আমার ঠিকানা কোন এক সেবায়তনের ডাস্টবিন;
অতি দীন , ফুল হয়ে ফুটে উঠতে না পারা এক কুঁড়ি;
থুরি ! আমি এক কন্যা ভ্রুন ।না না, অবৈধ নই ,
নই হঠাত্ আনন্দের ফসল ।
বিধাতার পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ আমার পিতা মাতা ।
তাদের সুপরিকল্পনায় বপ্ত হয়েছিলাম আমি ।কিন্তু হায়!
বিধাতার কি নিষ্ঠুর পরিহাস !
কিছু শিক্ষিত লোভি মানুষের হলাম শিকার ।
তখন আমার বয়স দু - কি চার মাস,শুধুই একপিন্ড মাংস ;
চিন্হিত হলাম -কন্যাভ্রুন রূপে ! তার কিছুদিন পর গর্ভপাত ।
আচ্ছা বিধাতা কি ছিল আমার দোষ?
কেন আলো দেখার আগেই আমি দীপ্তিহীন ?


আচ্ছা ডাক্তার বাবু, তোমারাতো সমাজের অগ্রগন্য -
চিন্তাশীল হিসাবে পরিচিত ; শিক্ষিত বুদ্ধিজীবি ।
তবে কেন এ হেন বর্বর আচরন ! শুধুই লোভ ?
আচ্ছা তোমার ঘরেও তো মা আছে ; সেও নারী ।
পারবে ! অর্থের বিনিময়ে তাকে মারতে ?


প্রশ্ন সমাজ বিঞ্জানী .সত্য কি ভ্রুনের কোন লিঙ্গ হয়?
লিঙ্গ থাকে কোন শিশুর ?
তাদের হাসি বা কান্নার ধ্বনি কি এক নয় ?
তবে কেন ! কেন এত ভেদ ?
এই বিংশ শতকেও -মধ্যযুগীয় বর্বরতাকে লজ্জা দেয় আধুনিকতা !
পিছিয়ে চলেছে সমাজ অঞ্জানতার অন্ধকারে ।
দিশাহীন, আলোকবর্তিকা হীন জড়ভরত ।


আচ্ছা মা , তুমি তো মা !
অনেক স্বপ্ন ছিল , তোমার কোলে নিশ্চিন্ত শৈশব ।
তার পর প্রথম মা বলে ডেকে ওঠা ।
বলো না মা , সেই 'মা' ডাকের মধ্যে কি ছেলেমেয়ে ভেদ থাকে ?
তবে কেন ? তুমিও তো নারী , এ লজ্জা কি তোমার নয় ?
পাষন্ড পিতার হাত ধরে কেন তুমি রেখে গেলে এ নরকে !
কেন বলতে পারলে না , সে যেই আসুক ,সে আমার সন্তান ;
আমার রক্ত , আমার প্রান ।।