্য পায়ের আনা গোনায় ক্লান্ত, তবু ছুটি নেই
ইতি-উতি ঘুরে বেড়ায় ছুঁচো, ইদুঁর, অভুক্ত কুকুর
ফেলে দেওয়া ছেঁড়া কাগজের ঠোঁঙায় খোঁজে খাবার।।


বড় রাস্তায় রুপালি বাতিস্তম্ভে হেলান দিয়ে সবেরা
এ দিক ওদিক তাকায়, তারি মত আরো অনেক
প্রভাতি, নিশি, ছায়ারা এভাবেই দাঁড়িয়ে সময় মাপে
দোকানের সাটার ফেলার শব্দ, বুঝতে পারে, থেমে নেই
ফুট পাতের সবজীওলা হাঁক দেয়, সস্তা সস্তা, লিয়েযান বাবুরা।।


প্রতিদিনের বঞ্চনা লাঞ্ছিত মুখে সস্তার প্রসাধনী
তবুও সব ছাপিয়ে ভেসে ওঠে রংহীন ক্ষুধা-তৃষ্ণা
বংশী, সবজী বেচার সুবাদে ওদের সকলকেই চেনে
সবেরা, পায়ে পায়ে এগিয়ে আসে বংশীর কাছে, বলে
দাদা, পাঁচটা টাকা দিবি, পাঁউরুটি কিনব, এখনো বউনি হয়নি।।


হুস করে হুটার বাজিয়ে কে যেন চলে গেল গন্তব্যে
ওরা জানে, এ বাবুটি কে, জানে বাবুর পছন্দ - নূতন বস্তা
সময় এলে আসে এখানে, হাত জোড় করে, ভালোআছিস
বুদো এসে নিয়ে যাবে, সকাল সকাল দিয়ে আসিস
কিছু টাকাও মেলে বিনা গতরে, কেবা দেয় বিনা মন্তব্যে।।


সরকারী হাসপাতালের পিছনে মড়ার খাটের কারবার
স্তুপাকৃতি খাটের আড়ালে ব্লাডারের বাঁধন আলগা হয়
ধারে খেলে জল বেশি, তাতেও ভাষায় বৈচিত্র কমেনা
পরম্পরা মেনেই,  ঐ খাটে শুয়েই তবিলদারি চায় বেচারা
বলে, এই সবেরা, সোনামনি, দরজা খোল- তুইতো আমার।।  


কুড়িয়ে আনা কাগজের পাতায় কি যেন খোঁজে লোকটা
ঠিকানা নেই, এই গলি মুখ রাতেই তার আস্তানা
পড়ে থাকে শীত, গ্রীষ্ম বারোমাস, মাঝে মাঝে চেঁচিয়ে ওঠে  
না না হবেনা, আমাকে কি ভাবিস তোরা, আমি কি পাগল!
শরীর অবকাশ চায়, শুয়ে পড়ে গুটিশুটি, কেটে যায় রাতটা।।  


নিরুত্তর আলোর নিচে রাত গভীরে আর এক দেবদাস- বেসামাল
উচ্চ হাসিতে বলে, শালা, ফুলিয়ে দেখি,  রাতজাগা কন্ডোম
দেখি ভাল করে ভিতরটা, যদি বেঁচে থাকে একটাও কীট  
ফুটপাতে নিষিক্ত কুড়িয়ে পাওয়া ডিমে তা দিয়ে দেখি
যদি বাঁচাতে পারি, ফোটাতে পারি ফুল, একটা স্বচ্ছ সকাল।।