বিশ্বজিৎ গোস্বামী -এর কবিতাwww.bangla-kobita.com ওয়েবসাইটে বিশ্বজিৎ গোস্বামী -এর প্রকাশিত কবিতাসমূহ।uuid:7d185313-565e-4d50-be79-02a6df9502c9;id=212024-03-29T07:42:52Zhttps://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/tomader-kobi/তোমাদের কবি2017-07-17T15:55:31-04:002023-06-24T22:59:50-04:00বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/<p>সিগারেটে ফুটো হলো কবির করোটি<br />কবি, তাই, সব ভোলে; সূর্য-গ্রীষ্ম-রোদ।<br />মাথায় বিকট চুল: ধূম্রপিন্ড সরস্বতী,<br />সর্বত্র দাগ--- রক্ত---; রক্ত ও আপদ</p>
<br /><p>সর্বত্র অন্ধকার যদিও নয় বন<br />ক্বচিৎ ঘিলুর দেশে সূর্যও ওঠে,<br />তবু, কবি নির্বিকার। বিষাক্ত শ্রাবণ,<br />যেন, তার সব গিলে পদ্ম হয়ে ফোটে।</p>
<br /><p>কবি মরে, কাঁদে দেশ: কুমীরের বারি<br />চোখ ফেটে রুধির-বন্যা হবে এইবার;<br />দুইদিন... চারদিন... পরিবেশ ভারী...<br />তারপর দাঙ্গা লাগবে--- ফাটকা কারবার...</p>
<br /><p>তবে তোরা ভালো থাক্। সুখ-শান্তি হোক্।<br />সিগারেটে পুড়ে যাক্ কবির মস্তক।</p>@ 2024 - বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/kolkatar-osukh/কোলকাতার অসুখ2017-07-14T20:59:02-04:002023-06-24T22:59:47-04:00বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/<p>বসিরহাট-বাদুড়িয়া থেকে আগত শিয়ালদা বা দমদমের ট্রেনগুলির ধিক্ ধিক্ আওয়াজ<br />আমায় ঈঙ্গিতে জানান দিচ্ছে কোলকাতার ভয়াবহ অসুখের;<br />কোলকাতা অসুস্থ হয়ে পড়ছে ক্রমশ, আমি বুঝতে পারছি।</p>
<br /><p>কাশ্মীরের মুসলিম বাসচালক সেলিম আহত হয়েও<br />অমরনাথ-ফেরত হিন্দু তীর্থযাত্রীদের প্রাণ বাঁচিয়েছে, দৃষ্টান্ত গড়েছে---<br />মিডিয়ায় এটাই এখন ব্রেকিং নিউজ্, তাজা ও সারাদিনের সবচেয়ে বড়ো খবর।</p>
<br /><p>সন্ত্রাসের ধর্ম নেই, সম্প্রদায় নেই, মানব-হিতৈষী কোনো ভূমিকা নেই :<br />তবু কেন একজনেরও বোধোদয় হচ্ছেনা?<br />কৃমির অমোঘ ওষুধ কি কালমেঘ পাতাই তবে কেবল?</p>
<br /><p>রিক্ত কলসিতে টোকা মেরে যে শব্দ উৎপন্ন হয়,<br />সেই একই শূন্যগর্ভ ধ্বনি আমি আজ রাত্রে আমার হাড়ে কান পেতে শুনতে পেয়েছি,<br />আমি স্পষ্ট টের পেয়েছি, কোলকাতার আসন্ন সর্বনাশা বিভেদ-ব্যাধিটির!</p>@ 2024 - বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/manush-aajo-benche-achhe/মানুষ আজও বেঁচে আছে2017-07-13T19:27:32-04:002023-06-24T22:59:47-04:00বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/<p>মানুষ আজও বেঁচে আছে<br />পূর্ণচন্দ্রের কোনো কল্পনায় নয়,<br />খোঁজ নিয়ে দেখতে পারো,<br />বাস্তবে আজও বেঁচে আছে, যে মানুষ।</p>
<br /><p>তুমি এত ভয় পাচ্ছো কেন?<br />তুমি কেন এত বেশি কন্ঠরোধ করতে চাইছো<br />আর পরাজয়ের গ্লানি বয়ে বেড়াচ্ছো দুই ঠোঁটে?<br />তুমি এত ভয় কেন পাচ্ছো?<br />অরণ্যের শিখার মতো রুদ্ধ ধ্বনিগুলি<br />অমর্ত্যবাসীরা সব চিৎকার করে বলবে<br />সমস্ত শকুনকে অবজ্ঞা করে--- জেনে?</p>
<br /><p>মানুষের কোনোদিনও মৃত্যু হয়না;<br />শক্তির মতো এক তীব্র অঙ্গীকার: মনুষ্যত্ব<br />বুকে করে মানুষ বেঁচে থাকে।</p>@ 2024 - বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/aamar-swapno/আমার স্বপ্ন 2017-07-10T20:47:07-04:002023-06-24T22:59:44-04:00বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/<p>ফোঁটা ফোঁটা জল ঝরছে বাথরুমের শাওয়ার বেয়ে,<br />ঠিকমতো বন্ধ হয়নি বোধ হয়!<br />কাউন্টডাউন শুরু হলো এইবার,<br />৯-৮-৭-৬... শূন্যে এসে মিলিয়ে গেছি পরস্পর;<br />আকাশ থেকে উল্কাপিন্ড নামে,<br />মাঝে মাঝে পুষ্পবৃষ্টি হয়,<br />বৃষ্টিস্নাত সূর্যমুখীর পাপড়ি,<br />সর্ষেক্ষেতে সহসা লাগে ঢেউ---<br />সাবানের মতো আমার আত্মা<br />তোমার সর্বাঙ্গ লেহন করেছে,<br />পবিত্র বুকের উপত্যকা থেকে নেমে<br />যখন দুই ঊরুর মাঝে<br />আদর করেছে প্রস্ফুটিত তীব্র যৌনাঙ্গকে,<br />ছুঁয়েছে ক্লিটোরিস,<br />পারদের মত শিরশিরিয়ে-টলমলিয়ে উঠেছে<br />ওই সারা শরীর,<br />এমনকি নখ ও চুলের কোশ-ও!<br />বুক চিরে দরজা খুলতেই<br />কোথায় হনু আর কোথায় সীতা-রাম?<br />ঝাঁঝালো মদের গন্ধ এবং সস্তা চুরুটের ধোঁয়া<br />দমবন্ধ করে দেয়,<br />ঘুমের বড়ি খয়ে আমি আচ্ছন্ন তারপর...<br />গোলাপ ফুল শুকিয়ে মরুক ব্লেকের কবিতায়,<br />পাপবোধের আলোচনা চুলোয় যাক্,<br />তবুও আমি, আমরা<br />গোলাপচারার তন্ত্র সাধনা করছি অনবরত<br />মরার খুলি-হাড় নাচছে ছন্দলোপ করে।<br />মার্ডার---<br />কার মাথায় হেঁইয়ো জোরে কে বসালো কাটারি?<br />রক্তে ভাসছে চেতনা।<br />আমার একাকীত্বের রান্নাঘরে<br />মা ভাজছে বেগুন,<br />খরগোশগুলো সমানে পায়ে-পায়ে বিরক্ত করছে,<br />মা, কিছু বলো?<br />(যেন পরম আশ্রয়!)</p>
<br /><p>রবীন্দ্রনাথ বেশ হেঁটে-চলে গান গাইছিলেন;<br />হঠাৎ ইজিচেয়ারে বসে বার্ধক্যের খকর-খকর কাশি,<br />চোখ বুঁজে দেখছেন যুগ শ্রেষ্ঠ আইনস্টাইনকে,<br />ফ্রয়েড কিংবা রমাঁ রলাঁকে,<br />ভাবছেন, কেমন আছেন বিবেকানন্দ, মহাত্মা গান্ধি?<br />মাথায় তখন সুনীলের শ্রদ্ধা ও শক্তির স্নেহের হাত...</p>
<br /><p>কুমার বোসের তবলা ক্লাস<br />বা আলি আকবর-রবিশঙ্কর যুগলবন্দী<br />আরও খানিকক্ষণ চলতে পারতো---</p>
<br /><p>কিন্তু,<br />সকাল সওয়া ছ’টার অ্যালার্মে ঘুম<br />আর আমার স্বপ্ন দুটোই বিলকুল মাঠে মারা গেলো।</p>@ 2024 - বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/osukh/অসুখ2017-07-04T19:53:42-04:002023-06-24T22:59:49-04:00বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/<p>আমার জন্য আর কেউ বসে নেই।<br />নীরব অন্ধকারে শুকনো পদ্মের পাপড়ির মতো<br /> ঝরে গেছে একেকটা মন,<br /> সমস্ত দেহ।<br />শেষ ট্রাম ফিরে গেছে শূন্য হয়ে<br />কল্লোলিনী সাদা-কালো, নিস্তব্ধ তাই।</p>
<br /><p>আমার মদের গ্লাসে সিগারেট-ছাই ঢেলে দিয়ে<br /> আমি এক অপার্থিব শান্তি ডেকে আনি;<br />কনকলতা কেঁদেকেটে বলে,<br />‘ত্রিভুবনে আমি আর ফুল ফোটাবো না।’<br />বিশ্বাস করো তুমি, ঋ,<br />ফাটা বালিশের পালকেও আমি অধিকারহীন,<br />ম্লেচ্ছ, অচ্ছুৎ<br />কিংবা<br /> সমর্পণ-সংহারী!</p>
<br /><p>সমগ্র প্রেম ও পরীক্ষার মাঝে<br />এক সেতু তৈরি করে<br /> ঘুমহীন নিদ্রায় আচ্ছন্ন হই।<br />হেমলক ওষ্ঠে ছুঁয়ে একাকীত্ব সাধন আমার।</p>
<br /><p>শিয়রে তখন মহাকাল---<br />এরোপ্লেন-শব্দের মতন বীভৎস রবে বলে বসেন,<br />‘অপেক্ষা নাকি শবদাহ?’</p>
<br /><p>এ বছর ঋতুরাজের প্রবল অসুখ।</p>@ 2024 - বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/tomay-niye/তোমায় নিয়ে2017-07-03T20:09:21-04:002023-06-24T22:59:51-04:00বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/<p>ঠিক করেছি এবার থেকে কাঁদবো না আর<br />চোখের তারায় আইলে হাসি বাঁধন দিয়ে বাঁধবো না আর,<br />ঘাস ও মাটির সুবাস নেবো দৃষ্টিহীনা এই পৃথিবীর<br />সন্তুষ্টির ঘাস ও মাটি; তোমার শরীর, আমার শরীর।<br />জাহ্নবীতে স্নাত হবো, ঘামের গন্ধে অশুচিতা<br />থাকবে না আর; থাকবে না আর ভান-ভণিতা।<br />হাঁটতে হাঁটতে সেথায় যাবো যেথায় বাতাস<br />হৃৎপিন্ডে আঘাত হেনে মেটাবে আশ;<br />প্রাসাদ হবে কাগজ-দৃঢ়, উচ্চ প্রাচীর বিন্দুর ন্যায়<br />যেথায় সময়<br />থমকে গেছে মুক্তিতে<br />লোভ-লালসার চেয়েও বড়ো যুক্তিতে;<br />তোমায় নিয়ে সেথায় যাবো এক্ষুণি<br />চলতে চলতে অকস্মাৎ ও তোমায় নিয়ে এক্ষুণি।</p>@ 2024 - বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/rajnoitik-duti-ponkti/রাজনৈতিক দুটি পঙক্তি 2017-07-02T19:31:16-04:002023-06-24T22:59:49-04:00বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/<p>এই শতাব্দী একশো জন্ম দিক, পাঁচ সহস্র কীর্তিতে হোক্ স্নাত<br />তবুও আমরা একটি মৃত্যু-পাপও ক্ষমা করছি না, যেমন করেনি ঘাতক।</p>@ 2024 - বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/besh-toh-nishchinte-ese/ বেশ তো নিশ্চিন্তে এসে2017-07-02T06:05:20-04:002023-06-24T22:59:45-04:00বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/<p>বেশ তো নিশ্চিন্তে এসে পাশে দাঁড়িয়েছো;<br />সত্যি বলো, কিচ্ছু কি অভিযোগ নেই?</p>
<br /><p>আমি বড়ো হতভাগ্য---<br />আরশোলার মতন এই খয়েরি পৃথিবীতে,<br />যেখানে প্রত্যেক লোক অসুস্থ জরায়,<br />তোমার হাতের স্পর্শে শুধু আরাম পাই;<br />নিয়ে চলি; দিতে ব্যর্থ হই সাথে থাকার আশ্বাসও!</p>
<br /><p>অনেক তো নদী-পাহাড়-অরণ্য-বন্যপশু ভালোবেসেছিলেম,<br />তোমার কাছে এসেই এতো রিক্ততা কেন<br />যেন একটি মাঝরাতের বিজন শ্মশান?<br />বেশ তো নিশ্চিন্ত চিত্তে পাশে দাঁড়িয়েছো;<br />সত্যি বলো, কিচ্ছু কি অভিযোগ নেই?</p>@ 2024 - বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/ekti-bihobol-kobita/একটি বিহ্বল কবিতা2017-07-01T08:54:00-04:002023-06-24T22:59:46-04:00বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/<p>আকাশের তলায় শুধু একখানি ল্যাম্পপোস্ট ছাড়া<br />আর কিছু বেঁচে নেই এই সন্ধেবেলা<br />জাহ্নবী ডাক দেয়, মৃত্যু কি সুবাতাস?<br />হরিৎ রঙ-ও ব্যর্থ কাঁচা - সজীবতায়!</p>
<br /><p>আমাদের বেঁচে থাকা কোকেনে-চরসে<br />শব্দ তাই বোহেমিয়ান : বাচাল, বাতুল<br />হে আমার জীবনধারা, জাহাজ হও; চলো---<br />যতক্ষণ না গন্তব্য মন্দির ছোঁয়।</p>
<br /><p>দিনে দিনে মরে যায় বসন্ত-পাখিরা<br />তুমি তবু বেঁচে থাকো, কোন কর্তব্যে?<br />উড়ে যাওয়া - ডানা মেলা, পরবাসী প্রাণ,<br />মৃত্যু হোক্ জীবননাম্নী সমস্ত গন্ধের</p>
<br /><p>কতো রঙ-আলো প্রত্যহ ঝরে যায়<br />রমণী ধূসর হয়, অক্ষিগোলও ছাই<br />ফেরার তো পথ নেই, ঘুরে দাঁড়াবারও :<br />আমি তাকে ভালোবাসি স্বেদ-রক্ত-বিষে</p>
<br /><p>নীল---আরও ঘন নীল পরাবাস্তবে<br />যারা এতো পার্থিব দাবিদাওয়া তোলে,<br />তারা কি মিথ্যাচার, মূর্খামি করেনা?</p>
<br /><p>তারা তো মিথ্যাচার, মূর্খামি করেনা।</p>@ 2024 - বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/amader-jonyo/আমাদের জন্য2017-06-27T19:39:19-04:002023-06-24T22:59:45-04:00বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/<p>অনন্ত শতাব্দী আগে পুরুষ তোমায় ভালোবেসে<br />ধনুকে তীর নিয়ে দাঁড়িয়েছে সমাজের বুকে-<br />অপরের নিয়মে সে নিস্তব্ধ তাই,<br />কালঘুমে শুয়ে আছে পৃথিবীর অন্তরে;<br />হৃদয় দুমড়ে গেছে<br />মাটি তবু আঁকড়ে রেখেছে গূঢ় প্রেম।</p>
<br /><p>তুমি আজও কাঁদো আর সেতার বাজাও<br />ধর্মের মতো এক শূন্য হৃদয়ে পুজো করো<br />যত্ন করো প্রেমিকের সত্ত্বা ও প্রাণ।<br />তোমাকেও শুতে হবে মাটির নীচেই<br />জুঁইগন্ধে স্নাত করে দেহ<br />গভীর আলিঙ্গনে --- তখনই তো সবটুকু ভাঙবে নিয়ম</p>
<br /><p>অন্ধত্বের মতো নগ্ন আর কিছু নেই;<br />চারদিকে তাকাও শ্যেনদৃষ্টিতে : অজস্র প্রমাণ!</p>@ 2024 - বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/sondhya/সন্ধ্যা2017-06-27T11:00:31-04:002023-06-24T22:59:50-04:00বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/<p>বাদামি রঙের সন্ধ্যা নামে।<br />মিছিলে সৃষ্ট তীব্র যানজট, দাবির কোলাহল,<br />বাসের ধোঁয়ায়, ট্রামের শব্দে<br />সন্ধ্যা নামে কলেজ স্ট্রিট জুড়ে।<br />স্বার্থাণ্বেষনের অন্তরালে মহত্ত্বকে<br />খুব বেশি ছোটো মনে হয়েছিল আমার;<br />বিমূর্ত রজনীলিপি ---<br />মূর্ত অবচেতনে আত্মসমালোচনা করে<br />প্রহর জেগেছি : সারমেয় শাবকেরা ক্ষান্ত হয়নি!<br />সন্ধ্যা নেমেছে তাও রক্তের স্রোতে,<br />শিরা ও ধমনী বেয়ে লোহিত কণিকা<br />শরীরের প্রত্যেক কোশে ছড়িয়েছে।<br />তখন তো সাঁঝবাতি - চরস - নিকোটিন<br />প্রত্যেক ফুল আর মানুষ সমার্থক।</p>@ 2024 - বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/michhil/মিছিল2017-06-24T18:50:56-04:002023-06-24T22:59:47-04:00বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/<p>আমাদের দম্ভের সামনে আজ এক<br />প্রচন্ড বিধ্বংসী মিছিল-</p>
<br /><p>লাল রঙে মোড়া শুধু কতক শরীর<br />নাকি এক সমুদ্রময় লবনাক্ত ফুল?<br />আমার এই শ্মশ্রুময় শহরের মাঝে<br />এ কয়টি লোক তো প্রেমও হতে পারে?</p>
<br /><p>শেষ যবে অতলান্ত ভ্রমন করেছি<br />বহুমূল্য মুক্তো কুড়িয়েছি ঘিলুময়<br />আমার বিছানায় যে শরীরী সুবাস<br />একই সেই কামুক উল্লাস<br /> এই মিছিলে কেন?<br />লিবিডো আক্রান্ত দেহে<br />অন্তিম প্রেম নামে-<br />সোমবার কি আরও তবে অর্থবহ হয়?</p>
<br /><p>মহানগরের এত রাজপথ জুড়ে<br />গতিময়, নৈসর্গিক এত মানুষ কারা?<br />ঘামগন্ধ - বনগাঁ লোকাল - কতক শরীর<br />নাকি আমার অস্তিত্ব যা খুনি বা ধর্ষিত?</p>
<br /><p>আমার এই পিঠের যে বাঁ দিকের ক্ষত<br />জমাট বাঁধা রক্ত এবং শাসকের হাসি<br />সেই পুরো বাম দিক হাতের মুঠোয়<br />শক্তি নিয়ে ছুঁড়ে দেয়<br /> আকাশে -<br />এ আকাশ-ই বৃষ্টি দেবে,<br />ধুয়ে দেবে যত আছে স্তাবক - অনুচর;<br />তাই আমি নয় দরজার ঘর ভাঙি রোজ<br />সত্য যাতে বিনা বাধায় পাখি হয়ে ওড়ে,<br /> উড়ে পৌঁছে যেতে পারে নক্ষত্রমন্ডলে।</p>
<br /><p>কিছু সত্য রৌদ্রতপ্ত দহন সম্মত<br />কিছু সত্য রক্ত দিয়ে চেটে নিতে হয়।</p>@ 2024 - বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/na-writtik/না ঋত্বিক2017-06-23T20:08:48-04:002023-06-24T22:59:48-04:00বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/<p>ঠিক ততোটুক কাঁদতে পারি, যা না হলে<br />তোমার শেষ স্বপ্নটাও শুকনো থেকে যায়।</p>
<br /><p>কীসের অশ্রু, বলো, পচে যেতে যেতে এবং<br />ক্ষরিত রক্তবিন্দু মুছে মলম লাগিয়ে ঘা’য়?</p>
<br /><p>শোনো--- স্পট বলছি--- পাতো কান---<br />আমায় কিঞ্চিৎও আর শোক বেঁচে নেই<br />চিতায় আগুন জ্বালবে বলে। অমরতায়<br />জীবিত আছে হৃদয়ের কাছাকাছি নগ্ন ও<br />জ্বলন্ত অভিমান। সুচারু এই পাপপঙ্কিল<br />অভাগিনী বাংলাদেশের মতো।</p>
<br /><p>না ঋত্বিক, শীতের রাত কাটলো; দেখো---<br />না ঋত্বিক, তোমায় ফিরতে হবে এইবারে,<br />নগরীর দীর্ঘতম ছায়া নিয়ে আমাদের<br />জীর্ণ কুটিরদ্বারে দাঁড়াতেই হবে।</p>
<br /><p>ঘাসগুলো মুখ তুলছে তাই,<br />বৃষ্টি পড়ছে আশা ও বিশ্বাসে।</p>
<br /><p>(মহান বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক শ্রী ঋত্বিক কুমার ঘটকের স্মৃতির উদ্দেশ্যে)</p>@ 2024 - বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/somoy/সময়2017-06-22T19:54:23-04:002023-06-24T22:59:50-04:00বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/<p>আমাদের একসাথে কাটানো সময়<br />যেগুলিকে তোমার শুধু সময় মনে হয়,<br />আমি বলছি, সেইগুলি প্রত্যেকেই<br />এক-একটি সুবিশাল পূর্ণাঙ্গ আকাশ।<br />তুমি তো আকাশ মানে জানো :<br />খালি চোখে দেখা একটি বৃষ্টিহীন<br />সিক্ত উঠোনে ছড়িয়ে থাকা সহস্র সুগন্ধি ফুল;<br />এরা কিন্তু প্রত্যেকে এক-একটি পৃথিবী</p>
<br /><p>অরুণ হীরকদ্যুতি - চাঁদের গরিমা<br />অথবা সুরান্মত্ত পারিজাত হৃদয় -<br />সকলের সাথে আমি বাসর জেগেছি<br />চুম্বনে পান করেছি চৌর্যলব্ধ সুধা;<br />ইন্দ্রের উদ্যানে, সোহম, হে মরমি,<br />লোধ্ররেণু পাবে তুমি সমস্ত মিলনের।</p>@ 2024 - বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/ostitwobader-aloke-mrityu-shirshok-duti-kobita/অস্তিত্ববাদের আলোকে মৃত্যু শীর্ষক দুটি কবিতা2017-06-21T19:47:07-04:002023-06-26T00:12:57-04:00বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/<p>মৃত্যু - ১</p>
<br /><p>আমার মৃত্যু হচ্ছে প্রত্যেকদিন<br />শমিকাষ্ঠে আবেগ ও মন দিতেছি আহুতি</p>
<br /><p>মৃত্যুর পরেও রোজ বেঁচে থাকতে হয়<br />কান্নার শপথ নিয়ে ঘৃণার আস্তাকুঁড়ে<br />হাসি দিয়ে ফোটাতে হয় ফুল,<br />নেভাতে হয় আলো:</p>
<br /><p> এত অভিনয়ে নাক্ষত্র ক্লান্তি নামে<br /> শ্রান্তি নামে...<br />তীব্রতম করি আর্তনাদ,<br />বিন্দু বিন্দু কষ্ট ঝরে শ্রমিকের ঘামের মতন।</p>
<br /><p>এভাবে মৃত্যু হয় প্রত্যেকদিন<br />রাবণের চিতা তাই কখনো নেভেনা।</p>
<br /><br />মৃত্যু - ২</p>
<br /><p>জঘন্য মধ্যরাতে কুকুরের ডাক।<br />সিগারেটের ধোঁয়ায় আমার দমবন্ধ ঘর।</p>
<br /><p>অর্ধতন্দ্রাচ্ছন্ন সুরের মতন<br />তোমার কথা মনে পড়ে, ঋ,<br /> ঘুম পায়---</p>
<br /><p>স্বপ্নহীন চোখের পাতায়<br />হেমন্ত ঠান্ডার মতো ভার নেমে আসে,</p>
<br /><p>প্রেমের অক্ষমতা - দৈববাণী অয়দিপউস চেতনে</p>
<br /><p>স্মৃতির ফাঁসেই ঝুলে আত্মহত্যা করি;<br />ছায়ারাও ক্রমশ জটিল হতে থাকে</p>@ 2024 - বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/bibhab/ বিভাব2017-06-20T19:55:35-04:002023-06-24T22:59:45-04:00বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/<p>জুঁইফুলের গন্ধের মত তোমার দৃষ্টি<br />আমায় হত্যা করেছে বহুকাল<br />মদনাচ্ছন্ন দেহের উপাচারে<br />অমৃতে স্নান করেছি তাই<br />পরিপক্ব ফলের মত ঝরে গেছে প্রেম<br />লেবুর গন্ধে তবু সার্থক হয়েছি<br />শূন্যতম মাঠে তাই নিজেকেই দেখি<br />পূর্ণতম ধানে আমি নিজেকেই দেখি</p>
<br /><p>আমায় নিত্যনৈমিত্তিকতায় প্রবল ঝড় ওঠে<br />কুরুক্ষেত্রে পার্থসারথী স্বরূপ আওড়ান<br />মূর্চ্ছিত গোলাপের মত সারারাত বৃষ্টি পড়ে<br />শবের শব্দ হয়; জীবন পতনেরও...</p>
<br /><p>তুমি কেবল বিস্ময় হয়ে থাকো!</p>@ 2024 - বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/suddhikaran/শুদ্ধিকরণ2017-06-19T08:18:28-04:002023-06-24T22:59:50-04:00বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/<p>প্রত্যেকটা ভোরের মতো সূর্য উঠছিলো আজ সকালেও,<br />কিন্তু যেই মুহূর্তে আমি তার সাক্ষী হতে<br /> এসে দাঁড়ালাম খোলা পাতার মতো<br /> বিস্তীর্ণ মাঠে---<br /> সেই যে আকাশ কালো হলো,<br />আর সারাদিন অরুণোদয় হলো না।</p>
<br /><p>ধর্মতলার মোড় থেকে আমার যতদূর চোখ যাচ্ছিলো,<br /> দেখলুম:<br />উড়ালপুলের সৌন্দর্য আর বস্তির সুমিষ্টতা...<br />দৃষ্টির অবরোহনের পথেই হঠাৎ বসন্তের অঙ্গনে লাগলো আগুন,<br />পুড়ে গেলো যতোটুকু সুগন্ধ ছিলো দেহে<br />সব ফুল - সব গাছ - অখন্ড সজীব সব কবিতা<br />সঙ্গে একটি মৌনতর চুম্বনের দাগও!</p>
<br /><p>কেবল একটি দীর্ঘশ্বাসের ফলেই<br />উবে বাষ্প হলো অনন্ত অশ্রুসমুদ্র।<br />আমি তাকিয়েছিলাম নিথর ভিতরের পানে<br />দুঃখের কাঁটাতারে ঘেরা সরোবরে<br />টলমল করছিলো লবনাক্ত নীর;<br />বিরহ যেমন করে সুখস্পর্শে আলতো কেঁপে ওঠে,<br /> ত্রস্ত হয়, ভয় পায়---<br />তেমনই একটি গূঢ় শ্বাসে এই বিপত্তি।</p>
<br /><p>তারপর হলুদ নাম্নী একজন বিশ্বাসঘাতক রঙ<br />আমায় এসে বললে,<br />আমার শুদ্ধিকরণ প্রয়োজন।</p>@ 2024 - বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/prem/প্রেম2017-06-18T01:53:11-04:002023-06-24T22:59:49-04:00বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/<p>আমার সামনে বিস্তৃত আরব সাগর, চোখের জলের মতো নোনা---<br />সাবধানে নেমে যাই যেখানে মিশেছে, তোমার দেহের ঘাম, কামনা--- বাসনা...</p>@ 2024 - বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/jibananander-opekshay/জীবনানন্দের অপেক্ষায়2017-06-17T06:13:28-04:002023-06-24T22:59:46-04:00বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/<p>দীঘির পাড়েতে গিয়ে বসি,<br />সাদা বক - মাছরাঙা - উড়ে যায় যে কাক<br />স্বপ্নের মতো যেই ধানক্ষেত দেখে<br />একদা ওঁদের 'কারুবাসনা' জেগেছিল,<br />একদা ঘুম ভেঙেছিল কবিতায় - শিল্পে - সঙ্গীতে,<br />সেথায় বসেই আমি সিগারেট খাই---<br />এ আমার ঔদ্ধত্য বা অবজ্ঞা নয়...<br />এ আমার অসদুপায়ে অনধিকার স্বতন্ত্রতা।</p>
<br /><p>দীঘির পাড়েতে গিয়ে বসি,<br />ঠোঁটে নিই সিগারেট আর আগুন জ্বালাই<br />লাল গোধূলির মতো ধোঁয়া ওড়ে সূর্যাস্তের বিপ্লবে -<br />নক্ষত্রের নাম লিখি ধুম্রকণায়,<br />জ্যোতিষচর্চা করি; <br />দেখি---<br /> কবে আসবে তুমি,<br />অথবা, কখনো, হেম, আদৌ আসবে কি না!</p>@ 2024 - বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/chhai-dui/ছাই - ২2017-06-15T20:19:42-04:002023-06-24T22:59:46-04:00বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/<p>This is the way the world ends<br />This is the way the world ends<br />This is the way the world ends<br />Not with a bang but a whimper.<br />                                   ---T. S. Eliot (The Hollow Men, 1925)</p>
<br /><p>১<br />রক্তাক্ত হৃদয় যত শূন্য পড়ে আছো---<br />                                                                মন দিয়ে শোনো<br />রক্তাক্ত মানুষ যত পূর্ণ পড়ে আছো---<br />                                                                মন দিয়ে শোনো</p>
<br /><p>মস্তকহীন আমরা সহস্র শরীর, ইলেকট্রিকের তার ধরে<br />ঝুলে আছি শহরে - নগরে - সভ্যতায়।<br />আমাদের কথা নেই কানে কানে ছাড়া,<br />হাসাহাসি - অশ্লীলতা সব-ই ওরকম<br />ঘাসের মতো অর্থহীন (কিংবা অর্থবহ?)<br />ঠোঁটের মতো বাকরুদ্ধ (কিংবা বাঙ্ময়?)</p>
<br /><p>২<br />ইঁদুরের মতো এক উজ্জ্বলতা ঘিরে বসে থেকে<br />সতত এক নারী ধ্যান করেন---<br />                   কুমারীত্ব ফিরে পাওয়াই উদ্দেশ্য তাঁর।</p>
<br /><p>৩<br />ভাঙা কতো কাচ দলে মোরা হেঁটে যাই -<br />রক্তমাখা পায়ের তলে ব্যর্থ হয় ধরা।<br />আমরা তো অনেক চোখ, অজস্র মৃত্যুকে<br />পার করেই এখানে এলাম;<br />প্রাণে বাঁচতে লাগে যদি গোরুর চামড়াটি,<br />হিংস্র সত্ত্বা কেন তবে মেনে নেবে?</p>
<br /><p>রক্তাক্ত মানুষ যারা শূন্য পড়ে আছো---<br />রক্তাক্ত হৃদয় যারা পূর্ণ পড়ে আছো---<br />                                                                 মন দিয়ে শোনো</p>
<br /><p>আমাদের ভুলে যাওয়া...? অসাধ্য সাধন!</p>
<br /><p>৪<br />চোখেদের সাথে আমার স্বপ্নে দেখা হবে,<br />মৃত্যুর স্বপ্নময় ঘুমের রাজধানী...<br />তারপরও ফিরব কি? দেখব কি চোখে?</p>
<br /><p>ভাঙা মন্দিরে যত সূর্যের আলো<br />মৃত মহীরুহে যত উষ্ণতম হাওয়া<br />কেড়ে নেওয়া কন্ঠে যত সুন্দর গান<br />আমার পরম প্রাপ্তি,<br />খসে পড়া তারাটির ঔজ্জ্বল্যের মতো।</p>
<br /><p>আমি আর স্বপ্ন দেখতে ভয় পাচ্ছিনা<br />দাঁড়াতে চোখের সামনে ভয় পাচ্ছিনা<br />মানুষের গায়ে এসে বাতাস লাগুক<br />গো-চর্ম ফেলতে খুলে ভয় নেই তাই</p>
<br /><p>কারণ, জানি<br />অত্যন্ত শীঘ্রই, রাজা,<br />শেষ দেখা হবে সিংহাসনের গোধূলিতে।</p>
<br /><p>৫<br />আমার দেশের গায়ে মৃত্যুর ছোপ<br />ভারতবর্ষ কণ্টকময়, এই তো সত্যটি---<br />প্রেয়সীরা ভুলে গেছে ওষ্ঠে চুমো দিতে<br />পাথর জড়িয়ে রাষ্ট্র রাত্রে ঘুমায়<br />ঘুম ভেঙে ওঠে আর সহসাই দেখে<br />মৃত এক পুরুষ-হাত ছুঁয়েছে দেহটি<br />স্খলিত তারাটিও তার ভাস্বরতা হারায়<br />একাকী মানুষের গায়ে হুতাশন লাগে</p>
<br /><p>৬<br />ভয়ের মূহূর্তগুলো তুমি পাশে থেকো<br />যন্ত্রণার মূহূর্তগুলো তুমি পাশে থেকো<br />                                    প্রার্থনার মতন। </p>
<br /><p>৭<br />নাক্ষত্র বিসর্জনের উপত্যকা জুড়ে<br />হৃত গৌরবের হীন উপত্যকা জুড়ে<br />কেউ নেই; শুধু স্থবির অস্তিত্ব আছে।<br />গন্ধকের নদীটি ওই বয়ে যাচ্ছে ধীরে।<br />আমরা কোনো কথা থেকে সতর্কে বিরত---<br />আমাদের প্রেম আরও সুদীর্ঘ হোক্!</p>
<br /><p>অনন্ত দৃষ্টি আর গোলাপের স্তরে<br />শূন্য মানুষের শুধু বেঁচে আছে আশা।<br />চরম শীতের ভোর - একাকীত্বে হাঁটা<br />রঙের সৌন্দর্য পাবে রয়েছে বিশ্বাস।</p>
<br /><p>৮<br />কল্প ও বাস্তবের মাঝের নালাটি<br />গতি ও কর্মের মাঝে সংকীর্ণ পথ...<br />                                                           গোধূলির ছায়া পড়ে।<br />চিন্তা ও সৃষ্টির মধ্যবর্তী ফুল<br />আবেগ ও শব্দের মাঝে অনিকেত অবস্থান...<br />                                                           জীবন একটি দীর্ঘতর আলো।<br />ব্যথা ও কামনার মাঝে যেইটুকু স্নেহ<br />অস্তিত্ব ও স্বচ্ছতায় ক্ষুদ্র চারাগাছ<br />স্পর্শ ও ক্ষয়ের যে মাঝের বিন্দুটি...<br />                                                           গোধূলির ছায়া পড়ে।</p>
<br /><p>সব পাপ যমুনায় ধৌত হইল না।</p>
<br /><p>৯<br />জ্যান্তরাও মাঝে মাঝে সরীসৃপ হয়<br />কাটামুন্ড দেহের মতো অস্থিহীন হয়<br />নৈরাশ্য পতনেও শব্দ হতে থাকে<br />শৈত্য প্রবাহ হয় শিরার শোণিতে</p>
<br /><p>১০<br />এই পথে হেঁটেই আমরা ধ্বংস দেখতে পাবো<br />এই পথে হেঁটেই শবের শেষ দেখা যাবে</p>
<br /><p>পিন্ পড়ার শব্দ হবে!<br />অথবা হবে না!</p>@ 2024 - বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/paap/পাপ2017-06-13T19:21:27-04:002023-06-24T22:59:49-04:00বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/<p>শিশির পতনের শব্দ পায়ে পায়ে ঘুরে<br />প্রত্যেক নিশীথে এই ঘরে ফিরে আসে :<br />সে আমার আত্মজ, আমি তাকেই ছুঁয়েছি<br />সে-ই আমার ভবিতব্য এবং ভবিষ্যতহীন<br />ভূমি কামড়ে দাঁড়িয়ে যেন বন্ধ্যা বটগাছ।</p>
<br /><p>আমি আজও তুলনাহীন; বিষম বিজন<br />এক কোণে নীল স্বপ্নে সন্তান আমার,<br />আমি তাকে ছুঁয়ে দেখি হীন অপরাধে<br />প্রগাঢ় চুমো দিই ঠোঁটে নিবিড় করে বুক---</p>
<br /><p>তুমি, হে চেতনাহীন, চৈতন্য চাও!</p>@ 2024 - বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/boro-beshi-lok-ei-nirjon-ghore/বড়ো বেশি লোক এই নির্জন ঘরে2017-06-12T18:49:44-04:002023-06-24T22:59:45-04:00বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/<p>বড়ো বেশি বিষণ্ণ লাগে। শ্রান্ত লাগে।<br />কেন এত লোক আমার নির্জন ঘরে?</p>
<br /><p>মৃত্যুর কাছে গিয়ে এক-দু' দন্ড বসি,<br />নিরর্থক অদরকারী খোশগল্প হয়---<br />ক্ষণস্থায়ী আনন্দে পান করি সুরা,<br />একসাথে শুতে যাই কাঁটার গদিতে।</p>
<br /><p>অল্পকাল, সে চিরকালীন, যদি তা ফুলের---<br />আমাদের রুধিরে আগুন নিয়ে টিকে থাকা!</p>
<br /><p>ক্লান্তি এসে খেয়ে নেয় কতো সূর্যরঙ,<br />বড়ো বেশি লোক এই নির্জন গেহে।</p>@ 2024 - বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/ostitwo/ অস্তিত্ব2017-06-12T12:05:42-04:002023-06-26T15:35:21-04:00বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/<p>আজ সকালে বাগানে গিয়ে হঠাৎ হেমন্ত লেগেছে দেখি সবদিক জুড়ে :<br />পর্ণমোচী সমস্ত গাছগুলির পাতারা একে একে ঝরে পড়ছে মূল্যবোধের মত,<br />তৈরি করছে ধূসরতর পাতার পোশাক, যা আমি আগেও কত পার্থিব আয়নায়...<br />এখন আমায় এসব জড়িয়ে মহাকাশে তোমার সামনে হাঁটুগেড়ে বসতে হবে, ঋ।</p>@ 2024 - বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/nirorthok/নিরর্থক 2017-06-10T19:09:47-04:002023-06-24T22:59:48-04:00বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/<p>১<br />তুমি খুব সাবধানে শুতে যাও আজ:<br />রাত্রির অবাঞ্ছিত নীরব শব্দেরা<br />তোমার সতর্ক নিদ্রা যেন না ভাঙায়।</p>
<br /><p> ২<br />সেই সমস্ত মহিলারা বেশ্যাপাড়া থেকে<br />আমার ঘরে উঠে এলেন একাকী নির্জনে,<br />প্রত্যেকটি বই তাঁরা নেড়েচেড়ে দেখে<br />গোলাপী বিষন্নতায় জিগ্যেস করলেন-<br /> "মার্ক্সবাদ কি?"<br />আমার ঠোঁটে আগুন জ্বলে এই মাঝরাতে,<br />আমিও তাই তোমার মত সাবধানে ঘুমাই।</p>@ 2024 - বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/mrityur-aager-rate/মৃত্যুর আগের রাতে2017-06-09T20:15:02-04:002023-06-24T22:59:47-04:00বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/<p>মৃত্যুর আগের রাতে আমাদের ক্ষয় হয় আত্মার মতো,<br />ধূসর ঘাসের বুকে শুয়ে থাকে সমস্ত আলোক-চেতনা :<br />আমরাই কবর খুঁড়ি--- ধোঁয়াদের ভালোবাসি--- প্রশ্রয় দিই---<br />শীর্ণতম নদীটির কাছে পুরুষের অঙ্গীকার করি, যেন আশা।</p>
<br /><p>আমাদের স্মৃতির শ্মশানে দাউদাউ জ্বলে, দেখি, সন্তানের রিক্ততম চিতা -<br />আশ্বস্ত হই আর সোমাহুতি করি, এবং কাঁদা হয়না'কো;<br />সপ্তবর্ণে কাল প্রাতে আমাদেরও নিদ্রা যেতে হবে তাই,<br />জানলার অন্ধকারে অপর্যাপ্ত সময়টুকু কাটাই এভাবে।</p>
<br /><p>জুঁইফুলের বিস্মৃত সুবাস অনুভব হারিয়েছে এই হেমন্ত থেকে,<br />মসীবর্ণ নৈরাশ্য বৃদ্ধ পিতাকে কাছে চায়; যদিও অন্ধ পেঁচা অপেক্ষমান...<br />মৃত্যুর আগের রাতে, হে আমার প্রগাঢ়তা, পাতার শিশিরে মগ্ন হও,<br />সভ্যতা, রুধিরধারে হায়ারোগ্লিফিকে কথা বলো---</p>
<br /><p>ছায়ারা দীর্ঘতর--- কায়া তাই মহান ততো নয় বাস্তবে;<br />হাড়ের শব্দ পাই, সাদা হাড়, টগর-গুল্মে কতো ফুল!<br />কাস্তের মতো চাঁদ এই রাত্রে হলুদ! শঙ্কিত!<br />আমাদের বিশ্বাস বলে, ওর আজ প্রয়োজন বিহ্বল বিশ্রামের।</p>
<br /><p>অযুত সবুজ নারী আমাদের কাছে এসে সাক্ষাৎ করে,<br />শতাব্দী-প্রাচীন ভালে নীল টিপ ছদ্মবেশে চৈতন্য ভোলায়,<br />সকলের সম্মানে আমরাও রেশমের উত্তরীয় রাখি<br />ফুল এঁকে - কৃত্রিম হেসে স্বর্ণাভ মুক্তোর মুকুট পরাই;</p>
<br /><p>চালের গন্ধ মাখা ইঁদুরের গায়ে অনন্ত জ্যোৎস্না ঢালি বমির মতন :<br />উহার সরলচিত্ত, মমতাময় চোখে যাবতীয় অতীত দেখে করি উপহাস!<br />বিন্দু বিন্দু ঘি ঢালি--- বুকের আগুন দিয়ে প্রদীপ জ্বালাই,<br />যদিও সূর্যোদয়ে আর কোনো বিন্দু নেই। বিন্দু--- আছে?</p>@ 2024 - বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/aamar-stree-o-aami/আমার স্ত্রী ও আমি2017-06-08T19:24:20-04:002023-06-24T22:59:44-04:00বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/<p>আমায় সন্ন্যাস রোগে ধরেছে বলেই<br />আমার স্ত্রী-ও আজ সন্ন্যাসিনী হলেন।</p>
<br /><p>এতদিন যে পাখিটি<br />আমাদের বুকের ভিতরে বেঁচেছিল,<br />হেমন্ত-বর্ষা-শীত কুঁড়ি হয়ে গেয়েছিল গান,<br />উড়ে গেছে,<br />প্রাগৈতিহাসিক একটি সাতমহলা ভেঙে!</p>
<br /><p>তবু আজও মানুষের মৃত্যু হয়েছে কি?<br />চেতনা ও অচেতনে ঘনিয়েছে মসিবর্ণ মেঘ?<br />শশক-সারল্যে হরিতাভ চারা<br /> মহীরুহ হয়;<br />গুল্মলতা ধরিত্রীর অত্যন্ত সুখে জড়ায় পা।<br />বোকারাই বসে শুধু শরীরময় লাল রঙ মাখে,<br />পৃথিবী-প্রকৃতি আরও সুন্দরতা পায়---<br /> নজরে আসেনা।</p>
<br /><p>আমার সন্ন্যাস রোগ দিনে দিনে বাড়ে,<br />আমার স্ত্রী-ও আরও সন্ন্যাসিনী হন।</p>@ 2024 - বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/aamader-nirobota-ki-ekhono-bhangbe-na/আমাদের নীরবতা কি এখনও ভাঙবে না?2017-06-07T19:47:47-04:002023-06-24T22:59:44-04:00বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/<p>আমাদের নীরবতা কি এখনও ভাঙবে না?<br />মানুষের মানুষ হতে যে মহত্ত্ব সচেতনে লাগে<br />নীরবতা তার মধ্যে একটি তো নয়!<br />বিস্তীর্ণ সমুদ্রনীরে ভেসে যাওয়া বন্ধ হোক্,<br />সন্তরণে, সরবতায় রুখে দাঁড়াই, চলো -</p>
<br /><p>তুমি তো প্রকৃতই আরও অন্ধকার-নৈরাশ্য চাও<br />ক্রব্যহীন ক্রান্ত এই ভাস্বর প্রদেশের ভূমে<br />চন্দ্রের অহঙ্কার যত হত্যা করতে চাও কন্ঠরোধে;<br />বিষবাষ্প ধোঁয়া দিয়ে তুমি শোকশ্রান্ত মালিন্যে<br />বিধাতার মস্ত হৃদয় পূর্ণ করে দিতে চাও।</p>
<br /><p>আমরা তবু এই গ্রামের প্রত্যেক কুটিরে সযত্নে<br />তেল ঢেলে জ্বালাব অশোক আলোর প্রদীপ,<br />তাসেদের ঘর ভেঙে এই হস্তে সুউচ্চ দেবালয়<br />মুক্তির প্রাঙ্গণ মাঝে গড়ে তুলব। লাল রঙে<br />স্বপ্নের মতো একদিন শাশ্বত অরুণোদয় হবে।</p>@ 2024 - বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/chhai/ছাই2017-06-06T06:54:38-04:002023-06-24T22:59:46-04:00বিশ্বজিৎ গোস্বামী https://www.bangla-kobita.com/biswajit0113/<p>১</p>
<br /><p>আমরা খুব ঠিকই জানি, সময় তো সময়-ই<br />আমরা খুব ঠিকই জানি, স্থান-ই তো স্থান<br />আমরা খুব ঠিকই জানি, স্থানেই সময়<br />আমরা খুব সঠিক জানি, সময়েই স্থান।</p>
<br /><p>আমরা এত সঠিক জেনে খুব বেঁচে আছি<br />নিষ্পলক গাছের ছায়ে স্বচ্ছন্দতা গিলে,<br />পা থেকে হৃদয় কিংবা যকৃত ও মাথা<br />সর্বস্ব খালি করে খুব বেঁচে আছি<br />সেইদিন থেকে যবে ঈশ্বর বলেছেন,<br />'এইসব হাড়গোড় কি এখনও জীবিত?'</p>
<br /><p>ফলের মত সিঁড়ি বেয়ে আমরা উঠি-নামি,<br />হাওয়ায় উড়িয়ে দিই গোলাপ কালো চুল<br />যে সেতারে আজ আর সঙ্গীত ওঠেনা<br />ভৌতিক বিস্ময় দিয়ে চুরি করি সুর;<br />এভাবেই শব্দহীন কথা রাখা যায়<br />যদিও আমাদের বাক্য, জানি, মূল্যহীন,<br />মূল্যবান কথাহীন শব্দটি, হে রাজা,<br />উচ্চারণ করো তুমি---- আশ্বস্ত করো----</p>
<br /><p>আমার আর আশা নেই ফিরে তাকাবার<br />আমার আর শোকার্ত হয়েও কোনো প্রাপ্তি নেই<br />আমি তাই প্রার্থনা করি বিস্মৃতির তলে<br />নিরানন্দে - আনন্দে অন্তরালে যাই!</p>
<br /><p>আমরা আজ জানি যে, আর কিছু জানব না<br />তাই গাছের শুভ্র ফুল - বসন্তের আগুন<br />গায়ে মেখে বসে থাকি শিক্ষা নেব বলে,<br />পাপীদের মৃত্যুর ঘন্টার কম্পাঙ্ক কত!</p>
<br /><br /> ২</p>
<br /><p>এছাড়াও আরেকটি সত্য রহস্যাবৃত -<br />প্রত্যেকটি চাঁদের রাতে কেউ এখানে আসে :<br />উড়বার মতো তার ডানা আর নেই<br />বর্ণান্ধের রঙে তাই সে হেঁটে বেড়ায়;<br />আমরাও পিছু পিছু অত্যন্ত সুধীরে<br />যেইভাবে প্রেম নামক গন্ধ উবে যায়<br />প্রগাঢ় জ্ঞানের এক অন্ধকারে ঢুকি<br />আমাদের বিতাড়নেও ফিসফাস হয়।</p>
<br /><p>হে আমার সুহৃদজন, ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা<br />যে কথা হয়নি বলা - শোনা হয়নি : থাক্!<br />চলো, আমরা আজ একটু নৈঃশব্দে বসি<br />হারানো - ব্যয়িত সব শব্দচর্চা হোক্ -<br />যদিও যথেষ্ঠ জানি, নির্ভুল কাল<br />কিংবা সঠিক স্থান কিছুই এ নয়;<br />যে মাটি হারিয়ে গেছে বোধহীনতায়,<br />রাজন জাগেন কন্ঠরুদ্ধ কোলাহলে।<br />প্রার্থনা করি, যেন আকন্দের আঠায়<br />সক্কলে দৃষ্টি পাই শেষ সূর্যোদয়ে।</p>
<br /><br /> ৩</p>
<br /><p>এইবার টানাপোড়ন জন্মে - মরণে,<br />সমস্ত দিবাস্বপ্ন লয়হীনতায়<br />ছেড়ে যাই; শিখতে নামি কুৎসা, অবহেলা।<br />সত্যটি সত্য-ই যে আমার শান্তিরা<br />(নদীর কাছে, ঘাসের কাছে স্বস্তি পেতে চায়<br />যদিও) তাঁর অনুগ্রহে, 'তিনি'র ইচ্ছায়।</p>
<br /><p>অশ্রুসিক্ত ভালোবাসা অসমাপ্ত হয়<br />অশ্রুসিক্ত বিরহতাপ প্রবল সুখের -<br />হে আমার সহোদরা, হে প্রেয়সী মোর,<br />আমাদের প্রসূতি, হে জননী, ক্ষমা করো;<br />আমরা আর ফিরবো না কোনো ভেদাভেদে<br />কারণ এই যাত্রার যে শেষ : শূন্যতা।</p>
<br /><p>তবে সকল চাবুক-দাগ পিঠে তুলে নিয়ে<br />দাবিহীন শুধু একটি অধিকার আছে :<br />আমাদের স্থান দাও; এই ধরাভূমে<br />মানুষের বাসযোগ্য স্থানাভাব বড়ো!</p>
<br /><br />(Inspired by T. S. Eliot's 'Ash Wednesday')</p>@ 2024 - বিশ্বজিৎ গোস্বামী