আমারও ঈশ্বর হতে ইচ্ছে করে-
সৃষ্টির- মহাসাড়ম্বরে নিশ্চুপে র্নিভুল
র্ধ্বসের- প্রলয়ের ভয়ঙ্করী প্রচন্ড
প্রেমের- কোমল শান্তির মতো সিগ্ধ
এবং বিরহের- ভিজে বর্ষার মতো প্রাণবন্ত।


আমারও ঈশ্বর হতে সাধ জাগে-
যখন তখন যাচ্ছেতাই করতে সৃষ্টিলোকে
খেয়ালে-বেখেয়ালে চলতে আঁধারে-আলোকে
অনর্গল যুদ্ধের স্ট্রেনগান হতে- নিপুণ
এবং কারও কাছে কৈফিয়ত না দেয়ার অহোমিকার নিখাদ স্বাদ পেতে।


আমারও ঈশ্বর হওয়ার সাধ-
কোন্ আনন্দ খেলা করে বিধাতার মনে নিশিদিন
কোন্ বিরহ ছা্য়া ফেলে তার হৃদয়ে অনুক্ষণ-
কোন্ প্রলয়ের ভয়ঙ্করে সে শক্তিদাতা সদা
কোন্ মোহজালে সে সৃস্টিকর্তা, আমি আজ জানতে চাই।


আমি ঈশ্বর হতে চাই, হে- আমি ঈশ্বর হতে চাই
তোমার সৃষ্টির পরম রহস্য ভেদ করতে আমি আজ ঈশ্বর হতে চাই।


সপ্তাছমান ‘পরে কী আছে সু-সজ্জ্বিত আমি দেখতে চাই
বেহেস্তে কোন্ নহরে ভিজবে আমার পা, কোন ফুল-শোভাসে সিদ্ধ হবে গা,
কোথায় কেন বেহেস্ত-দোযখ
কোন মানুষের ঠিকানা কোথায়- আমি জানতে চাই।


আমি ঈশ্বর হতে চাই, আমি ঈশবর হতে চাই-
পাপ-তাপের অদূরে বসে আমি খিলখিলে হাসতে চাই
দোযখাগ্নির ভয় দেখিয়ে অট্ট হাসির বন্যায় তোমার মতো ভাসতে চাই


আমি ঈশ্বর হতে চাই- এই নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়াতে, শ্রমিকের কাঁধের বোঝায় সাহায্যের হাত বোলাতে পথে,
যে শিশু ভুমিষ্ঠ হয়ে পৃথিবীর আলো দেখার আগেই বিদায় নিলো চিরতরে
আমি তার চোখে ক্ষোভের বিদ্রোহ দেখতে চাই একটিবার,
চিরদিন অন্যায়-অবিচারের পথে হেঁটে গলায় এখনও কম্প জাগেনা যাদের, তাদের দেখে নিতে চাই- ওরা আর কত পারে!


আমি চাই-
অগ্নিগর্ভে জন্ম নেয়া মানুষের দগ্ধ বুকজ্বালা মেটাতে ভালোবাসায়,
আমি চাই-
জন্মের পাপ ঘুচিয়ে দিয়ে ছোট্ট শিশুর সদর্ভ পরিচয় প্রকাশ,
আমি চাই-
হাড়ভাঙ্গা কষ্টের অবসান হোক, আর পীড়িত জনতার মুখের হাসি পতাকা হোক পৃথিবীর,
আমি চাই-
ছোট্ট ছোট্ট স্বপ্নরা, যারা অকাল মৃত্যু নিয়েছে বহু বহু আগে- তারা তাজা হোক মানুষের বেঁচে থাকার প্রয়োজনে ফের।


আমি ঈশ্বর হতে চাই
কারণ সমগ্র বৈষম্যের অবসান নিশ্চিত প্রয়োজন আজ;
হাজার বছর ধরে, লক্ষ-কোটি বছর ধরে আমি অবহেলিত জলহীন নদীর নির্জীব শেওলার মতো,
আমি তোমার চোখে কেবল কাঙ্গাল, অসহায় ছাড়া কিছু না কোনদিন-
আজও আমাকে দেয়া হয়নি যথার্থ অধিকার বাঁচার
তোমার অবসানে, হে ভগবান, হোক আমার উত্থান এবার।


ইস্কাটন, ঢাকা, সকাল, ৭ জানুয়ারি ২০১৮