নিশ্চয়ই ভাল আছ? সবকিছু তো ভাল? অনেকদিন পর লিখছি। তবে ভেবো না, সংসারে কোন অশান্তি তৈরি করতে চিঠির অজুহাত এ। তুমি চলে যাবার পর এটাই তো প্রথম, নয় কি? তবে জেন, এটাই শেষ হবে আমাদের সমগ্রতার।


একটি সময় ছিল যখন প্রহরের পর প্রহর বসে থাকতাম তোমার পথো চেয়ে। তুমি এলেই কেবল যেন প্রাণ ফিরে পেতাম সেদিন। লক্ষ-কোটি বছর আয়ু পেত জীবন তখন! এখন তুমি নেই। অন্তত গ্রহের আলোতে, বাতাসে থাকলেও আমার সংস্রবে নেই। আমার হাতের কাছে নেই। তুমি এখন অন্য মানুষের। অন্য মনের। অন্য জীবনের। অন্য চোখের আলো। তাই তোমাকে পাবার প্র্রার্থনা থেকে সরে এসেছি আমি। যে মন্দিরে তোমার পুজো হতো আগে, সে মন্দিরে যাই না আর ভুলেও হটাৎ। আমি আজ অন্য মন্দিরে অন্য মনের জন্য প্রার্থনায় মগ্ন আছি।


দিন তো কেটেই যায়! কেটে তো যাবেই। যেমন যাচ্ছে তোমার। তেমনি আমারও না হয় গেলো।স্মৃতির পাতা উল্টোতে গিয়ে মনে হলো বলেই আজ তোমাকে লিখছি। পাছে দোষ খুঁজো না! তাই ভাবছি, একদিন যে নদীর জল দক্ষিণের বাতাসের তোড়ে উত্তরে বইতো, সে এখন কেমন করে উত্তরের বাতাসে দক্ষিণে বইছে! হায় রে জীবন।


ক’দিন আগেও খাতার পাতা উল্টোতে গিয়ে পুরোনো একটি ছবি পেলাম তোমার।ছবিটি বেশ কয়েক জায়গায় নষ্ট হয়েগেছে। ছবিতে তোমার চোখের একটি কোন তেলপোকা বোধ হয় খেয়ে ফেলেছ! দেখতেই, পাশের জানালা দিয়ে ফেলে দিলাম।কিন্তু তোমার মনে আছে, ছবিটি পাবার জন্য কতদিন কতবার তোমাকে অনুরোধ করতে হয়েছিল আমার! যত্নে রাখব কথা দিয়েছিলাম। তাই তো এতোদিন রেখেছিলাম।তাছাড়া এখন তো আর সে সুযোগ নেই, কী বল?


সত্যি বলতে আমি এখন চাই না যে, তোমার সাথে আমার দেখা হোক, কথা হোক বা কোন ধরণের...। এজন্য তোমার সান্নিধ্য এখন আমি এড়িয়ে যাই। এই এড়িয়ে চলাই আজ আমার একান্ত কাম্য। আমার কথায় নিশ্চয় তুমি সামান্যটুকু কষ্টও পাও নি! তাই বলছি, ভাল থাক। আর প্রার্থনা করো, যেন আমাদের দেখা কোন দিনই না হয় আর।


ইতি


সুব্রত


(ইস্কাটন, ঢাকা, রাত, ২ নভেম্বর’১৮)